খুলনা প্রতিনিধিঃ জন্মদিন বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে যে সুস্বাদু কেক সরবরাহ করা হয় তা তৈরির সময় তাতে যে তেলাপোকা থাকে তা কয়জনই বা জানে ? কিন্তু এটিই বাস্তবতা। শুধু তাই নয়, রান্নাঘরের দেয়ালে হাটতে দেখা যায় বিভিন্ন পোকামাকড়, রয়েছে বিড়ালের আনাগোনা এমন নানা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
এছাড়া ৭শ টাকার কেনা খেজুরের কেজি বিক্রি হয় ১ হাজার ১স টাকার ওপরে। রয়েছে নষ্ট আপেল ও কমলালেবুও। পোশাকও কেনা মূল্যের চেয়ে বিক্রি করা হয় দ্বিগুণ।
এমন নানা অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠেছে খুলনার সেইফ এন্ড সেইভ নিউ মার্কেট শাখায়। শুক্রবার (২০ মার্চ) রাতে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে দেখা যায় এসব চিত্র। এ সময় নিরাপদ খাদ্য আইনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান এবং মো. রাশেদুল ইসলাম।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে এ অভিযান পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান বলেন, সেইফ এন্ড সেইভের নিউ মার্কেট শাখায় অভিযানকালে দেখা যায়, পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের অধিক মূল্য নেওয়া হয়। যা একদিকে যেমন ভোক্তা অধিকার আইন পরিপন্থী তেমনি নোংরা পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের বিষয়টি নিরাপদ খাদ্য আইন পরিপন্থী।
তাছাড়া বিশ্বব্যাপী যখন করোনা ভাইরাসে মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত এবং সারা দেশের প্রতিটি অফিস-আদালত, দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে বাইরে থেকে প্রবেশের আগেই হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হলেও সেইফ এন্ড সেইভের টয়লেটে প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়া যায়নি।
এজন্য সেইফ এন্ড সেইভকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এর ম্যানেজিং পরিচালক মো. আফসার আলীকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তবে তাৎক্ষনিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করায় কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়নি তাকে।
সেইফ এন্ড সেইভের ম্যানেজিং পরিচালক মো. আফসার আলী বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে তাদের প্রতিষ্ঠানের যেসব ত্রুটি ধরা পড়ে সেগুলো ভবিষ্যতে সমাধানে চেষ্টা করা হবে। পণ্যের বিক্রয়মূল্যের ওপর লাভও কম করা হবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও শুক্রবার দিনভর নগরীর ফুলবাড়িগেট থেকে খুলনা ট্রাক টার্মিনাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ওই দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অনুষ্ঠান করার কারণে দুইটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ১৫ হাজার এবং অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রির কারণে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫ হাজার টাকাসহ মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।