স্টাফ রিপোর্টার : উত্তরায় শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হোস্টেলে আবির হোসেন খান (১৩) নামের এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
আবির ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।পুলিশের ধারণা, সে আত্মহত্যা করেছে। তবে পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
জানা গেছে, আবির টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার মো. ফজলুর রহমানের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে নবাবগঞ্জে থাকত। সেই সঙ্গে কলেজের হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করত সে।
রোববার থেকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হওয়ায় তার বাবা ফজুলর রহমান শনিবার দুপুরে তাকে কলেজের হোস্টেলে দিয়ে যান।
আবিরের খালা রাবেয়া সুলতানা খান বলেন, শনিবার দুপুরে আবিরের বাবা ছেলেকে কলেজের হোস্টেলে রেখে যায়। সন্ধ্যায় কলেজ থেকে তাকে ফোন দিয়ে জানানো হয় আবির অসুস্থ। খবর পেয়ে আমি সেখানে ছুটে যাই। কারণ আমি ওই কলেজের পাশেই থাকি।
তিনি বলেন, কলেজের হোস্টেলে গিয়ে দেখি দুজন পরিচালক নিচে কথা বলছেন। তাদের কাছে আবিরের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আবির গলায় গামছা পেঁচিয়েছিল। পরে তাকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাবেয়া সুলতানা জানান, হাসপাতালের যাওয়ার পর দেখি জরুরি বিভাগের সামনে আবিরের মরদেহ সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানিয়েছেন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই আবিরের মৃত্যু হয়েছে।
আবিরের খালার দাবি, এটি কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। কারণ আবিরের মরদেহ হোস্টেলের বিছানার ওপর ছিল। উদ্ধারকালে আবিরের দুই পা হাঁটুগাড়া অবস্থায় ছিল। এভাবে কেউ আত্মহত্যা করতে পারে না।
তিনি আরও জানান, আবিরকে যখন হোস্টেলে দিয়ে যাওয়া হয়, তখন তিনি হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কতজন ছাত্র এসেছে। উত্তরে তারা জানিয়েছিলেন, ‘৭/৮ জন ছাত্র এসেছে’। তখন আবিরকে তার বাবা ১১৫ টাকা দিয়ে এসেছিল।
তার দাবি, আমি ধারণা করছি- আবিরের কাছে বেশি টাকা আছে বলে মনে করে তা নেওয়ার জন্য ছাত্ররাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই লাল মিয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে আবির হোস্টেলের জানালার সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনয় তার বাবা বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। ওই ছাত্রের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তার শরীর কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি আবির আত্মহত্যা করেছে। বাকিটা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বলা যাবে।
এ বিষয়ে শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বকুল মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।