ক্রীড়া ডেস্ক : সিরিজ হাত থেকে ছুটে গেছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া হাল ছাড়ছে না। জয় পেতে মরিয়া সফরকারি দল এবার কোণঠাসা করে দিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিংকে।
মিরপুরে সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে অসি বোলারদের তোপে সুবিধা করতে পারেননি টাইগার ব্যাটসম্যানরা।
শেষদিকে মাহেদি হাসানের ১৫ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৩ রানের ইনিংসে কোনোমতে একশ পেরিয়েছে স্বাগতিকরা, ৯ উইকেটে তুলেছে ১০৪ রান।
অথচ ধীরগতির পিচে এবারও লড়াকু সংগ্রহ পাওয়া যাবে, একটা সময় মনে হচ্ছিল তেমনটাই। দশম ওভার চলার সময় ১ উইকেটে ৪৮ রান ছিল বোর্ডে।
কিন্তু পরের দশ ওভারে নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ১ উইকেটে ৪৮ থেকে ৭ উইকেটে ৮৩ রানে পরিণত হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ৩৫ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট হারিয়ে লড়াকু স্কোর গড়ার স্বপ্নটা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের।
ওপেনিং জুটি নিয়ে বাংলাদেশের দুর্ভাবনা কাটেনি এই ম্যাচেও। প্রথম তিন টি-টোয়েন্টিতে জয় পেলেও ব্যাটিংয়ে একবারও ভালো শুরু করতে পারেনি টাইগাররা। বিশেষ করে সৌম্য সরকারের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের এবার ওপেনিং জুটিতে ২৪ রান উঠলেও ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারেননি সেই সৌম্য। আরও একবার বাজে শট খেলে আউট হয়েছেন।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে জস হ্যাজলেউডকে ক্রস খেলতে গিয়ে উল্টোদিকে বল ওপরে তুলে দিয়েছেন সৌম্য। সহজেই ক্যাচটি তালুবন্দী করেন অ্যালেক্স কারে। ১০ বলে ১ ছক্কায় সৌম্য করেন ৮।
আগের তিন ম্যাচে বাঁহাতি এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছিল ২, ০ আর ২। অর্থাৎ চার ইনিংস মিলিয়ে সৌম্য করলেন ১২ রান।
সাকিব আল হাসানকে শুরু থেকেই নড়বড়ে লাগছিল। ব্যাটে-বলে ঠিকমতো টাইমিং করতে পারছিলেন না। বারকয়েক ক্যাচের মতো হয়েছে। এর মধ্যে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে নিশ্চিত একটি এলবিডব্লিউয়ের আবেদন থেকে বেঁচে যান সাকিব।
অ্যাশটন অ্যাগারের করা ওভারটির পঞ্চম বলটি সাকিবের পায়ে লাগলে আবেদন করেছিল অস্ট্রেলিয়রা। আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। রিভিউও নেননি অসি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল উইকেট হিট করতো, আউট ছিলেন সাকিব।
তবে জীবন পেয়েও খুব বেশিদূর এগোতে পারেননি সাকিব। ২৬ বলে ১ বাউন্ডারিতে ১৫ রানের ধীর ইনিংস খেলে দশম ওভারে হ্যাজলেউডের শিকার হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। কাট খেলতে গেলে তার ব্যাটে বল লেগে সোজা চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে।
এরপর মিচেল সোয়েপসনের ঘূর্ণি জাদু। সাকিব আউট হওয়ার পাঁচ বল পর শূন্যতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।
পরের বলে আরও এক উইকেট সোয়েপসনের। এবার গুগলিতে এলবিডব্লিউ নুুরুল হাসান সোহান (০)। ৫১ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সেই ধাক্কা সামলে ওঠার ইঙ্গিত ছিল নাইম-আফিফের ব্যাটে। কিন্তু ধীরগতির ইনিংস খেলা নাইম সুইপসেনকে সজোরে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে বল তুলে দেন সোজা ওপরে। সহজ ক্যাচ নেন অসি উইকেটরক্ষক ওয়েড।
৩৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করা নাইম ফেরার পরের ওভারে আফিফ হোসেন ধ্রুবও উইকেট বিলিয়ে দেন। ১৬তম ওভারের প্রথম বলেই অ্যাশটন অ্যাগারকে বড় ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন আফিফ।
কিন্তু দুই বল পর সজোরে হাঁকাতে গিয়ে ডিপমিডউইকেটে ধরা পড়েন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান, ১৭ বলে এক ছক্কায় তিনি তখন ২১ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন গত মাসেই জিম্বাবুয়েতে দারুণ অভিষেকে সাড়া ফেলে দেয়া শামীম পাটোয়ারী।
এবার অ্যান্ড্রু টাইয়ের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ৩ রানে মিডউইকেটে ক্যাচ হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগের তিন ম্যাচের দুটিতে ব্যাটিং পেয়ে করেছিলেন ৪ আর ৩ রান।