ঢাকা ০৯:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একটি ঘর থেকে যেভাবে পুরো শহরে ছড়াল করোনা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ  আমেরিকার ওয়েস্টপোর্ট শহরে বাস করা এক নারী নিজের চল্লিশতম জন্মদিনে পার্টির আয়োজন করলেন। সেই পার্টিতে যোগ দিলেন দেশ-বিদেশে থাকা তার ৫০ জন বন্ধু। সবার উপস্থিতিতে মুখরিত হয়েছিল পরিবেশ। বিকাল পার হতেই সবাই মেতে ওঠে হাসি-ঠাট্টা আর খাওয়া-দাওয়ায়। চার ঘণ্টার পার্টিতে যে যার মতো করেছিল। 

সুখকর অনুভূতি নিয়ে পার্টির ঘর থেকে বের হয়েছিল সবাই। তাদের কেউই জানত না করোনা ভাইরাস নামের এক মৃত্যুদূতকে সঙ্গী করে ঘরে ফিরছিলেন তারা।

করোনাকে সঙ্গী করেই পার্টিতে অংশ নেওয়া প্রত্যেকে করতে লাগলেন দৈনন্দিন কাজ। কেউ অফিসে যাচ্ছিলেন, কেউ শপিং করছিলেন, কেউবা মেতে উঠেছিলেন খেলাধুলায়। তাদের সন্তানরাও যাচ্ছিল স্কুল-কলেজে। অর্থাৎ, এই ৫০ জন মানুষ মিশলেন কয়েকশ মানুষের সঙ্গে। তারা আবার মিশলেন হাজার লোকের সঙ্গে।

জন্মদিনের পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা এক ব্যক্তি। ওয়েস্টপোর্ট শহরের বেশিরভাগ মানুষ রয়েছে এমন একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরলেন। দেশে ফিরে তিনি ফোন দিয়ে জানালেন, তার দেহে করোনার অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।

জুলি এন্ডিচ নামের এক নারী সেই পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন। ৮ মার্চ জুলি ঘুম থেকে উঠলেন ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর নিয়ে। শুধু জ্বর নয়, সঙ্গে ছিল বুক ব্যথা। তার ভাষ্যমতে, মনে হচ্ছিল কেউ যেন তার বুকের ওপর চেপে বসেছে। এতটাই তীব্র ছিল সেই ব্যথা। জুলি বুঝে গিয়েছিলেন তার করোনা হয়েছে। তারপর পরীক্ষা করলেন। চার দিন পর ফলাফল আসলো, সত্যিই করোনা পজিটিভ তিনি।

দুজনের কথা শুনে পার্টিতে অংশ নেওয়া সবার মাথায় যেন বাজ পড়ল। কারণ, স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছিলেন তারা সবাই। এরপর আর এক মুহূর্তও দেরি করলেন না। ওয়েস্টপোর্টের স্কুল ও পাবলিক বিল্ডিংগুলোর অধিকাংশ সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়া হলো।

তবে ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গেল। সেই পার্টিতে যে কে এই ভাইরাসটি বহন করেছে তা জানা না গেলেও, এটা জানা গিয়েছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার সেই ব্যক্তিই প্রথম নিজের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারেন। বর্তমানে ওয়েস্টপোর্টে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

একটি ঘর থেকে যেভাবে পুরো শহরে ছড়াল করোনা

আপডেট সময় ১১:০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ  আমেরিকার ওয়েস্টপোর্ট শহরে বাস করা এক নারী নিজের চল্লিশতম জন্মদিনে পার্টির আয়োজন করলেন। সেই পার্টিতে যোগ দিলেন দেশ-বিদেশে থাকা তার ৫০ জন বন্ধু। সবার উপস্থিতিতে মুখরিত হয়েছিল পরিবেশ। বিকাল পার হতেই সবাই মেতে ওঠে হাসি-ঠাট্টা আর খাওয়া-দাওয়ায়। চার ঘণ্টার পার্টিতে যে যার মতো করেছিল। 

সুখকর অনুভূতি নিয়ে পার্টির ঘর থেকে বের হয়েছিল সবাই। তাদের কেউই জানত না করোনা ভাইরাস নামের এক মৃত্যুদূতকে সঙ্গী করে ঘরে ফিরছিলেন তারা।

করোনাকে সঙ্গী করেই পার্টিতে অংশ নেওয়া প্রত্যেকে করতে লাগলেন দৈনন্দিন কাজ। কেউ অফিসে যাচ্ছিলেন, কেউ শপিং করছিলেন, কেউবা মেতে উঠেছিলেন খেলাধুলায়। তাদের সন্তানরাও যাচ্ছিল স্কুল-কলেজে। অর্থাৎ, এই ৫০ জন মানুষ মিশলেন কয়েকশ মানুষের সঙ্গে। তারা আবার মিশলেন হাজার লোকের সঙ্গে।

জন্মদিনের পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা এক ব্যক্তি। ওয়েস্টপোর্ট শহরের বেশিরভাগ মানুষ রয়েছে এমন একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরলেন। দেশে ফিরে তিনি ফোন দিয়ে জানালেন, তার দেহে করোনার অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।

জুলি এন্ডিচ নামের এক নারী সেই পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন। ৮ মার্চ জুলি ঘুম থেকে উঠলেন ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর নিয়ে। শুধু জ্বর নয়, সঙ্গে ছিল বুক ব্যথা। তার ভাষ্যমতে, মনে হচ্ছিল কেউ যেন তার বুকের ওপর চেপে বসেছে। এতটাই তীব্র ছিল সেই ব্যথা। জুলি বুঝে গিয়েছিলেন তার করোনা হয়েছে। তারপর পরীক্ষা করলেন। চার দিন পর ফলাফল আসলো, সত্যিই করোনা পজিটিভ তিনি।

দুজনের কথা শুনে পার্টিতে অংশ নেওয়া সবার মাথায় যেন বাজ পড়ল। কারণ, স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছিলেন তারা সবাই। এরপর আর এক মুহূর্তও দেরি করলেন না। ওয়েস্টপোর্টের স্কুল ও পাবলিক বিল্ডিংগুলোর অধিকাংশ সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়া হলো।

তবে ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গেল। সেই পার্টিতে যে কে এই ভাইরাসটি বহন করেছে তা জানা না গেলেও, এটা জানা গিয়েছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার সেই ব্যক্তিই প্রথম নিজের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারেন। বর্তমানে ওয়েস্টপোর্টে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫।