ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের প্রভাবশালী মিত্র চার্লি কার্ককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তরুণ রক্ষণশীলদের প্রভাবশালী নেতা চার্লি কার্ককে উটাহর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প কার্কের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ৩১ বছর বয়সী কার্ক ছিলেন রক্ষণশীল যুব সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ট্রাম্প তার পোস্টে লেখেন, ‘মহান এবং কিংবদন্তি চার্লি কার্ক আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের তরুণদের হৃদয় আর কেউ এত ভালো বুঝতে পারেনি। সবাই তাকে ভালোবাসত, বিশেষ করে আমিও। এখন তিনি আমাদের মাঝে নেই।’ ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, কার্কের স্মরণে রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

উটাহ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় কার্ক এক গুলিতে নিহত হন। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বক্তৃতার সময় হঠাৎ গুলির শব্দ হয়, মুহূর্তেই কার্ক চেয়ার থেকে পড়ে যান এবং আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা দৌড়ে পালান। উটাহর গভর্নর স্পেন্সার কক্স এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এটা আমাদের অঙ্গরাজ্যের জন্য অন্ধকার দিন, পুরো জাতির জন্যই এক শোকাবহ দিন।’ তিনি আরও বলেন যে, কার্ক শুধু একজন রাজনীতিবিদই ছিলেন না, বরং তিনি দুই সন্তানের পিতা ও একজন স্বামী ছিলেন।

উটাহ ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটির কমিশনার বো ম্যাসন জানিয়েছেন যে, কালো পোশাক পরিহিত সন্দেহভাজন একজন ছাদ থেকে গুলি চালাতে পারে। নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে, যদিও ছবির মান স্পষ্ট নয়। এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল জানান যে, সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত আছে।

মার্কিন গণমাধ্যমে কার্ককে তরুণ রক্ষণশীলদের মধ্যে ‘রকস্টার’ বলা হতো। ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন প্রচারণায় সমর্থন গড়ে তুলতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। কলেজ ক্যাম্পাসে তার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিপরীত মতের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাতো। এই হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জেসন চাফেটজ ফক্স নিউজকে বলেন, ‘আমি গুলির শব্দ শুনেছি এবং দেখেছি কার্ক হঠাৎ পেছনে পড়ে গেলেন। যদিও রক্ত দেখিনি, কিন্তু তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন নিশ্চিত।’ তিনি আরও জানান যে, অনুষ্ঠানে পুলিশের উপস্থিতি খুবই সীমিত ছিল।

আল জাজিরা বলছে, এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার ধারাবাহিকতার সর্বশেষ উদাহরণ। এর আগে গত বছর ট্রাম্পের ওপর হত্যাচেষ্টা হয়েছিল এবং চলতি বছরের জুনে একজন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ও তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল।

ট্যাগস

সর্বাধিক পঠিত

ট্রাম্পের প্রভাবশালী মিত্র চার্লি কার্ককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা

আপডেট সময় ১২:৪২:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তরুণ রক্ষণশীলদের প্রভাবশালী নেতা চার্লি কার্ককে উটাহর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প কার্কের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ৩১ বছর বয়সী কার্ক ছিলেন রক্ষণশীল যুব সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ট্রাম্প তার পোস্টে লেখেন, ‘মহান এবং কিংবদন্তি চার্লি কার্ক আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের তরুণদের হৃদয় আর কেউ এত ভালো বুঝতে পারেনি। সবাই তাকে ভালোবাসত, বিশেষ করে আমিও। এখন তিনি আমাদের মাঝে নেই।’ ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, কার্কের স্মরণে রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

উটাহ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় কার্ক এক গুলিতে নিহত হন। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বক্তৃতার সময় হঠাৎ গুলির শব্দ হয়, মুহূর্তেই কার্ক চেয়ার থেকে পড়ে যান এবং আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা দৌড়ে পালান। উটাহর গভর্নর স্পেন্সার কক্স এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এটা আমাদের অঙ্গরাজ্যের জন্য অন্ধকার দিন, পুরো জাতির জন্যই এক শোকাবহ দিন।’ তিনি আরও বলেন যে, কার্ক শুধু একজন রাজনীতিবিদই ছিলেন না, বরং তিনি দুই সন্তানের পিতা ও একজন স্বামী ছিলেন।

উটাহ ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটির কমিশনার বো ম্যাসন জানিয়েছেন যে, কালো পোশাক পরিহিত সন্দেহভাজন একজন ছাদ থেকে গুলি চালাতে পারে। নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে, যদিও ছবির মান স্পষ্ট নয়। এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল জানান যে, সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত আছে।

মার্কিন গণমাধ্যমে কার্ককে তরুণ রক্ষণশীলদের মধ্যে ‘রকস্টার’ বলা হতো। ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন প্রচারণায় সমর্থন গড়ে তুলতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। কলেজ ক্যাম্পাসে তার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিপরীত মতের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাতো। এই হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জেসন চাফেটজ ফক্স নিউজকে বলেন, ‘আমি গুলির শব্দ শুনেছি এবং দেখেছি কার্ক হঠাৎ পেছনে পড়ে গেলেন। যদিও রক্ত দেখিনি, কিন্তু তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন নিশ্চিত।’ তিনি আরও জানান যে, অনুষ্ঠানে পুলিশের উপস্থিতি খুবই সীমিত ছিল।

আল জাজিরা বলছে, এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার ধারাবাহিকতার সর্বশেষ উদাহরণ। এর আগে গত বছর ট্রাম্পের ওপর হত্যাচেষ্টা হয়েছিল এবং চলতি বছরের জুনে একজন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ও তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471