ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নওগাঁর পত্নীতলায় ফেসবুক লাইভে সুমনের বাঁচার আকুতি, মৃত্যু ঘিরে রহস্য

নওগাঁর পত্নীতলায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই যুবকের নাম সুমন হোসেন। তিনি বিল ছাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। গতকাল রাতে বাড়ি ফিরার পথে নাপিত পকুরা এলাকায় সুমনকে হত্যা করে গলায় দড়ি বেঁধে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

স্থানীয় একই এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন ও রুবেল হোসেন বলেন, “রাতে আমরা ৪ জন চারজন এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এসময় ১০টার দিকে ফোন দিয়ে সুমন বলতেছে, ভাই আমাকে বাঁচা। কী সমস্যা? তখন বলতেছে বুলবুল নামের একজন আমার থেকে ১০ লাখ টাকা কাড়ে নিছে ও আমাকে মারার জন্য দাবরাচ্ছে, লাঠি চাকু নিয়ে তার সাথে আর আট দশ জন আছে। ফোনে অনেকবার বলছে, বুলবুল আমাকে মেরে ফেলে দিবে ভাই। আমাকে চাকু নিয়ে ধাবরাচ্ছে ভাই। আমি ধান বাড়ির ভিতরে শুয়ে থেকে ফোন দিছি। যেভাবেই হোক আমাকে বাঁচা।” এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে নাপিত পকুরা নামক স্থানে গিয়ে কাঠাঁল গাছে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাই আমরা। তারপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার সুমনকে মৃত ঘোষণা করে।

পত্নীতলা উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মারুফ মোস্তফা বলেন, সুমন নজিপুর সরকারি কলেজ (ডিগ্রি) ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মৃত্যুর আগে সে ফেসবুক লাইভে ছাত্র জনতার কাছে বিচার চেয়েছিলেন। এই স্টেটমেন্ট দেওয়ার পর তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এটা পুরোটাই হত্যাকাণ্ড ছিল। তার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।পত্নীতলা থানার ওসি শাহ মোঃ এনায়েতুর রহমান বলেন, সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

সুমন নজিপুর মসজিদ মার্কেটে কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে ‘সুমন হোসেন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা লাইভে কিছু কথা বলতে শোনা যায়। পাঁচ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই অডিওতে অভিযোগ করা হয়, বুলবুল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে ৭০ হাজার টাকা ধার করেন সুমন। সঙ্গে ফাঁকা ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। কিন্তু পরে বুলবুল তার কাছ থেকে ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পান বলে চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে গত রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে ধাওয়া করা হয়।

ওই রেকর্ডে দাবি করা হয় তার মৃত্যু জন্যর বুলবুল নামে ওই ব্যক্তিই দায়ী।তবে ওসি জানান, ওই ফেসবুক আইডিটি আসলেই সুমনের কি না কিংবা লাইভের অডিও’র ওই ব্যক্তিটি কে তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুলবুল নামে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সুমনের আসলেই কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল কি না তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এসবের সত্যতা বের হলেই আসল রহস্য উন্মোচন হবে।

ট্যাগস

সর্বাধিক পঠিত

নওগাঁর পত্নীতলায় ফেসবুক লাইভে সুমনের বাঁচার আকুতি, মৃত্যু ঘিরে রহস্য

আপডেট সময় ০৫:৪৫:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

নওগাঁর পত্নীতলায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই যুবকের নাম সুমন হোসেন। তিনি বিল ছাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। গতকাল রাতে বাড়ি ফিরার পথে নাপিত পকুরা এলাকায় সুমনকে হত্যা করে গলায় দড়ি বেঁধে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

স্থানীয় একই এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন ও রুবেল হোসেন বলেন, “রাতে আমরা ৪ জন চারজন এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এসময় ১০টার দিকে ফোন দিয়ে সুমন বলতেছে, ভাই আমাকে বাঁচা। কী সমস্যা? তখন বলতেছে বুলবুল নামের একজন আমার থেকে ১০ লাখ টাকা কাড়ে নিছে ও আমাকে মারার জন্য দাবরাচ্ছে, লাঠি চাকু নিয়ে তার সাথে আর আট দশ জন আছে। ফোনে অনেকবার বলছে, বুলবুল আমাকে মেরে ফেলে দিবে ভাই। আমাকে চাকু নিয়ে ধাবরাচ্ছে ভাই। আমি ধান বাড়ির ভিতরে শুয়ে থেকে ফোন দিছি। যেভাবেই হোক আমাকে বাঁচা।” এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে নাপিত পকুরা নামক স্থানে গিয়ে কাঠাঁল গাছে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাই আমরা। তারপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার সুমনকে মৃত ঘোষণা করে।

পত্নীতলা উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মারুফ মোস্তফা বলেন, সুমন নজিপুর সরকারি কলেজ (ডিগ্রি) ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মৃত্যুর আগে সে ফেসবুক লাইভে ছাত্র জনতার কাছে বিচার চেয়েছিলেন। এই স্টেটমেন্ট দেওয়ার পর তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এটা পুরোটাই হত্যাকাণ্ড ছিল। তার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।পত্নীতলা থানার ওসি শাহ মোঃ এনায়েতুর রহমান বলেন, সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

সুমন নজিপুর মসজিদ মার্কেটে কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে ‘সুমন হোসেন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা লাইভে কিছু কথা বলতে শোনা যায়। পাঁচ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই অডিওতে অভিযোগ করা হয়, বুলবুল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে ৭০ হাজার টাকা ধার করেন সুমন। সঙ্গে ফাঁকা ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। কিন্তু পরে বুলবুল তার কাছ থেকে ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পান বলে চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে গত রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে ধাওয়া করা হয়।

ওই রেকর্ডে দাবি করা হয় তার মৃত্যু জন্যর বুলবুল নামে ওই ব্যক্তিই দায়ী।তবে ওসি জানান, ওই ফেসবুক আইডিটি আসলেই সুমনের কি না কিংবা লাইভের অডিও’র ওই ব্যক্তিটি কে তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুলবুল নামে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সুমনের আসলেই কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল কি না তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এসবের সত্যতা বের হলেই আসল রহস্য উন্মোচন হবে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471