ঢাকা ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২১ সালের পর তেলের দাম সর্বনিম্ন

চীনে করোনা বিধিনিষেধ বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক দেশটির ক্রেতাদের চাহিদা ও উদ্বেগের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১ টা ৩১ মিনিটের দিকে, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ অথবা ২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ২০ মার্কিন ডলারে। আগের ধাপে যেখানে ৩ শতাংশ বাড়ার আগে ছিল ৮০ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং গত ৪ জানুয়ারির পর থেকে সবচেয়ে কম।

ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম ২ দশমিক ১৬ শতাংশ অথবা ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৭৪ দশমিক ১২ শতাংশ। এর আগের সেশনে ব্যারেলপ্রতি দাম ছিল ৭৩ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে এটি সর্বনিম্ন দাম।

উভয় বেঞ্চমার্কের গত সপ্তাহে দাম ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। পরপর তিন সপ্তাহ দরপতন হয়েছে। সবশেষ সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই-এর দাম কমেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

নিসান সিকিউরিটিজের গবেষণা মহাব্যবস্থাপক হিরোইউকি কিকুকাওয়া বলেছেন, চীনে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, একই সঙ্গে সাংহাইতে বিধিনিষেধ বিরোধী বিক্ষোভ তেলের বাজারে প্রভাব ফেলেছে। তেলের চাহিদা নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ডব্লিউটিআই এর তেলের দাম ৭০ থেকে ৭৫ ডলারে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ওপেক প্লাস এর আসন্ন বৈঠকের ফলাফল ও রাশিয়ার তেলের ওপর জি-৭ এর মূল্য নির্ধারণের ওপর নির্ভর করে বাজার অস্থির থাকতে পারে।

করোনা বিধিনিষেধ বিশ্বের অন্যান্য দেশে শিথিল করা হলেও চীনে এখনও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জিরো কোভিড নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশটির বাণিজ্যিক হাব সাংহাইয়ে রোববার রাতে শত শত বিক্ষোভকারী জড়ো হন। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে।

ইমোরি ফান্ড ম্যানেজমেন্ট ইনকর্পোরেটেড-এর সিইও তেতসু ইমোরি বলেন, চীনে চাহিদা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় এবং তেল উৎপাদনকারীদের উৎপাদন নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

তিনি বলেন, পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা (ওপেক) যদি না উৎপাদন কোটা আরও কমানোর বিষয়ে একমত হয় বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ পুনরায় লোড করতে না যায়, তবে তেলের দাম আরও নিচের দিকে যেতে পারে।

পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা (ওপেক) এবং রাশিয়াসহ তার সহযোগীরা, ওপেক প্লাস নামে পরিচিত। আগামী ৪ ডিসেম্বর বৈঠক হবে ওপেক প্লাসের।

গত অক্টোবরে ওপেক প্লাস ২০২৩ সাল পর্যন্ত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রতিদিন ২ মিলিয়ন ব্যারেল কমাতে সম্মত হয়।

ইরাকের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল বিপণনকারী সোমো-এর এক শীর্ষ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, পরবর্তী ওপেক প্লাস বৈঠকে বাজারের অবস্থা ও ভারসাম্য বিবেচনা করা হবে।

এদিকে, বিনিয়োগকারীরা রাশিয়ান তেলের মূল্য নির্ধারণের জন্য পশ্চিমা পরিকল্পনার দিকেও মনোনিবেশ করছে।

জি-৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৫ থেকে ৭০ ডলারে রাখা নিয়েও কথা বলছে। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর নতুন মূল্য ৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।

সূত্র: রয়টার্স, ব্লুমবার্গ

ট্যাগস

আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২১ সালের পর তেলের দাম সর্বনিম্ন

আপডেট সময় ০৮:১৮:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

চীনে করোনা বিধিনিষেধ বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক দেশটির ক্রেতাদের চাহিদা ও উদ্বেগের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১ টা ৩১ মিনিটের দিকে, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ অথবা ২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ২০ মার্কিন ডলারে। আগের ধাপে যেখানে ৩ শতাংশ বাড়ার আগে ছিল ৮০ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং গত ৪ জানুয়ারির পর থেকে সবচেয়ে কম।

ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম ২ দশমিক ১৬ শতাংশ অথবা ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৭৪ দশমিক ১২ শতাংশ। এর আগের সেশনে ব্যারেলপ্রতি দাম ছিল ৭৩ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে এটি সর্বনিম্ন দাম।

উভয় বেঞ্চমার্কের গত সপ্তাহে দাম ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। পরপর তিন সপ্তাহ দরপতন হয়েছে। সবশেষ সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই-এর দাম কমেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

নিসান সিকিউরিটিজের গবেষণা মহাব্যবস্থাপক হিরোইউকি কিকুকাওয়া বলেছেন, চীনে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, একই সঙ্গে সাংহাইতে বিধিনিষেধ বিরোধী বিক্ষোভ তেলের বাজারে প্রভাব ফেলেছে। তেলের চাহিদা নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ডব্লিউটিআই এর তেলের দাম ৭০ থেকে ৭৫ ডলারে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ওপেক প্লাস এর আসন্ন বৈঠকের ফলাফল ও রাশিয়ার তেলের ওপর জি-৭ এর মূল্য নির্ধারণের ওপর নির্ভর করে বাজার অস্থির থাকতে পারে।

করোনা বিধিনিষেধ বিশ্বের অন্যান্য দেশে শিথিল করা হলেও চীনে এখনও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জিরো কোভিড নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশটির বাণিজ্যিক হাব সাংহাইয়ে রোববার রাতে শত শত বিক্ষোভকারী জড়ো হন। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে।

ইমোরি ফান্ড ম্যানেজমেন্ট ইনকর্পোরেটেড-এর সিইও তেতসু ইমোরি বলেন, চীনে চাহিদা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় এবং তেল উৎপাদনকারীদের উৎপাদন নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

তিনি বলেন, পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা (ওপেক) যদি না উৎপাদন কোটা আরও কমানোর বিষয়ে একমত হয় বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ পুনরায় লোড করতে না যায়, তবে তেলের দাম আরও নিচের দিকে যেতে পারে।

পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা (ওপেক) এবং রাশিয়াসহ তার সহযোগীরা, ওপেক প্লাস নামে পরিচিত। আগামী ৪ ডিসেম্বর বৈঠক হবে ওপেক প্লাসের।

গত অক্টোবরে ওপেক প্লাস ২০২৩ সাল পর্যন্ত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রতিদিন ২ মিলিয়ন ব্যারেল কমাতে সম্মত হয়।

ইরাকের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল বিপণনকারী সোমো-এর এক শীর্ষ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, পরবর্তী ওপেক প্লাস বৈঠকে বাজারের অবস্থা ও ভারসাম্য বিবেচনা করা হবে।

এদিকে, বিনিয়োগকারীরা রাশিয়ান তেলের মূল্য নির্ধারণের জন্য পশ্চিমা পরিকল্পনার দিকেও মনোনিবেশ করছে।

জি-৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৫ থেকে ৭০ ডলারে রাখা নিয়েও কথা বলছে। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর নতুন মূল্য ৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।

সূত্র: রয়টার্স, ব্লুমবার্গ


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471