ঢাকা ১০:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :

নিয়ামতপুরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

নিয়ামতপুর, পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ এবারই প্রথম নিজে আবাদ করলাম, কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেলো। ৫ বিঘা আবাদ করেছিলাম। খেয়ে, না খেয়ে টাকা কর্জ করে আবাদ করেছিলাম।

ধানও খুব ভালো হয়েছিলো। এলাকার সেরা ধান। আর কয়েকদিন পরেই কাটা হতো ধান। স্বপ্ন ছিলো কর্জ পরিশোধ করে নিজেকে গুছিয়ে নিবো। কিন্তু কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো।

আমি এখন কর্জ পরিশোধ করবো কি করে? সারা বছর খাবো কি? আমি চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। কান্না বিজড়িত কন্ঠে কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলছিলেন নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের আক্তার হোসেন শেখের ছেলে আপেল মাহমুদ শেখ। মঙ্গলবার ১১ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে আকস্মিকভাবে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। শুরুতে টানা ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বৃষ্টির পর শিলাবৃষ্টির ও কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়।

এতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পানিশাইল, গলাইকুড়া, কানইল, মালিয়াখৈল, রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর মানপুর, পানিহারা, শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া, চকরামনগর, রামকুড়া, লক্ষিতাড়া, ভাদরন্ড, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর, বাহাদুরপুর, ঘোষকুড়া, বরিয়া, ছাতমাসহ বেশকিছু এলাকার বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে ধান ঝড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন কৃষক।
সরেজমিনে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মাঠের পাকা ধান ঝড়ে যায়।
একই সঙ্গে আমসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। শিলাবৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির পাকা ধান মাটিতে লুটে পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক মনছের আলী বলেন, এমনিতেই কয়েক বছর ধরে নানা কারণে ধান আবাদে লোকসান লেগেই আছে। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হলো তা হয়তো আর পোষাণো সম্ভব হবে না। আমার প্রায় ৬ বিঘা জমির ধান ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে আমার প্রায় দুই থেকে আড়াই বিঘা জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। বাকী ৪ বিঘা জমির ধান বিঘাপ্রতি আনুমানিক চার-পাঁচ মণ হারে ধান হতে পারে।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমীর আব্দুল্লাহ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মাঠে প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। ১০ ভাগ বাকী রয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ধান উৎপাদনে সামগ্রীকভাবে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি উপজেলায় ১শ ১০ হেঃ জমির ক্ষতি হয়েছে। পরবর্তীতে জরিপ করে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে এ নিয়ে কাজ করছে।

 

 

ট্যাগস

সর্বাধিক পঠিত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের ডাক বিজেপি নেতার

নিয়ামতপুরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

আপডেট সময় ১২:১৯:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মে ২০২১

নিয়ামতপুর, পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ এবারই প্রথম নিজে আবাদ করলাম, কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেলো। ৫ বিঘা আবাদ করেছিলাম। খেয়ে, না খেয়ে টাকা কর্জ করে আবাদ করেছিলাম।

ধানও খুব ভালো হয়েছিলো। এলাকার সেরা ধান। আর কয়েকদিন পরেই কাটা হতো ধান। স্বপ্ন ছিলো কর্জ পরিশোধ করে নিজেকে গুছিয়ে নিবো। কিন্তু কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো।

আমি এখন কর্জ পরিশোধ করবো কি করে? সারা বছর খাবো কি? আমি চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। কান্না বিজড়িত কন্ঠে কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলছিলেন নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের আক্তার হোসেন শেখের ছেলে আপেল মাহমুদ শেখ। মঙ্গলবার ১১ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে আকস্মিকভাবে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। শুরুতে টানা ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বৃষ্টির পর শিলাবৃষ্টির ও কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়।

এতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পানিশাইল, গলাইকুড়া, কানইল, মালিয়াখৈল, রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর মানপুর, পানিহারা, শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া, চকরামনগর, রামকুড়া, লক্ষিতাড়া, ভাদরন্ড, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর, বাহাদুরপুর, ঘোষকুড়া, বরিয়া, ছাতমাসহ বেশকিছু এলাকার বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে ধান ঝড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন কৃষক।
সরেজমিনে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মাঠের পাকা ধান ঝড়ে যায়।
একই সঙ্গে আমসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। শিলাবৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির পাকা ধান মাটিতে লুটে পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক মনছের আলী বলেন, এমনিতেই কয়েক বছর ধরে নানা কারণে ধান আবাদে লোকসান লেগেই আছে। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হলো তা হয়তো আর পোষাণো সম্ভব হবে না। আমার প্রায় ৬ বিঘা জমির ধান ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে আমার প্রায় দুই থেকে আড়াই বিঘা জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। বাকী ৪ বিঘা জমির ধান বিঘাপ্রতি আনুমানিক চার-পাঁচ মণ হারে ধান হতে পারে।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমীর আব্দুল্লাহ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মাঠে প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। ১০ ভাগ বাকী রয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ধান উৎপাদনে সামগ্রীকভাবে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি উপজেলায় ১শ ১০ হেঃ জমির ক্ষতি হয়েছে। পরবর্তীতে জরিপ করে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে এ নিয়ে কাজ করছে।

 

 


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471