ঢাকা ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড Logo ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ Logo ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৮০ Logo পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব Logo নওগাঁ ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে মারধর Logo পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা Logo ৫ বছর পর দেশে এসেছেন শাবানা Logo নুরাল পাগলের কবর ভাঙচুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৫ নেতা গ্রেপ্তার Logo মার্কিন বাণিজ্যে শুল্ক ছাড় পাচ্ছে মিত্র দেশগুলো, ট্রাম্পের নতুন আদেশ Logo বরগুনায় নিজ বসতঘর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

মোটরসাইকেল চোর এর সিন্ডিকেটের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার,নওগাঁ: নওগাঁর মহাদেবপুরে গ্রামবাসীদের হাতেনাতে ধরাপড়া মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের এক সদস্যকে ইউপি চেয়ারম্যান ছেড়ে দেয়ার প্রায় এক সপ্তাহেও ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

চেয়ারম্যানের ছেড়ে দেয়া চোরকে থানা পুলিশ আটক করলেও সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের আটকের উদ্যোগ নেয়নি।

উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের মৃত আবু তাহের সরদারের ছেলে রেজাউল আকতার অভিযোগ করেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মহাদেবপুর উপজেলা সদরের কুশার সেন্টার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

গত ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৭ টায় তিনি তার হিরো পেশন ১০০ সিসি মোটরসাইকেল মহাদেবপুর কেন্দ্রীয় বাজার জামেহ মসজিদ প্রাঙ্গনে রেখে এশার নামাজ আদায় করতে যান। নামাজ শেষে মোটরসাইকেলটি আর পাননি।

উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের মোজাফফর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম, ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে ইউসুফ আলী, আবদুর রহিমের ছেলে নাহিদ হোসেন, আবদুল কাদেরের ছেলে হাসেম আলী, আনোয়ার হোসেন সাব্বির, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিলন হোসেন জনি প্রমুখ অভিযোগ করেন যে, রাত ৯ টায় তারা তাদের গ্রামের পুকুর পাড়ে মাচায় বসে ছিলেন। এ সময় পাশর্^বর্তী কাঞ্চন গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে আশিক হোসেনকে (২৪) তাদের সামনের রাস্তা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল ঠেলে নিয়ে যেতে দেখে তারা আশিককে আটক করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে মোটরসাইকেলটি সে চুরি করেছে বলে স্বীকার করে। খবর পেয়ে চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপন সেখানে উপস্থিত হয়ে চোর আশিককে তার নিজের জিম্মায় নিয়ে থানা পুলিশে খবর দেন।

রাত ১১ টায় মহাদেবপুর থানার এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক ঘটনাস্থলে গিয়ে মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন।

চেয়ারম্যান গ্রামবাসীদের জানান যে, চোরকে আগে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের নাম বের করবেন, তারপর তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করবেন।

কিন্তু পরদিন গ্রামবাসীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, ওই চোরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসীরা বিকেলে মহাদেবপুর থানায় উপস্থিত হয়ে ওসিকে বিষয়টি অবহিত করলে মহাদেবপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল নিজে অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যায় আশিককে তার বাড়ী থেকে আটক করে নিয়ে আসেন।

কিন্তু হাতেনাতে ধরা চোরকে ছেড়ে দেয়ার প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি।
ওসি জানান, রাতে চেয়ারম্যান তাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, একটি মোটরসাইকেল পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশকে ভূল তথ্য দেয়া, হাতেনাতে ধরাপড়া আসামীকে পুলিশে সোপর্দ না করা ও তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে পুলিশ তথা রাষ্ট্রের সাথে বিশ^াসভঙ্গের সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সে ব্যাপারে ওসি জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মোটরসাইকেলের মালিক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আটক আশিককে পরদিন নওগাঁ কোর্টে চালান দিয়ে ৫ দিনের রিম্যান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। সে বিষয়ে শুনানী হয়নি।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপন কেন চোরকে ছেড়ে দিলেন সে ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এনিয়ে এলাকায় দারুন তোলপাড় শুরু হয়েছে। একজন বিচারক হয়ে কিভাবে হাতেনাতে আটক চোরকে ছেড়ে দেয়া হলো তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন যে, মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

ট্যাগস

নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড

মোটরসাইকেল চোর এর সিন্ডিকেটের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি

আপডেট সময় ০৮:৩২:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ নভেম্বর ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার,নওগাঁ: নওগাঁর মহাদেবপুরে গ্রামবাসীদের হাতেনাতে ধরাপড়া মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের এক সদস্যকে ইউপি চেয়ারম্যান ছেড়ে দেয়ার প্রায় এক সপ্তাহেও ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

চেয়ারম্যানের ছেড়ে দেয়া চোরকে থানা পুলিশ আটক করলেও সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের আটকের উদ্যোগ নেয়নি।

উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের মৃত আবু তাহের সরদারের ছেলে রেজাউল আকতার অভিযোগ করেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মহাদেবপুর উপজেলা সদরের কুশার সেন্টার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

গত ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৭ টায় তিনি তার হিরো পেশন ১০০ সিসি মোটরসাইকেল মহাদেবপুর কেন্দ্রীয় বাজার জামেহ মসজিদ প্রাঙ্গনে রেখে এশার নামাজ আদায় করতে যান। নামাজ শেষে মোটরসাইকেলটি আর পাননি।

উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের মোজাফফর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম, ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে ইউসুফ আলী, আবদুর রহিমের ছেলে নাহিদ হোসেন, আবদুল কাদেরের ছেলে হাসেম আলী, আনোয়ার হোসেন সাব্বির, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিলন হোসেন জনি প্রমুখ অভিযোগ করেন যে, রাত ৯ টায় তারা তাদের গ্রামের পুকুর পাড়ে মাচায় বসে ছিলেন। এ সময় পাশর্^বর্তী কাঞ্চন গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে আশিক হোসেনকে (২৪) তাদের সামনের রাস্তা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল ঠেলে নিয়ে যেতে দেখে তারা আশিককে আটক করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে মোটরসাইকেলটি সে চুরি করেছে বলে স্বীকার করে। খবর পেয়ে চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপন সেখানে উপস্থিত হয়ে চোর আশিককে তার নিজের জিম্মায় নিয়ে থানা পুলিশে খবর দেন।

রাত ১১ টায় মহাদেবপুর থানার এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক ঘটনাস্থলে গিয়ে মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন।

চেয়ারম্যান গ্রামবাসীদের জানান যে, চোরকে আগে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের নাম বের করবেন, তারপর তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করবেন।

কিন্তু পরদিন গ্রামবাসীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, ওই চোরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসীরা বিকেলে মহাদেবপুর থানায় উপস্থিত হয়ে ওসিকে বিষয়টি অবহিত করলে মহাদেবপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল নিজে অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যায় আশিককে তার বাড়ী থেকে আটক করে নিয়ে আসেন।

কিন্তু হাতেনাতে ধরা চোরকে ছেড়ে দেয়ার প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি।
ওসি জানান, রাতে চেয়ারম্যান তাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, একটি মোটরসাইকেল পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশকে ভূল তথ্য দেয়া, হাতেনাতে ধরাপড়া আসামীকে পুলিশে সোপর্দ না করা ও তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে পুলিশ তথা রাষ্ট্রের সাথে বিশ^াসভঙ্গের সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সে ব্যাপারে ওসি জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মোটরসাইকেলের মালিক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আটক আশিককে পরদিন নওগাঁ কোর্টে চালান দিয়ে ৫ দিনের রিম্যান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। সে বিষয়ে শুনানী হয়নি।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপন কেন চোরকে ছেড়ে দিলেন সে ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এনিয়ে এলাকায় দারুন তোলপাড় শুরু হয়েছে। একজন বিচারক হয়ে কিভাবে হাতেনাতে আটক চোরকে ছেড়ে দেয়া হলো তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন যে, মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471