ঢাকা ০৬:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ Logo ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৮০ Logo পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব Logo নওগাঁ ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে মারধর Logo পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা Logo ৫ বছর পর দেশে এসেছেন শাবানা Logo নুরাল পাগলের কবর ভাঙচুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৫ নেতা গ্রেপ্তার Logo মার্কিন বাণিজ্যে শুল্ক ছাড় পাচ্ছে মিত্র দেশগুলো, ট্রাম্পের নতুন আদেশ Logo বরগুনায় নিজ বসতঘর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo ১৪, ১৮ ও ২৪’র নির্বাচন মাথা থেকে মুছে ফেলতে হবে

বিএনপি ৩১ লাখ পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছে: মির্জা ফখরুল

রুহুল কবির রিজভী

রাজনীতি ডেস্কঃ  দলের নেতাকর্মীরা এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৩১ লাখ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৩টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে  বিএনপি। এ ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি সারাদেশে অব্যাহত আছে-থাকবে।

এছাড়া ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে প্রায় ৭৫টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইমারজেন্সি বিভাগে প্রায় দুই হাজার পূর্ণাঙ্গ পিপিই সরবরাহ করেছে। সেসঙ্গে অনলাইনের মাধ্যমে ড্যাব সদস্যরা দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা দিচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনার এ ভয়াবহ দুর্যোগেও সরকারের  নিপীড়ন থেমে নেই। সরকারি ত্রাণের অনিয়ম, চাল চুরি ও করোনা নিয়ে সমালোচনা করায় এ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গণমাধ্যমকর্মীসহ ৪১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। বেশ কয়েকজন সম্পাদক ও সাংবাদিকের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ত্রাণ দিতে গিয়ে গ্রেফতার হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে করোনার ভয়াবহ থাবায় আক্রান্ত হচ্ছেন কারাবন্দিরাও। ইতোমধ্যে সিলেট কারাগারে একজন বন্দি করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন করাবন্দিরা। বেশ কয়েকজন কারারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আমি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করছি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সব জেলায়ই ত্রাণের জন্য গরিব ও অসহায় মানুষ বিক্ষোভ করছে, সড়ক অবরোধ করছে। অন্যদিকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না করোনা আক্রান্তরা।

এমনকি অন্য রোগে আক্রান্তরাও যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বিনা চিকিৎসায় পথে, ঘাটে, বাসে, ফুটপাতে এখন মরদেহ পড়ে থাকার খবর বের হচ্ছে। এটা কী নিদারুন অবস্থা।

শাহবাগে লম্বা লাইন ধরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও করোনা টেস্ট করাতে না পেরে সড়কেই ছেলে-মেয়ের চোখের সামনে প্রাণ হারিয়েছেন বৃদ্ধ।

করোনার টেস্ট করতে মানুষ হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। সরকার ঘোষিত ৪২টি সেন্টারের বেশ কয়েকটি সেন্টার কার্যকর নয়। যেসব সেন্টারে টেস্ট হচ্ছে তাও অপর্যাপ্ত। মানুষ লাইন ধরে ফিরে যাচ্ছে টেস্ট না করে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পারছেন না । অভিযোগ রয়েছে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়।

এ যদি সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী তাতো বুঝতেই পারছেন। শুধু কিটের অভাবে করোনার টেস্ট করতে পারছেন না আক্রান্ত রোগীরা। অথচ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিট অনুমোদন নিয়ে টালবাহানা চলছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের, আক্রান্ত ২৩ হাজার ৮৭০ জন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সংখ্যা আরও ৪০ গুণ বেশি হবে।

গণমাধ্যমের তথ্যমতে করোনা উপসর্গে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১১০০ জন।  চিকিৎস ৭৮০ জন আক্রান্ত, নার্স ৬০০ জন ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত ৫৫০ জন। এরমধ্যে ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন ২২০০ এর অধিক, অন্য বাহিনীর আরও ৬ শতাধিক সদস্য আক্রান্ত। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ১৫ জন।

গণমাধ্যমকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৩৫ জন। ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রশাসনেরও বেশ কিছু সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখলাম ৫০ লাখ কর্মহীন লোকের মধ্যে ১২৫৭ কোটি টাকা বিতরণ করছে সরকার। মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে, ব্যাংকের মাধ্যমে সে টাকা বিতরণ হবে।

সেখানেও নগদ টাকা লুট হচ্ছে। একজনের মোবাইল নম্বরে ৩০৬ জনের নাম। অর্থাৎ ৩০৬ জনের টাকা একজন লুট করবে। এছাড়াও নগদ টাকার তালিকায় নাম রয়েছে তাদের দলীয় নেতা-কর্মী, বাড়ির মালিক, দোকানের মালিক, দলীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের।

অথচ দোকানের কর্মচারীর নাম নেই, কাজের লোকদের নাম নেই, গরিব মানুষদের নাম নেই। আর বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের নামতো নেইই। এ হলো অবস্থা।’

এসময় বিএনপির জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের প্রধান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস

ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ

বিএনপি ৩১ লাখ পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছে: মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় ০৩:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মে ২০২০

রাজনীতি ডেস্কঃ  দলের নেতাকর্মীরা এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৩১ লাখ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৩টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে  বিএনপি। এ ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি সারাদেশে অব্যাহত আছে-থাকবে।

এছাড়া ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে প্রায় ৭৫টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইমারজেন্সি বিভাগে প্রায় দুই হাজার পূর্ণাঙ্গ পিপিই সরবরাহ করেছে। সেসঙ্গে অনলাইনের মাধ্যমে ড্যাব সদস্যরা দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা দিচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনার এ ভয়াবহ দুর্যোগেও সরকারের  নিপীড়ন থেমে নেই। সরকারি ত্রাণের অনিয়ম, চাল চুরি ও করোনা নিয়ে সমালোচনা করায় এ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গণমাধ্যমকর্মীসহ ৪১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। বেশ কয়েকজন সম্পাদক ও সাংবাদিকের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ত্রাণ দিতে গিয়ে গ্রেফতার হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে করোনার ভয়াবহ থাবায় আক্রান্ত হচ্ছেন কারাবন্দিরাও। ইতোমধ্যে সিলেট কারাগারে একজন বন্দি করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন করাবন্দিরা। বেশ কয়েকজন কারারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আমি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করছি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সব জেলায়ই ত্রাণের জন্য গরিব ও অসহায় মানুষ বিক্ষোভ করছে, সড়ক অবরোধ করছে। অন্যদিকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না করোনা আক্রান্তরা।

এমনকি অন্য রোগে আক্রান্তরাও যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বিনা চিকিৎসায় পথে, ঘাটে, বাসে, ফুটপাতে এখন মরদেহ পড়ে থাকার খবর বের হচ্ছে। এটা কী নিদারুন অবস্থা।

শাহবাগে লম্বা লাইন ধরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও করোনা টেস্ট করাতে না পেরে সড়কেই ছেলে-মেয়ের চোখের সামনে প্রাণ হারিয়েছেন বৃদ্ধ।

করোনার টেস্ট করতে মানুষ হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। সরকার ঘোষিত ৪২টি সেন্টারের বেশ কয়েকটি সেন্টার কার্যকর নয়। যেসব সেন্টারে টেস্ট হচ্ছে তাও অপর্যাপ্ত। মানুষ লাইন ধরে ফিরে যাচ্ছে টেস্ট না করে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পারছেন না । অভিযোগ রয়েছে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়।

এ যদি সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী তাতো বুঝতেই পারছেন। শুধু কিটের অভাবে করোনার টেস্ট করতে পারছেন না আক্রান্ত রোগীরা। অথচ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিট অনুমোদন নিয়ে টালবাহানা চলছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের, আক্রান্ত ২৩ হাজার ৮৭০ জন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সংখ্যা আরও ৪০ গুণ বেশি হবে।

গণমাধ্যমের তথ্যমতে করোনা উপসর্গে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১১০০ জন।  চিকিৎস ৭৮০ জন আক্রান্ত, নার্স ৬০০ জন ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত ৫৫০ জন। এরমধ্যে ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন ২২০০ এর অধিক, অন্য বাহিনীর আরও ৬ শতাধিক সদস্য আক্রান্ত। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ১৫ জন।

গণমাধ্যমকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৩৫ জন। ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রশাসনেরও বেশ কিছু সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখলাম ৫০ লাখ কর্মহীন লোকের মধ্যে ১২৫৭ কোটি টাকা বিতরণ করছে সরকার। মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে, ব্যাংকের মাধ্যমে সে টাকা বিতরণ হবে।

সেখানেও নগদ টাকা লুট হচ্ছে। একজনের মোবাইল নম্বরে ৩০৬ জনের নাম। অর্থাৎ ৩০৬ জনের টাকা একজন লুট করবে। এছাড়াও নগদ টাকার তালিকায় নাম রয়েছে তাদের দলীয় নেতা-কর্মী, বাড়ির মালিক, দোকানের মালিক, দলীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের।

অথচ দোকানের কর্মচারীর নাম নেই, কাজের লোকদের নাম নেই, গরিব মানুষদের নাম নেই। আর বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের নামতো নেইই। এ হলো অবস্থা।’

এসময় বিএনপির জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের প্রধান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471