সরকারি হোক অথবা এমপিওভুক্ত। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার কোনো শিক্ষক দ্বিতীয় কোনা পেশা নিতে পারবেন না। কিন্তু নওগাঁয় চাকুরিবিধি লঙ্ঘন করে সাংবাদিকতার আড়ালে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে অভিযোগের সত্যতা যাচাই শুরু করেছে রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সেই শিক্ষকের নাম তন্ময় ভৌমিক। তিনি রাণীনগর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তার চাঁদাবাজি আর অপতৎপরতায় ইতি পুর্বে বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিকার চেয়েছে ভুক্ত ভুগীরা ।
সব শেষ গত ৮ আগস্ট নওগাঁ শহরের চক এনায়েতের এ বি এম নাশরাত জাহান কাদির মুন্না নামের এক বাসিন্দা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে একটি অভিযোগ জমা দেন। এতে বলা হয়, ‘তন্ময় ভৌমিক সরকারি চাকুরির পাশাপাশি বিদ্যালয়ে অধিকাংশ সময়ে পাঠদান ফাঁকি দিয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল একাত্তর টিভি ও জাতীয় দৈনিক দৈনিক ইত্তেফাকের নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ মোতাবেক একজন সরকারি কর্মচারী তাঁর চাকুরির পাশাপাশি সাইড বিজনেস বা পার্ট টাইম চাকুরি করতে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় তা আচরণ বিধিমালা লঙ্গন হবে।
তিনি সাংবাদিকতার আড়ালে চাঁদাবাজি এবং সুবিধা না পেলেই মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করেন । আওয়ামী সরকারের সময় বিশেষ সম্প্রদায়ের হওয়ার ফলে তার বেপরোয়া লাগামহীন হয়ে উঠে। অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘তিনি (তন্ময়) তার বিদ্যালয়ে পাঠদান ফাঁকি দিয়ে সারাদিন সাংবাদিকতার নামে বিভিন্ন অফিস আদালত ও বিভিন্ন স্থানে সময় অতিবাহিত করেন। সরকারী শিক্ষক হলেও চাঁদাবাজি তার আয়ের প্রধান উৎস উঠে । সপ্তাহ শেষে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর সাংবাদিকতার ভয় দেখিয়ে ও প্রভাব খাটিয়ে হাজিরা খাতায় নিয়মিত উপস্থিতির স্বাক্ষর করেন। তিনি একজন প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষক হয়ে ইতোমধ্যে নওগাঁ শহরে ফ্লাট সহ অনেক কিছুই করেছেন।’
তন্ময় ভৌমিক এখন পর্যন্ত সহকারি শিক্ষক হিসেবে যে বেতন পেয়েছেন তা ফেরত পেতে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও অভিযোগে আবেদন করেন নাশরাত জাহান কাদির মুন্না।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সহকারি শিক্ষক তন্ময় ভৌমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তন্ময় ভৌমিক চাঁদাবাজি ও অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি চাকুরি শেষে অবসর সময়ে সাংবাদিকতা ও লেখালেখি করি।’ তন্ময় জানান, তিনি ঋণ করে তিনি ফ্লাট নির্মাণ করছেন। সরকারি চাকরির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করা যায় কিনা তা তার জানা নেই বলেও দাবি করেন।