গাজায় ইসরায়েলি একের পর এক হামলায় বেশ বিপর্যস্ত জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের । খাদ্য, বাসস্থান সহ চিকিৎসা খাতেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে। গাজাবাসীর এরুপ র্ববরতায় জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় লড়াই অব্যাহত থাকায় অনাহারে দিন কাটাচ্ছে সেখানকার অর্ধেক মানুষ।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির উপ-পরিচালক চার্ল স্কাউ বলেন, প্রয়োজনীয় সরবরাহের অল্প কিছু অংশই গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে।
সেখানে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই প্রতিদিন খাবার পাচ্ছে না। তিনি বলেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সেখানে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, গাজায় হামাসকে নির্মূল করতে এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়া হবে।ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বলেন, যে কোনো বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু এবং আঘাত বেদনাদায়ক। তবে আমাদের কাছে কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, গাজা উপত্যকার মধ্যে যতটা সম্ভব আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সবকিছু করছি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ভেস্তে গেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ১৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে।
শুধুমাত্র মিশরের সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং উন্মুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে গাজায় সীমিত পরিমাণে সাহায্য-সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু যে পরিমাণ সহায়তা এখন পর্যন্ত সেখানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তা সাগরে এক ফোঁটা পানি ফেলার মতো। অর্থাৎ যে পরিমাণ সহায়তা প্রয়োজন তা সেখানে সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কিছু এলাকায় ১০টির মধ্যে নয়টি পরিবারই কোনো খাবার ছাড়াই পুরো দিন-রাত কাটাচ্ছে। গাজার দক্ষিণে অবস্থিত খান ইউনিসের লোকজন বলছেন সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। সেখানকার এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার তিন বছরের একটি মেয়ে আছে। সে সব সময় মিষ্টি, আপেল বা যে কোনো ফল খাওয়ার বায়না করছে। কিন্তু তাকে কিছুই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এই চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি খুবই অসহায় বোধ করছেন। সেখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই। অনেকের ঘরে শুধু চাল আছে। কেউ কেউ সারাদিনে মাত্র একবার খেতে পারছে। দিন দিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।