ঢাকা ০১:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ায় শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে এক বৃদ্ধকে তাঁর জামাতা খুন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি ওই গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান (৬৫)।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শামীম মিয়া গতকাল রাত থেকে পলাতক। তিনি একই উপজেলার পেটুয়াজুড়ি গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে হাফিজুর রহমানের মেয়ে নাহিদা আক্তারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের শামীম মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। নাহিদা ও শামীমের দুই বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়।

গত ৮ অক্টোবর শামীম মিয়াকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান নাহিদা। এরপর বাবার বাড়ি ছেড়ে স্বামীর বাড়িতে ফিরে না গেলে নাহিদার বাবা হাফিজুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেন শামীম। কয়েক দিন আগে বাবার বাড়ির লোকজনকে না জানিয়ে আবার শামীমের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে যান নাহিদা। সেখানে আবার তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়।

পুনরায় মেয়ের দাম্পত্য জীবনের কলহের বিষয়টি জানতে পেরে হাফিজুর রহমান গতকাল ওই বাড়ি থেকে নাহিদাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। গতকাল সন্ধ্যায় শামীমের বাবা তাজু মিয়াসহ পরিবারের লোকজন নাহিদাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নিতে নুরপুর গ্রামে হাফিজুর রহমানের বাড়িতে যান।

নাহিদা আর শামীমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না বলে শামীমের বাবাকে জানান হাফিজুর। এতে শামীম ক্ষুদ্ধ হয়ে নাহিদার বাবা হাফিজুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেন। এরপর গতকাল রাত সাড়ে তিনটার দিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়িতে যান। মধ্যরাতে ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্বশুর হাবিবুর রহমানের বুকে, পেটে, পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করেন। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যান শামীম।

ছুরির আঘাতে হাবিবুর রহমানের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক হাফিজুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত হাফিজুর রহমানের মেয়ে নাহিদা আক্তার বলেন, ‘ছুরিকাঘাতের সময় বাবা চিৎকার শুরু করেন। “শামীম আমাকে ছেড়ে দে, শামিম আমাকে ছেড়ে দে” বলে বাবার চিৎকারে পরিবারের লোকজনসহ আমি ঘর থেকে দৌড়ে এগিয়ে যাই। এ সময় শামীম সেখান থেকে পালিয়ে যায়।’

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল নাহিদার বাবা হাফিজুর রহমান শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলে ক্ষিপ্ত হন শামীম। এর জেরে তিনি হাফিজুর রহমানকে ধারালো দেশি অস্ত্র দিয়ে বুকে, পেটে, পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে পালিয়ে যান। ময়নাতদন্ত শেষে হাফিজুরের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

 

স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ায় শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যার

আপডেট সময় ১১:৩৭:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে এক বৃদ্ধকে তাঁর জামাতা খুন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি ওই গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান (৬৫)।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শামীম মিয়া গতকাল রাত থেকে পলাতক। তিনি একই উপজেলার পেটুয়াজুড়ি গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে হাফিজুর রহমানের মেয়ে নাহিদা আক্তারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের শামীম মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। নাহিদা ও শামীমের দুই বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়।

গত ৮ অক্টোবর শামীম মিয়াকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান নাহিদা। এরপর বাবার বাড়ি ছেড়ে স্বামীর বাড়িতে ফিরে না গেলে নাহিদার বাবা হাফিজুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেন শামীম। কয়েক দিন আগে বাবার বাড়ির লোকজনকে না জানিয়ে আবার শামীমের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে যান নাহিদা। সেখানে আবার তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়।

পুনরায় মেয়ের দাম্পত্য জীবনের কলহের বিষয়টি জানতে পেরে হাফিজুর রহমান গতকাল ওই বাড়ি থেকে নাহিদাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। গতকাল সন্ধ্যায় শামীমের বাবা তাজু মিয়াসহ পরিবারের লোকজন নাহিদাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নিতে নুরপুর গ্রামে হাফিজুর রহমানের বাড়িতে যান।

নাহিদা আর শামীমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না বলে শামীমের বাবাকে জানান হাফিজুর। এতে শামীম ক্ষুদ্ধ হয়ে নাহিদার বাবা হাফিজুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেন। এরপর গতকাল রাত সাড়ে তিনটার দিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়িতে যান। মধ্যরাতে ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্বশুর হাবিবুর রহমানের বুকে, পেটে, পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করেন। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যান শামীম।

ছুরির আঘাতে হাবিবুর রহমানের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক হাফিজুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত হাফিজুর রহমানের মেয়ে নাহিদা আক্তার বলেন, ‘ছুরিকাঘাতের সময় বাবা চিৎকার শুরু করেন। “শামীম আমাকে ছেড়ে দে, শামিম আমাকে ছেড়ে দে” বলে বাবার চিৎকারে পরিবারের লোকজনসহ আমি ঘর থেকে দৌড়ে এগিয়ে যাই। এ সময় শামীম সেখান থেকে পালিয়ে যায়।’

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল নাহিদার বাবা হাফিজুর রহমান শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলে ক্ষিপ্ত হন শামীম। এর জেরে তিনি হাফিজুর রহমানকে ধারালো দেশি অস্ত্র দিয়ে বুকে, পেটে, পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে পালিয়ে যান। ময়নাতদন্ত শেষে হাফিজুরের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।