বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় মুক্তিপণের তিন লাখ টাকা না পেয়ে এক মাদ্রাসাছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার। গতকাল রোববার গভীর রাতে উপজেলার বিষখালী নদীসংলগ্ন দক্ষিণ বাইনচটকি ওয়াপদা সড়কের পাশের জঙ্গল থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই কিশোরের নাম হাসিবুর রহমান (১৩)। সে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথরঘাটা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। হাসিবুর পাথরঘাটা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
হাসিবুরকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবদুল্লাহ আল নোমান (১৯) ওরফে তানভীর ফরাজী নামের স্থানীয় এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই হাসিবুরের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ জানায়। আবদুল্লাহ আল নোমান পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের মহিউদ্দিন ফরাজীর ছেলে।
নিহত হাসিবুরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাসিবুরের বাবা শফিকুল ইসলাম গত কয়েক দিন ধরে অসুস্থ থাকায় হাসিবুর বাবার চায়ের দোকান দেখাশোনা করছিল। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিল সে। এ সময় পূজা দেখানোর কথা বলে তাকে অপহরণ করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। পরে হাসিবুরকে করা নির্যাতনের ভিডিও তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় হাসিবুরের বাবা পাথরঘাটা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পাথরঘাটা থানার পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জিডির সূত্র ধরে আবদুল্লাহ আল নোমানকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি চরদুয়ানী ইউনিয়নের হোগলাপাশ গ্রাম থেকে গতকাল রাত আটটার দিকে আটক করে পুলিশ। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হাসিবুরকে অপহরণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেন নোমান। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ বাইনচটকি ওয়াপদা সড়কের পাশের জঙ্গল থেকে ড্রামে ঢোকানো অবস্থায় হাসিবুরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, জিডির সূত্র ধরে আবদুল্লাহ আল নোমান ওরফে তানভীর ফরাজীকে আটক করেছে পুলিশ। নোমানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল রাতে হাসিবুরের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হচ্ছে।