ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে সফলতা

আধা নিবিড় (সেমি ইনটেনসিভ) পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ি চাষ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে চলতি বছর আধা নিবিড় (সেমি ইনটেনসিভ) পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ওই এলাকার চিংড়ি চাষিরা।সাধারণ পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে যে উৎপাদন হয়, আধা নিবিড় পদ্ধতিতে তার চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে বলে জানান মৎস্য চাষিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের ২৫ জন চিংড়ি চাষি আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চাষ করে সফল হয়েছেন। কমিউনিটি বেজড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ, মৎস্য অধিদপ্তর, জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার যৌথ এক প্রকল্পের মাধ্যমে উৎসাহিত হয়ে এ চাষে মনোনিবেশ করেন তারা। এ পদ্ধতিতে একটি এক বিঘা মৎস্য ঘেরে প্রায় ১২ হাজার চিংড়ি পোনা ছাড়া যায়। যা প্রায় ৪ মাসের মাথায় বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠে। গত বছর থেকে এই পদ্ধতিতে উপকূলের কিছু চাষি চিংড়ি চাষ শুরু করেন। যা উৎপাদিত হয়েছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ। সনাতন পদ্ধতিতে যেখানে হেক্টরপ্রতি ৩০০-৫০০ কেজি চিংড়ি উৎপাদন হতো, সেখানে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে উৎপাদন ৫ হাজার কেজি ছাড়িয়ে যায়।

শ্যামনগরের আধা নিবিড় চিংড়ি চাষি মিজানুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে তিনি এ চাষ শুরু করেন। প্রথমে ভয় কাজ করলেও পরবর্তীতে তা কেটে গেছে। আগের চাষ পদ্ধতির তুলনায় এ পদ্ধতিতে চাষ করে তিনি বেশি উৎপাদন পেয়েছেন। যা উৎপাদন হয়েছে তাতে স্থানীয়দের মাঝে রীতিমতো সাড়া পড়েছে বলে জানান তিনি।

দেবহাটা এলাকার চিংড়ি চাষি মাহমুদুল হক লাভলু বিশ্বাস জানান, তাদের এ সাফল্য দেখে এ অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা অল্প জমিতে অধিক উৎপাদনের আশায় আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার জানান, আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করলে সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে চাষিরা দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বিঘাপ্রতি।

খুলনা বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা (সহকারী পরিচালক) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, বাগদা চাষে এখন প্রধান সমস্যা হচ্ছে বাগদার পোনা টিকিয়ে রাখা। তবে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে সঠিক নার্সিংয়ের মাধ্যমে পোনার মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব। গতানুগতিক পদ্ধতি পরিহার করে উপকূলের চিংড়ি চাষিরা আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে অনেক বেশি লাভবান হওয়ায় চিংড়ি চাষে নতুন এক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

ট্যাগস

আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে সফলতা

আপডেট সময় ০৫:৪০:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে চলতি বছর আধা নিবিড় (সেমি ইনটেনসিভ) পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ওই এলাকার চিংড়ি চাষিরা।সাধারণ পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে যে উৎপাদন হয়, আধা নিবিড় পদ্ধতিতে তার চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে বলে জানান মৎস্য চাষিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের ২৫ জন চিংড়ি চাষি আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চাষ করে সফল হয়েছেন। কমিউনিটি বেজড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ, মৎস্য অধিদপ্তর, জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার যৌথ এক প্রকল্পের মাধ্যমে উৎসাহিত হয়ে এ চাষে মনোনিবেশ করেন তারা। এ পদ্ধতিতে একটি এক বিঘা মৎস্য ঘেরে প্রায় ১২ হাজার চিংড়ি পোনা ছাড়া যায়। যা প্রায় ৪ মাসের মাথায় বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠে। গত বছর থেকে এই পদ্ধতিতে উপকূলের কিছু চাষি চিংড়ি চাষ শুরু করেন। যা উৎপাদিত হয়েছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ। সনাতন পদ্ধতিতে যেখানে হেক্টরপ্রতি ৩০০-৫০০ কেজি চিংড়ি উৎপাদন হতো, সেখানে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে উৎপাদন ৫ হাজার কেজি ছাড়িয়ে যায়।

শ্যামনগরের আধা নিবিড় চিংড়ি চাষি মিজানুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে তিনি এ চাষ শুরু করেন। প্রথমে ভয় কাজ করলেও পরবর্তীতে তা কেটে গেছে। আগের চাষ পদ্ধতির তুলনায় এ পদ্ধতিতে চাষ করে তিনি বেশি উৎপাদন পেয়েছেন। যা উৎপাদন হয়েছে তাতে স্থানীয়দের মাঝে রীতিমতো সাড়া পড়েছে বলে জানান তিনি।

দেবহাটা এলাকার চিংড়ি চাষি মাহমুদুল হক লাভলু বিশ্বাস জানান, তাদের এ সাফল্য দেখে এ অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা অল্প জমিতে অধিক উৎপাদনের আশায় আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার জানান, আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করলে সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে চাষিরা দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বিঘাপ্রতি।

খুলনা বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা (সহকারী পরিচালক) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, বাগদা চাষে এখন প্রধান সমস্যা হচ্ছে বাগদার পোনা টিকিয়ে রাখা। তবে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে সঠিক নার্সিংয়ের মাধ্যমে পোনার মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব। গতানুগতিক পদ্ধতি পরিহার করে উপকূলের চিংড়ি চাষিরা আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে অনেক বেশি লাভবান হওয়ায় চিংড়ি চাষে নতুন এক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।