ঢাকা ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনার পথে হাঁটল রংপুরও, থ্রি-হুইলার বন্ধের দাবিতে ধর্মঘট

এবারও থ্রি-হুইলার ইস্যু। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরুর পর থেকেই চাঙা হয়ে উঠেছেন পরিবহন নেতারা। প্রথম সমাবেশ চট্টগ্রামে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ময়মনসিংহে কিছুটা অঘোষিত বাস ধর্মঘট দেখা যায়। তবে খুলনার সমাবেশের আগেই ঘোষণা দিয়ে সড়ক ও নৌ ধর্মঘট ডেকেছিলেন পরিবহন নেতারা।

এবার রংপুরেও সমাবেশের আগে থ্রি-হুইলার বন্ধের দাবিতে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটে অচল উত্তরের বিভাগীয় শহরটি।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মহাসড়কে নসিমন, করিমন ও থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ এবং সড়কে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রংপুর পরিবহন মালিক সমিতি।

পরিবহন মালিকদের ডাকা দুই দিনের ধর্মঘটের খবর আগে থেকে না জানায় শুক্রবার সকালে বাস ধরতে এসে চরম বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। রংপুর ও আশপাশের জেলাগুলোতে শুক্রবার সারা দিনই চলে এমন ভোগান্তি। শনিবারও বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলার সব পরিবহন।

যান চলাচল বন্ধ থাকায় কেউ রওনা দেন হেঁটে, কেউ আবার বাড়তি ভাড়া দিয়েও যেতে পারেননি গন্তব্যে। এতে যাত্রী ভোগান্তি পৌঁছায় চরমে।

সরেজমিন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ড, কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড ও মডার্ন মোড়ে দেখা গেছে, ছুটির দিনে বাসস্ট্যান্ড ও টার্মিনালে গিয়েও বাস বা অন্য কোনো পরিবহন না পেয়ে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে বের হয়ে বিপাকে পড়েন। কেউ কেউ বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন, কেউবা রিকশা-অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

ঢাকাগামী আসিফ নামে এক যাত্রী বলেন, সকালে অটোরিকশায় এসেছি কামারপাড়া বাসস্ট‍্যান্ড। ঢাকায় ফাইনাল পরীক্ষার জন্য যেতে হবে। কিন্তু বাস বন্ধ। যেতে না পারলে এক বছর পেছনে পড়ে যাব।

রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে আসা মামুন আহমেদ বলেন, ‘ঢাকায় চাকরি করি। সকালে অটোরিকশায় কোচ স্ট্যান্ডে আসছি। এসে দেখি সব বাস কাউন্টার বন্ধ। মডার্ন মোড়ে বাসের খোঁজে এসেও কোনো গাড়ি পেলাম না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ছুটি আজ শেষ। কাল অফিস করতে হবে। যেকোনোভাবেই সময়মতো যেতে না পারলে চাকরি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে।’

রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সদস্য শাহিনুর রহমান বলছেন, মহাসড়কে নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আইন করেছে। কিন্তু রংপুরের মহাসড়কগুলোতে এখনও নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। এ জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের জন্য কয়েকটি সংগঠন মিলে সভা করে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর থেকে শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুরের সব রুটে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।

তিনি আরও দাবি করে বলেন, রংপুর পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা এ ধর্মঘট বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো মানা না হলে প্রয়োজনে আরও সময় বাড়তে পারে। তাছাড়া পরিবহনের শ্রমিকরাও এ ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে পরিবহন বন্ধ রেখেছে।

রংপুর জেলার এই পরিবহণ ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধাতেও। জেলার অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে যানবাহন চললেও রংপুর বা রংপুরের ওপর দিয়ে অন্য কোন জেলায় যেতে পারছে না।

ট্যাগস

খুলনার পথে হাঁটল রংপুরও, থ্রি-হুইলার বন্ধের দাবিতে ধর্মঘট

আপডেট সময় ১০:২০:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২

এবারও থ্রি-হুইলার ইস্যু। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরুর পর থেকেই চাঙা হয়ে উঠেছেন পরিবহন নেতারা। প্রথম সমাবেশ চট্টগ্রামে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ময়মনসিংহে কিছুটা অঘোষিত বাস ধর্মঘট দেখা যায়। তবে খুলনার সমাবেশের আগেই ঘোষণা দিয়ে সড়ক ও নৌ ধর্মঘট ডেকেছিলেন পরিবহন নেতারা।

এবার রংপুরেও সমাবেশের আগে থ্রি-হুইলার বন্ধের দাবিতে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটে অচল উত্তরের বিভাগীয় শহরটি।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মহাসড়কে নসিমন, করিমন ও থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ এবং সড়কে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রংপুর পরিবহন মালিক সমিতি।

পরিবহন মালিকদের ডাকা দুই দিনের ধর্মঘটের খবর আগে থেকে না জানায় শুক্রবার সকালে বাস ধরতে এসে চরম বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। রংপুর ও আশপাশের জেলাগুলোতে শুক্রবার সারা দিনই চলে এমন ভোগান্তি। শনিবারও বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলার সব পরিবহন।

যান চলাচল বন্ধ থাকায় কেউ রওনা দেন হেঁটে, কেউ আবার বাড়তি ভাড়া দিয়েও যেতে পারেননি গন্তব্যে। এতে যাত্রী ভোগান্তি পৌঁছায় চরমে।

সরেজমিন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ড, কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড ও মডার্ন মোড়ে দেখা গেছে, ছুটির দিনে বাসস্ট্যান্ড ও টার্মিনালে গিয়েও বাস বা অন্য কোনো পরিবহন না পেয়ে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে বের হয়ে বিপাকে পড়েন। কেউ কেউ বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন, কেউবা রিকশা-অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

ঢাকাগামী আসিফ নামে এক যাত্রী বলেন, সকালে অটোরিকশায় এসেছি কামারপাড়া বাসস্ট‍্যান্ড। ঢাকায় ফাইনাল পরীক্ষার জন্য যেতে হবে। কিন্তু বাস বন্ধ। যেতে না পারলে এক বছর পেছনে পড়ে যাব।

রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে আসা মামুন আহমেদ বলেন, ‘ঢাকায় চাকরি করি। সকালে অটোরিকশায় কোচ স্ট্যান্ডে আসছি। এসে দেখি সব বাস কাউন্টার বন্ধ। মডার্ন মোড়ে বাসের খোঁজে এসেও কোনো গাড়ি পেলাম না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ছুটি আজ শেষ। কাল অফিস করতে হবে। যেকোনোভাবেই সময়মতো যেতে না পারলে চাকরি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে।’

রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সদস্য শাহিনুর রহমান বলছেন, মহাসড়কে নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আইন করেছে। কিন্তু রংপুরের মহাসড়কগুলোতে এখনও নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। এ জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের জন্য কয়েকটি সংগঠন মিলে সভা করে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর থেকে শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুরের সব রুটে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।

তিনি আরও দাবি করে বলেন, রংপুর পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা এ ধর্মঘট বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো মানা না হলে প্রয়োজনে আরও সময় বাড়তে পারে। তাছাড়া পরিবহনের শ্রমিকরাও এ ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে পরিবহন বন্ধ রেখেছে।

রংপুর জেলার এই পরিবহণ ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধাতেও। জেলার অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে যানবাহন চললেও রংপুর বা রংপুরের ওপর দিয়ে অন্য কোন জেলায় যেতে পারছে না।