ঢাকা ০৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নরসিংদী কলাচাষিদের মাথায় হাত

সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে নরসিংদী জেলায় প্রায় কয়েক লক্ষাধিক কলাগাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে করে বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কয়েক শতাধিক কলাচাষি। নরসিংদীতে যে পরিমাণ কলাবাগান নষ্ট হয়েছে এতে করে কয়েক কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

দেখাযায় নরসিংদীর শিলমান্দি, আসমান্দির চর, শেখেরচর, পাঁচদোনা, মেহেরপাড়া, ভাটপাড়া, ভেলানগর, কামারচর, কারারচর, মাহমুদপুর ও দক্ষিণ কংসাদী এলাকা ঘুরে দেখা যায়- ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এসব এলাকার কয়েক শতাধিক কলা বাগানের লক্ষাধিক কলাগাছ ভেঙ্গে পুরো বাগান লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছে। যতদূর চোখ যায় দেখা যায় হাজার হাজার কলাগাছ ছড়িসহ (কলাসহ) মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে আছে।

কবিরাজপুরের কলাচাষি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ৪ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। গতকালের ঝড়ে আমার বাগানের প্রায় এক হাজার পাঁচশ কলাগাছ ধরন্ত ছড়িসহ পড়ে গেছে। যার ফলে আমার ৫/৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আসমান্দির চরের মো. কবির হোসেন বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। কিছু কলাগাছে ছড়ি বের হয়েছে, কিছু গাছে বের হবে এমন অবস্থা। গতকালের ঝড়ে আমার সব গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে করে আমার প্রায় আট লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে আমি এ পর্যন্ত এসেছি। কলা বিক্রির পর তাদের পাওনা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু ঝড়ে আমার সব শেষ করে দিয়েছে। এখন আমি কিভাবে মানুষের দেনা পরিশোধ করব তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছি না।

তার দাবি, এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কিভাবে চলব ভেবে পাচ্ছি না। এ দুঃসময়ে আমিসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কিছু ঋণ প্রদান করে পুনরায় চাষাবাদের সুযোগ করে দিতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই।

নরসিংদী সদরের কলা চাষের গোড়াপত্তনকারী মৃত আক্কাছ আলীর ছেলে হাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, আর সর্বোচ্চ একমাস পর থেকেই কলার পাইকারি ক্রেতারা আমাদের অগ্রিম টাকা দেওয়া শুরু করতেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে ঝড়ো হাওয়া আমাদের সেই আশায় গুড়ে বালি দিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার পিতার হাত ধরেই আমাদের কলা চাষের সূচনা হয়। আমরা জাত কলাচাষি। কলা চাষের মাধ্যমেই আমরা আমাদের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। আমাদের এ অপূরণীয় ক্ষতি কিভাবে সামাল দিব তা ভেবে পাচ্ছি না।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মাহবুবুর রশিদ বলেন, আমরা সমস্ত দিন জেলার বিভিন্ন স্থানের ক্ষতিগ্রস্ত বাগান গুলো ঘুরে দেখেছি। আরও অনেক বাগান দেখা বাকি আছে। সেগুলো ও পর্যায়ক্রমে দেখা হবে। জেলায় কি পরিমাণ বাগান ও কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সঠিকভাবে হিসেব না করে বলা সম্ভব নয়। সঠিক তথ্য নিশ্চিত হয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হবে।

ট্যাগস

নরসিংদী কলাচাষিদের মাথায় হাত

আপডেট সময় ১২:৩৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ অক্টোবর ২০২২

সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে নরসিংদী জেলায় প্রায় কয়েক লক্ষাধিক কলাগাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে করে বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কয়েক শতাধিক কলাচাষি। নরসিংদীতে যে পরিমাণ কলাবাগান নষ্ট হয়েছে এতে করে কয়েক কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

দেখাযায় নরসিংদীর শিলমান্দি, আসমান্দির চর, শেখেরচর, পাঁচদোনা, মেহেরপাড়া, ভাটপাড়া, ভেলানগর, কামারচর, কারারচর, মাহমুদপুর ও দক্ষিণ কংসাদী এলাকা ঘুরে দেখা যায়- ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এসব এলাকার কয়েক শতাধিক কলা বাগানের লক্ষাধিক কলাগাছ ভেঙ্গে পুরো বাগান লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছে। যতদূর চোখ যায় দেখা যায় হাজার হাজার কলাগাছ ছড়িসহ (কলাসহ) মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে আছে।

কবিরাজপুরের কলাচাষি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ৪ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। গতকালের ঝড়ে আমার বাগানের প্রায় এক হাজার পাঁচশ কলাগাছ ধরন্ত ছড়িসহ পড়ে গেছে। যার ফলে আমার ৫/৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আসমান্দির চরের মো. কবির হোসেন বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। কিছু কলাগাছে ছড়ি বের হয়েছে, কিছু গাছে বের হবে এমন অবস্থা। গতকালের ঝড়ে আমার সব গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে করে আমার প্রায় আট লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে আমি এ পর্যন্ত এসেছি। কলা বিক্রির পর তাদের পাওনা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু ঝড়ে আমার সব শেষ করে দিয়েছে। এখন আমি কিভাবে মানুষের দেনা পরিশোধ করব তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছি না।

তার দাবি, এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কিভাবে চলব ভেবে পাচ্ছি না। এ দুঃসময়ে আমিসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কিছু ঋণ প্রদান করে পুনরায় চাষাবাদের সুযোগ করে দিতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই।

নরসিংদী সদরের কলা চাষের গোড়াপত্তনকারী মৃত আক্কাছ আলীর ছেলে হাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, আর সর্বোচ্চ একমাস পর থেকেই কলার পাইকারি ক্রেতারা আমাদের অগ্রিম টাকা দেওয়া শুরু করতেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে ঝড়ো হাওয়া আমাদের সেই আশায় গুড়ে বালি দিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার পিতার হাত ধরেই আমাদের কলা চাষের সূচনা হয়। আমরা জাত কলাচাষি। কলা চাষের মাধ্যমেই আমরা আমাদের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। আমাদের এ অপূরণীয় ক্ষতি কিভাবে সামাল দিব তা ভেবে পাচ্ছি না।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মাহবুবুর রশিদ বলেন, আমরা সমস্ত দিন জেলার বিভিন্ন স্থানের ক্ষতিগ্রস্ত বাগান গুলো ঘুরে দেখেছি। আরও অনেক বাগান দেখা বাকি আছে। সেগুলো ও পর্যায়ক্রমে দেখা হবে। জেলায় কি পরিমাণ বাগান ও কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সঠিকভাবে হিসেব না করে বলা সম্ভব নয়। সঠিক তথ্য নিশ্চিত হয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হবে।