ঢাকা ০৮:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন: উপদেষ্টা নাহিদ Logo ঈদ ছাড়াও সিনেমা সুপারহিট হয়: শাকিব খান Logo যুক্তরাজ্যে গেলেই গ্রেপ্তার হবেন নেতানিয়াহু! Logo নওগাঁ ছাত্র -জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা Logo নির্বাচন দ্রুত হওয়া প্রয়োজন, নয়তো ষড়যন্ত্র বাড়বে: তারেক রহমান Logo আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি Logo ইউক্রেনের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্ভাষণ জানালেন ড. ইউনূস Logo সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার Logo সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন নারী খেলোয়াড়কে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা

চাকরির আশ্বাসে নারীপাচার রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টারঃ    উচ্চ বেতনে বিভিন্ন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নারীপাচার ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবপাচার আইনের মামলায় কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আবুল হোসেন (৫৪) ও তার সহযোগী আলেয়া বেগমকে (৫০) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় পল্টন থানায় করা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

পরে সেই আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরার আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে বিচারক শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেন।

সম্প্রতি কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার (৭ আগস্ট) রাতে রাজধানীর পল্টন থানার সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্সের ষষ্ঠ তলার কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে অভিযান চালিয়ে আবুল হোসেন ও আলেয়া বেগমকে গ্রেফতার করে র্যাব। অভিযানে বিদেশে পাঠানোর জন্য নিজেদের জিম্মায় রাখা তিন নারী ভুক্তভোগীসহ ৩১টি পাসপোর্ট, ডকুমেন্ট ২২ পাতা, ২টি মোবাইল, ৩টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানান, দেশে মানবপাচার চক্রের টার্গেটে পরিণত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র সহজ-সরল মানুষ। তাদের লোভনীয় বেতনে চাকরিসহ সৌদি আরবে বিনামূল্যে হজ পালন করার প্রলোভন দেখানো হতো। কিন্তু বিদেশে নিয়ে বিভিন্ন অবৈধ কাজে বাধ্য করাসহ নির্যাতন চালানো হতো তাদের ওপর।

গ্রেফতার আবুল হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বৈধ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড রিক্রুটিংয়ের আড়ালে নারীপাচার ও নির্যাতনের মতো অপকর্ম করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। আবুল হোসেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান। এসব কর্মকাণ্ডে তার অন্যতম সহযোগী আলেয়া বেগম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে অসংখ্য দালাল।

দালালদের মাধ্যমে চক্রটি মূলত সমাজের বেকার, অল্পশিক্ষিত, অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবারগুলোর বিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে বেশি বেতনে চাকরি, বিমানে ওঠার অভিজ্ঞতা, রাজকীয় থাকা-খাওয়ার সুবিধা, স্মার্টফোন দেওয়া এবং সৌদিতে হজ করাসহ ধর্মভিত্তিক লোভনীয় চাকরি প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠাতো। বিদেশে নিয়ে প্রথমে ভুক্তভোগীদের জানালাবিহীন কক্ষে আটকে রাখতো এবং দু-তিনদিন পর বিভিন্ন জনের বাসায় পাঠানো হতো।

বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর তাদের দিয়ে সব ধরনের কাজ করানো হতো। কিন্তু ঠিকমতো খাবার খেতে দেওয়া হতো না। অকারণে মারধর ও অমানবিক নির্যাতন করা হতো। এমনকি বৈদ্যুতিক শকও দেওয়া হতো।

চক্রের অন্যতম দালাল হিসেবে কাজ করা আলেয়া বেগম আগে পল্টন এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক সংগ্রহের কাজ করেছেন। ২০২১ সাল থেকে আবুল হোসেনের কনকর্ড রিক্রুটিং এজেন্সিতে শ্রমিক সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। বিদেশে পাঠানোর আগে এই শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ও বিভিন্ন সাদা কাগজে সই নেওয়া হতো বলেও জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

ট্যাগস

বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন: উপদেষ্টা নাহিদ

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

চাকরির আশ্বাসে নারীপাচার রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক কারাগারে

আপডেট সময় ০৫:১৫:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০২২

স্টাফ রিপোর্টারঃ    উচ্চ বেতনে বিভিন্ন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নারীপাচার ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবপাচার আইনের মামলায় কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আবুল হোসেন (৫৪) ও তার সহযোগী আলেয়া বেগমকে (৫০) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় পল্টন থানায় করা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

পরে সেই আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরার আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে বিচারক শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেন।

সম্প্রতি কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার (৭ আগস্ট) রাতে রাজধানীর পল্টন থানার সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্সের ষষ্ঠ তলার কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে অভিযান চালিয়ে আবুল হোসেন ও আলেয়া বেগমকে গ্রেফতার করে র্যাব। অভিযানে বিদেশে পাঠানোর জন্য নিজেদের জিম্মায় রাখা তিন নারী ভুক্তভোগীসহ ৩১টি পাসপোর্ট, ডকুমেন্ট ২২ পাতা, ২টি মোবাইল, ৩টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানান, দেশে মানবপাচার চক্রের টার্গেটে পরিণত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র সহজ-সরল মানুষ। তাদের লোভনীয় বেতনে চাকরিসহ সৌদি আরবে বিনামূল্যে হজ পালন করার প্রলোভন দেখানো হতো। কিন্তু বিদেশে নিয়ে বিভিন্ন অবৈধ কাজে বাধ্য করাসহ নির্যাতন চালানো হতো তাদের ওপর।

গ্রেফতার আবুল হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বৈধ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড রিক্রুটিংয়ের আড়ালে নারীপাচার ও নির্যাতনের মতো অপকর্ম করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। আবুল হোসেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান। এসব কর্মকাণ্ডে তার অন্যতম সহযোগী আলেয়া বেগম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে অসংখ্য দালাল।

দালালদের মাধ্যমে চক্রটি মূলত সমাজের বেকার, অল্পশিক্ষিত, অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবারগুলোর বিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে বেশি বেতনে চাকরি, বিমানে ওঠার অভিজ্ঞতা, রাজকীয় থাকা-খাওয়ার সুবিধা, স্মার্টফোন দেওয়া এবং সৌদিতে হজ করাসহ ধর্মভিত্তিক লোভনীয় চাকরি প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠাতো। বিদেশে নিয়ে প্রথমে ভুক্তভোগীদের জানালাবিহীন কক্ষে আটকে রাখতো এবং দু-তিনদিন পর বিভিন্ন জনের বাসায় পাঠানো হতো।

বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর তাদের দিয়ে সব ধরনের কাজ করানো হতো। কিন্তু ঠিকমতো খাবার খেতে দেওয়া হতো না। অকারণে মারধর ও অমানবিক নির্যাতন করা হতো। এমনকি বৈদ্যুতিক শকও দেওয়া হতো।

চক্রের অন্যতম দালাল হিসেবে কাজ করা আলেয়া বেগম আগে পল্টন এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক সংগ্রহের কাজ করেছেন। ২০২১ সাল থেকে আবুল হোসেনের কনকর্ড রিক্রুটিং এজেন্সিতে শ্রমিক সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। বিদেশে পাঠানোর আগে এই শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ও বিভিন্ন সাদা কাগজে সই নেওয়া হতো বলেও জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।