আনোয়ার হোসেন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
দীর্ঘ ৬ বছর পর কুড়িগ্রামে জঙ্গি হামলায় নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা
হোসেন আলী হত্যা মামলার রায় ঘোষনা করেছে আদালত।রায়ে ৬
জেএমবি সদস্যদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে
আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান এ রায় দেন।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন পাবলিক প্রসিকিউটর
(পিপি) এস.এম আব্রাহাম লিংকন এবং আসামি পক্ষে লিগ্যাল এইড
নিয়োজিত অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবীর।
মামলার ৭ আসামীর মধ্যে ৫ আসামি রাজীব গান্ধী, রিয়াজুল ইসলাম
ওরফে মেহেদী, ফিরোজ হাসান ওরফে মোখলেছ, মাহাবুব হাসান মিলন ও
আবু নাছির ওরফে রুবেলকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে
হাজির করা হয়।
এছাড়া আসামি গোলাম রব্বানী পলাতক রয়েছে এবং মামলা চলাকালীন
সময়ে আর এক আসামি সাদ্দাম হোসেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
সাথে ‘বন্দুক যুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি
দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট
আব্রাহাম লিংকন জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা আত্মস্বীকৃত জেএমবি সদস্য। হোসেন
আলী হত্যার মধ্যদিয়ে তারা দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির
চেষ্টা করেছিল এবং দেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর পায়তারা
করেছিল। হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড ও বিস্ফোরক মামলায় কারাদন্ড দিয়েছে এ
আদালত।
এদিকে, রায় ঘোষণায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা
হোসেন আলীর একমাত্র ছেলে ও মামলার বাদী রুহুল আমিন আজাদ। তিনি
বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক বছর পর হলেও মামলার রায় ঘোষণায় আমরা খুশি।
আমরা চাই দ্রুত এ রায় কার্যকর করা হোক।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ সকাল ৭টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলা
শহরের গড়ের পাড় এলাকায় প্রাতঃ ভ্রমনে বের হয়েছিলেন মুসলিম থেকে
খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী। ওত পেতে
থাকা জঙ্গিরা এসময় তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। পরে
জঙ্গিরা ভিতিকর অবস্থা তৈরী করতে বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরনঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের ছেলে রাহুল আমিন
আজাদ বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে
দুটি মামলা করেন।
একই বছরের ৫ নভেম্বর মামলা গুলোর অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর আদালতে মামলাগুলোর অভিযোগ গঠন করা
হয়। মামলার মোট ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।