স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকাঃ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় নিহত নাহিদ হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ঢাকা কলেজের পাঁচ ছাত্রকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তাঁদের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
রিমান্ডে নেওয়া পাঁচ ছাত্র হলেন ঢাকা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুল কাইয়ুম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদ এরফান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র জুনাইদ বুগদাদী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র পলাশ মিয়া ও বাংলা বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফয়সাল ইসলাম।
দুপুরের পর আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মো. তারিকুল আলম জুয়েল। তাঁদের মহানগর হাকিম শান্তা আক্তারের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের পক্ষে রিমান্ডের আবেদন বাতিলের দরখাস্ত দেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, নাহিদ হত্যার সঙ্গে এই আসামিরা জড়িত রয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং পারিপার্শ্বিক ঘটনা যাচাই-বাছাই শেষে এই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই আসামিদের সঙ্গে আরও কারা জড়িত রয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করার জন্য তাঁদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
গত ২০ এপ্রিল নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করেন।
নাহিদ একটি কুরিয়ার সার্ভিসে ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন গত ১৯ এপ্রিল কামরাঙ্গীরচরে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হন নাহিদ। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান।
এর আগে ১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের মধ্যে মারা যান নাহিদ ও মুরসালিন নামের একজন।