স্টাফ রিপোর্টার: শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য কলেজছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণের মামলায় জাজিরা পৌরসভার সাবেক মেয়র ইউনুছ ব্যাপারীর ছেলে মাসুদ ব্যাপারীকে (৩১) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ী ছয় মাসের বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আ. ছালাম খান এ রায় দেন। এ সময় আদালতের এজলাসে আসামি উপস্থিত ছিলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান রোকন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি মাসুদ ব্যাপারী জাজিরা পৌরসভার সাবেক মেয়র ইউনুছ ব্যাপারীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে এক কলেজছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ২০১৯ সালের ৩০ জুন জাজিরা থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রী।
আদালত সূত্র জানায়, ওই মামলায় ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মাসুদ ব্যাপারী ও শরীফ সরদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। আদালত ১০ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেন। ১৩ জন সাক্ষী এবং ৮ জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আজ বিচারক মাসুদ ব্যাপারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে শরীফ সরদারকে বেকসুর খালাস দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২০১৯ সালের ২৯ জুন রাতে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হন। ওই দিন বিকেলে মাসুদ তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য কলেজছাত্রীকে বাড়িতে আসতে বলেন। ওই মেয়ে কাজ শেষ করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাসুদের বাড়িতে যান। সেখানে মাসুদের পরিবারের কাউকে না দেখে ওই ছাত্রী ফিরে আসার চেষ্টা করেন। তখন মাসুদ তাকে ঘরে আটকে ধর্ষণ করেন। পরে মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
মেয়েটি মাসুদের বাড়ি থেকে বের হয়ে চিৎকার করলে ওই মহল্লার কয়েকজন নারী তাকে উদ্ধার করেন। পরের দিন জাজিরা থানায় মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রী। ১ জুলাই আদালতের মাধ্যমে মাসুদ ব্যাপারীকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, শরীফ সরদারকে বেকসুর খালাস দিয়েছে ও মাসুদ ব্যাপারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন, এতে আমি খুশি হতে পারিনি। আমি তাদের ফাঁসি চাই।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. কামরুজ্জামান (নজরুল) বলেন, আসামিপক্ষ সংশ্লিষ্ট মামলার রায়ে সংক্ষুব্ধ ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। রায়ের বিপক্ষে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।