বিনোদন ডেস্ক: রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় আলোচিত প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজ ও তার সহযোগী সবুজ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। পাশাপাশি মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন।
অভিযোগপত্রে রাজের সহযোগী সবুজ আলীকেও আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে ঝন্টু মিয়ার পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে আপাতত মামলার থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয়েছে ১৮ জনকে। সবুজ আলী রাজের অফিসের পিয়ন ছিলেন।
অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন উল্লেখ করেন, রাজ সরকারি বাংলা কলেজ থেকে ১৯৯৩ সালে বিএ পাস করেন। এরপর তিনি শুরু করেন স্টক লটের ব্যবসা। পরে ওয়াসার ঠিকাদার হিসেবেও কাজ করেন।
২০১৪ সাল থেকে নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনে বিনিয়োগ শুরু করেন তিনি। পরে ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ নামে একটি প্রযোজক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এসময় তিনি বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে মাদকসেবন ও বেচাকেনা করতেন। মাদক কারবারের কাজে তার নিজস্ব দুটি জিপ গাড়ি ব্যবহার করতেন।
রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর ৩৬ (১) এর ২৪ (খ)/১০(ক)/৩৮ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে মাদক কারবারের কাজে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করায় সবুজ আলীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর ৩৬ (১) এর ২৪ (খ)/১০(ক)/৩৮/৪১ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এর আগে ৪ আগস্ট বিকেলে চিত্রনায়িকা পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে ওই দিন রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে র্যাব সদরদপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করার কথা জানায় র্যাব।
একই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে নজরুল ইসলাম রাজের বনানীর বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব।পরীমনিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে রাজকে রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে আটক করে নিয়ে যান র্যাব সদস্যরা। রাজের বাসা থেকেও মাদক ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব।
এরপর ৫ আগস্ট পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে র্যাব বাদী হয়ে একটি মামলা করে। আর রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। বর্তমানে রাজ কারাগারে রয়েছেন। আর জামিনে আছেন পরীমনি।
এর আগে মাদক মামলায় মোট ছয়দিন আর পর্নোগ্রাফি মামলায় চারদিনের রিমান্ডে ছিলেন রাজ। সর্বশেষ ১৮ আগস্ট রাজকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সিআইডি। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।