নওগাঁ প্রতিনিধি :নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার শহীদ আব্দুল জব্বার মঙ্গলবাড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও সহকারী প্রধান শিক্ষিকা সুমাইয়া উম্মে শামসির বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০১ সালের ৩ জানুয়ারি শহীদ আব্দুল জব্বার মঙ্গলবাড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আবুল কালাম আজাদ। এর এক বছর পর সহকারী প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন সুমাইয়া উম্মে শামসি। এরপর থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ।
অভিযোগ রয়েছে, আবুল কালাম আজাদ প্রধান শিক্ষক হওয়ার আগে জয়পুরহাট জেলার গ্রামীণ ব্যাংকের দোগাছী শাখায় মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। সে সময় নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জয়পুরহাটের একটা বাসায় ওই শিক্ষিকার সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার সময় স্থানীয়রা তাদের আটক করেন। গত বছরের নভেম্বর মাসে তার নিজ বাসায় এবং এপ্রিল মাসে রাজশাহীতে একটি প্রশিক্ষণে গিয়ে এ দুই শিক্ষক অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে এসে সময় কাটান। গত ২০ মার্চ তারা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হলে স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। পরে তাদের অবরুদ্ধ করা হলে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে মুক্ত হন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৬ মে জয়পুরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ছয়জনকে আসামি করে চাঁদাবাজি মামলা করেন প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। মামলা নম্বর ৫৩পি/২১।
মামলার আসামিরা হলেন-বাংলা টিভির জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি রেজাউল করিম রেজা, শিক্ষক খাজা ময়েন উদ্দিন, প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস, শিক্ষক আশরাফুল আলম, শিক্ষক আবুল হাসনাত মুকুল এবং শিক্ষক ইকবাল হোসেন। কিন্তু ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) মেম্বার ও অভিভাবক আতোয়ার রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন থেকে স্কুল বন্ধ। কিন্তু তারা দুজন প্রতিদিন স্কুলে আসেন। তারা অনৈতিক কাজে ধরা পড়লে আমরা যারা সাক্ষী দিয়েছি তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে।
তারা দুজনে কেউ বাদী হন আবার কেউ সাক্ষী হন। এভাবে তারা পর্যায়ক্রমে মামলা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি খাজা ময়েন উদ্দিন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের নারী কেলেঙ্কারির বিষয়টি এলাকার সবাই অবগত। গত ২০ মার্চ তারা বিদ্যালয়ের কক্ষে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হলে স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। পরে তাদের অবরুদ্ধ করলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া এসে তাদের মুক্ত করেন।’