ঢাকা ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন: উপদেষ্টা নাহিদ Logo ঈদ ছাড়াও সিনেমা সুপারহিট হয়: শাকিব খান Logo যুক্তরাজ্যে গেলেই গ্রেপ্তার হবেন নেতানিয়াহু! Logo নওগাঁ ছাত্র -জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা Logo নির্বাচন দ্রুত হওয়া প্রয়োজন, নয়তো ষড়যন্ত্র বাড়বে: তারেক রহমান Logo আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি Logo ইউক্রেনের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্ভাষণ জানালেন ড. ইউনূস Logo সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার Logo সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন নারী খেলোয়াড়কে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা

নিয়ামতপুরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

নিয়ামতপুর, পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ এবারই প্রথম নিজে আবাদ করলাম, কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেলো। ৫ বিঘা আবাদ করেছিলাম। খেয়ে, না খেয়ে টাকা কর্জ করে আবাদ করেছিলাম।

ধানও খুব ভালো হয়েছিলো। এলাকার সেরা ধান। আর কয়েকদিন পরেই কাটা হতো ধান। স্বপ্ন ছিলো কর্জ পরিশোধ করে নিজেকে গুছিয়ে নিবো। কিন্তু কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো।

আমি এখন কর্জ পরিশোধ করবো কি করে? সারা বছর খাবো কি? আমি চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। কান্না বিজড়িত কন্ঠে কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলছিলেন নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের আক্তার হোসেন শেখের ছেলে আপেল মাহমুদ শেখ। মঙ্গলবার ১১ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে আকস্মিকভাবে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। শুরুতে টানা ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বৃষ্টির পর শিলাবৃষ্টির ও কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়।

এতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পানিশাইল, গলাইকুড়া, কানইল, মালিয়াখৈল, রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর মানপুর, পানিহারা, শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া, চকরামনগর, রামকুড়া, লক্ষিতাড়া, ভাদরন্ড, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর, বাহাদুরপুর, ঘোষকুড়া, বরিয়া, ছাতমাসহ বেশকিছু এলাকার বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে ধান ঝড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন কৃষক।
সরেজমিনে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মাঠের পাকা ধান ঝড়ে যায়।
একই সঙ্গে আমসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। শিলাবৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির পাকা ধান মাটিতে লুটে পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক মনছের আলী বলেন, এমনিতেই কয়েক বছর ধরে নানা কারণে ধান আবাদে লোকসান লেগেই আছে। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হলো তা হয়তো আর পোষাণো সম্ভব হবে না। আমার প্রায় ৬ বিঘা জমির ধান ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে আমার প্রায় দুই থেকে আড়াই বিঘা জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। বাকী ৪ বিঘা জমির ধান বিঘাপ্রতি আনুমানিক চার-পাঁচ মণ হারে ধান হতে পারে।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমীর আব্দুল্লাহ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মাঠে প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। ১০ ভাগ বাকী রয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ধান উৎপাদনে সামগ্রীকভাবে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি উপজেলায় ১শ ১০ হেঃ জমির ক্ষতি হয়েছে। পরবর্তীতে জরিপ করে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে এ নিয়ে কাজ করছে।

 

 

ট্যাগস

বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন: উপদেষ্টা নাহিদ

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

নিয়ামতপুরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

আপডেট সময় ১২:১৯:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মে ২০২১

নিয়ামতপুর, পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ এবারই প্রথম নিজে আবাদ করলাম, কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেলো। ৫ বিঘা আবাদ করেছিলাম। খেয়ে, না খেয়ে টাকা কর্জ করে আবাদ করেছিলাম।

ধানও খুব ভালো হয়েছিলো। এলাকার সেরা ধান। আর কয়েকদিন পরেই কাটা হতো ধান। স্বপ্ন ছিলো কর্জ পরিশোধ করে নিজেকে গুছিয়ে নিবো। কিন্তু কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো।

আমি এখন কর্জ পরিশোধ করবো কি করে? সারা বছর খাবো কি? আমি চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। কান্না বিজড়িত কন্ঠে কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলছিলেন নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের আক্তার হোসেন শেখের ছেলে আপেল মাহমুদ শেখ। মঙ্গলবার ১১ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে আকস্মিকভাবে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। শুরুতে টানা ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বৃষ্টির পর শিলাবৃষ্টির ও কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়।

এতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পানিশাইল, গলাইকুড়া, কানইল, মালিয়াখৈল, রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর মানপুর, পানিহারা, শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া, চকরামনগর, রামকুড়া, লক্ষিতাড়া, ভাদরন্ড, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর, বাহাদুরপুর, ঘোষকুড়া, বরিয়া, ছাতমাসহ বেশকিছু এলাকার বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে ধান ঝড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন কৃষক।
সরেজমিনে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মাঠের পাকা ধান ঝড়ে যায়।
একই সঙ্গে আমসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। শিলাবৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির পাকা ধান মাটিতে লুটে পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক মনছের আলী বলেন, এমনিতেই কয়েক বছর ধরে নানা কারণে ধান আবাদে লোকসান লেগেই আছে। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হলো তা হয়তো আর পোষাণো সম্ভব হবে না। আমার প্রায় ৬ বিঘা জমির ধান ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে আমার প্রায় দুই থেকে আড়াই বিঘা জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। বাকী ৪ বিঘা জমির ধান বিঘাপ্রতি আনুমানিক চার-পাঁচ মণ হারে ধান হতে পারে।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমীর আব্দুল্লাহ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মাঠে প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। ১০ ভাগ বাকী রয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ধান উৎপাদনে সামগ্রীকভাবে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি উপজেলায় ১শ ১০ হেঃ জমির ক্ষতি হয়েছে। পরবর্তীতে জরিপ করে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে এ নিয়ে কাজ করছে।