লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১নং উত্তর হামছাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলমকে ইয়াবা সেবনের সময় হাতেনাতে আটক করেছে এলাকাবাসী। কয়েকদিন ধরে রাতে বিদ্যালয়ে এসে নিজ কক্ষে তিনি ইয়াবা সেবন করে আসছিলেন।
বিষয়টি বুঝতে পেরে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে এলাকাবাসী তাকে ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামসহ হাতেনাতে আটক করে। পরে বিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়া শর্তে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ওই শিক্ষককে ছেড়ে দেয়।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদিসহ মাসুদ আলমের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। পরিচালনা কমিটির জরুরি সভা করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সভাপতি ফরিদ উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন ধরে মোটরসাইকেলে এসে প্রধান শিক্ষক মাসুদ রাতে বিদ্যালয়ে নিজ কক্ষে সময় কাটান। বিষয়টি স্থানীয়রা আঁচ করতে পারেন। এ প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে তারা আগথেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিলেন।
রাত প্রায় ৮টার দিকে মাসুদ বিদ্যালয়ে এসে কক্ষে ইয়াবা সেবন করছিল। একপর্যায়ে এলাকাবাসী কক্ষে ঢুকে হাতেনাতে ইয়াবা সেবনকালে তাকে (মাসুদ) আটক করে। কক্ষ থেকে প্লাস্টিকের বোতল ও কর্কসহ ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি দেখা যায়।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়। এ সময় মাসুদ সংশোধিত হয়ে যাবেন এবং এ বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন অভিভাবক জানায়, প্রধান শিক্ষক সম্প্রতি নেশায় জড়িয়ে অসংলগ্ন হয়ে পড়েছেন। এ ধরনের শিক্ষকের কাছে ভালো কিছু আশা করা যায় না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ইয়াবা সেবনের ঘটনাটি কয়েকজন আমাকে জানিয়েছেন। সম্মান রক্ষার্থে আপাতত তাকে ছেড়ে দিতে বলেছি। পরিচালনা কমিটির বৈঠকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বক্তব্য জানতে প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলমকে ফোন দিলে তার স্ত্রী পরিচয় দেওয়া এক নারী ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, মাসুদ ফোন রেখে ঘর থেকে বের হয়ে গেছেন। পরবর্তীতে চেষ্টা করে সে ফোনে আর সংযোগ পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এর আগেই লোকজন শিক্ষককে ছেড়ে দিয়েছে।
উত্তর হামছাদী ইউপি চেয়ারম্যান এমরান হোসেন নান্নু বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে বিস্তারিত জানা নেই। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার ঘোষ বলেন, ঘটনাটি আমাকে কেউ জানায়নি। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।