ক্রীড়া ডেস্ক: ইতিবাচকতার খোঁজ করলে প্রথম ম্যাচের তুলনায় বেশ কিছু উন্নতি হয়তো পেয়ে যাবেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
কিন্তু ম্যাচের ফলের হিসেব করলে বাকি সবকিছুই অনর্থক হয়ে যাবে। কেননা পরাজয়ের ব্যবধান কমলেও সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে পরাজিত দলের নাম সেই ভারতই।
গত শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৬৬ রানে হারের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারত হেরেছে ৫১ রানের ব্যবধানে।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুইটি জিতে সিরিজের শিরোপাও নিশ্চিত করে ফেলেছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। আগামী বুধবার (২ ডিসেম্বর) সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে এ দুই দল।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৩৮৯ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া।
জবাবে কিছুসময়ের জন্য আশা জাগিয়েছিল সফররত ভারত। কিন্তু শেষপর্যন্ত ৩৩৮ রানে থেমেছে তাদের ইনিংস। ম্যাচ হেরেছে ৫১ রানের ব্যবধানে।
রান তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৮ রান যোগ করেন শিখর ধাওয়ান ও মায়াঙ্ক আগারওয়াল। দলীয় ৬০ রানের মধ্যে ফিরে যান দুজনই।
শিখর ৩০ ও মায়াঙ্ক ২৮ রান করেন। তৃতীয় উইকেটে ৯৩ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। দলীয় ১৫৩ রানের সময় শ্রেয়াস আউট হন ৩৮ রান করে।
এরপর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে এগুতে থাকেন কোহলি। এ দুজনের জুটিতে আসে ৭২ রান। ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ৮৯ রান করে আউট হন কোহলি।
মাত্র ২৩ রানের জন্য পূরণ হয়নি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২ হাজার রান। তবে বিশ্বের অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২২ হাজার রান পূরণ করেছেন কোহলি।
অধিনায়কের বিদায়ের পর আর ভারতের সম্ভাবনা তেমন বাকি ছিল না। তবু লোকেশ রাহুল (৬৬ বলে ৭৬), হার্দিক পান্ডিয়া (৩১ বলে ২৮), রবীন্দ্র জাদেজারা (১১ বলে ২৪) শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। শেষপর্যন্ত ৯ উইকেটে ৩৩৮ রান করতে সক্ষম হয় ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন প্যাট কামিনস। এছাড়া জস হ্যাজলউড ও অ্যাডাম জাম্পা নেন ২টি করে উইকেট। যার সুবাদে ভারতের বিপক্ষে সপ্তম ওয়ানডে সিরিজ জেতার স্বাদ পায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচেও বিরাট কোহলির বিপক্ষে টস জিতে নেন অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
সিডনির উইকেটে যেন আঠা লাগিয়ে খেলতে নামেন ব্যাটসম্যানরা। উদ্বোধনী উইকেটেই ডেভিড ওয়ার্নার আর অ্যারোন ফিঞ্চ মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করে দেন ১৪২ রান।
এ সময় মোহাম্মদ শামির বলে ৬৯ বলে ৬০ রান করে বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ফিঞ্চ। ৬টি বাউন্ডারির সঙ্গে তিনি ছক্কার মার মারেন ১টি। ডেভিড ওয়ার্নারের জন্য আক্ষেপ।
প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচে ঝড়ো ব্যাটিং করে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। তবে, আজ সংখ্যাটাকে তিন অংকের ঘরে নিতে পারেননি।
৭৭ বলে ৮৩ রান করে রান আউট হয়ে যান তিনি। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কার মার মারেন ৩টি। ওয়ার্নার আর ফিঞ্চ ফিরে যান ১৫৬ রানের মাথায়।
এরপর আরও একটি বড় জুটি গড়ে তোলেন স্টিভেন স্মিথ এবং মার্নাস ল্যাবুশানে। এ দু’জনের ব্যাট থেকে গড়ে ওঠে ১৩৬ রানের অনবদ্য জুটি।
দলীয় ২৯২ রানের মাথায় আউট হয়ে যান স্টিভেন স্মিথ। এর আগে ৬২ বলে ঝড়ো সেঞ্চুরি করেন তিনি। ৬৪ বল খেলে তিনি আউট হন ১০৪ রানে।
১৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে তার ইনিংসে ছক্কার মার ছিল ২টি। মার্নাস ল্যাবুশানে করেন ৬১ বলে ৭০ রান। ৫টি বাউন্ডারির মার ছিল তার ইনিংসে।
শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ছিলেন আরও বেশি বিধ্বংসী। ২৯ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত থেকে যান তিনি। ৪টি করে বাউন্ডারি এবং ছক্কার মার মারেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৮৯ রান। ভারতের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি, জসপ্রিত বুমরাহ এবং হার্দিক পান্ডিয়া।