ক্রীড়া ডেস্কঃ ‘আলো অভিনন্দন। তুমি তো দারুণ দিনে বাবা হলে। বাবা দিবসে বাবা হওয়ার আনন্দটা তো অন্যরকম’- দেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তারের ফোন পেয়ে দেশের অন্যতম সেরা হার্ডলার মো. আলমগীর হোসেন আলোর মনে পড়লো আজ বাবা দিবস।
দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আলমগীর হোসেন আলো কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন। তার সন্তানসম্ভাবনা স্ত্রী ইরানী সুলতানাকে ১০ জুন খুলনার তিতুমীর নৌবাহিনী হাসপাতালে ভর্তি করার পর টেনশনে সবকিছু ভুলে গিয়েছিলেন আলো।
‘আজ যে বাবা দিবস সেটা আমার মনেই ছিল না। গত ১১ দিন ধরে আমি টেনশনে। ইরানীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর একদিনও যেতে পারিনি।
কারণ, করোনাভাইরাসের কারণে হাসপাতালে প্রবেশে কড়াকড়ি। শুধু আমার শ্বাশুড়ি আছেন ওখানে। আমি প্রতিদিন হাসপাতাল থেকে বেশ দূরে একটি ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে ইরানীকে ফোন দিতাম।
সে জানালার পাশে এসে দাঁড়াত। আমরা ফোনে কথা বলতাম আর দেখতাম’- বলছিলেন আলমগীর হোসেন আলো।
বাবা-মায়ের পছন্দ করা খুলনার ডুমুরিয়ার মেয়ে ইরানীকে আলো বিয়ে করেছেন ২০১৮ সালে। স্ত্রী ইরানী সুলতানা স্নাতকে পড়েন খুলনার ফুলতলা মহিলা ডিগ্রি কলেজে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এ অ্যাথলেট ক্যারিয়ারে ১৪টি স্বর্ণ পদক জিতেছেন ৪০০ মিটার হার্ডলসে। এর মধ্যে জাতীয় ও সামার মিটে ১০ বার এবং আন্তঃসার্ভিস প্রতিযোগিতায় ৪ বার সেরা হয়েছেন খুলনার এ অ্যাথলেট।
কন্যা সন্তানের বাবা হওয়ায় বেশি খুশি আলো, ‘দুটি কারণে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। প্রথমত কন্যা সন্তান দেয়ায় এবং দ্বিতীয়ত বাবা দিবসে বাবা হওয়ায়।
আমি খুব করে চেয়েছিলাম যেন কন্যা সন্তানই হয় আমার। পুরো রমজানে নামাজের পর আল্লার কাছে কন্যা সন্তান চেয়েছি। তিনি আমার মনে আশা পূরণ করেছেন।’
সবাইতে পুত্র সন্তান হলে খুশি হয়। আপনি কেন কন্যা সন্তান পাওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করেছেন?‘আসলে সবাই পুত্র সন্তান চায়।
অনেকে মেয়ে হলে মন খারাপ করে। আমি আমার মাকে অনেক ভালোবাসি, আমার স্ত্রীকেও অনেক ভালোবাসি। তাই আমার চাওয়া ছিল একটা কন্যা সন্তান। আমার মনবাসনা পূরণ করেছেন আল্লাহ।
এক মাসের ছুটি নিয়ে খুলনা এসেছি, ২০ দিন হয়ে গেছে। আর ১০ দিন পর ফিরে যাব ঢাকায়। তবে ছুটি বাড়ানোর একটা আবেদন করব।
যদি পাই তাহলে মেয়ের সঙ্গে আরও কিছুদিন সময় কাটাতে পারব। মেয়ে ও মা এখন ভালো আছে। আমি সবার কাছে দোয়া চাই’- খুলনা থেকে বলছিলেন মো. আলমগীর হোসেন আলো।