ফেনী প্রতিনিধিঃ জেঠা শ্বশুরের পাশবিকতার শিকার হয়ে গর্ভবতী, মামলা দিয়ে উল্টো জেল খাটা, সন্তান প্রসব, তিন মাস পাঁচ দিন অপহৃত থাকার ঘটনার বর্বরোচিত বর্ণনা দিয়েছেন সোনাগাজীর নির্যাতিতা এক গৃহবধূ।
রবিবার (২২ মার্চ) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলামের আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেঠা শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করায় গত ৯ ডিসেম্বর ফেনীর আদালত পাড়া থেকে অপহরণের শিকার হন জেলার সোনাগাজী উপজেলার ছাড়াইকান্দি এলাকার এক ওমান প্রবাসীর স্ত্রী। গত ১৪ মার্চ সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের পূর্ব দেবীপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রবিবার নির্যাতিতা ওই নারী আদালতকে জানায়, ‘গত বছরের ১৮ জুন ঘরে কেউ না থাকায় তাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন জেঠা শ্বশুর শফি উল্যাহ। পরে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন তিনি গর্ভবতী।’
এ ঘটনায় জেঠা শ্বশুর শফি উল্যাহকে আসামি করে গত ২২ নভেম্বর সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তিনি। মামলার পর হুমকির মুখে ফেনী সদর উপজেলার এলাহিগঞ্জ এলাকার স্বপন নামে এক মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
স্বপনের সঙ্গে জেঠা শ্বশুরের ছেলে রিয়াদের যোগসাজশে ২৬ নভেম্বর অভিযুক্ত শফি উল্যাহ ফেনীর আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। এ সময় আমার থেকে স্বাক্ষর নেওয়া একটি কাগজ আদালতে জমা দেওয়া হয়। আদালত আসামিকে জামিন দিয়ে আমাকে ১৫ দিনের জন্য কারাগারে প্রেরণ করেন।
এরপর কারাগার থেকে বের হলে স্বপন ও রিয়াদ জামিন করিয়েছে বলে দেবিপুর এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যায়। দুই দিন পর ট্রাংক রোডের একটি হাসপাতালে নিয়ে তারা দুজনসহ আরও একজন মিলে আমাকে জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে ও ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করলে সন্তান প্রসব হয়। পরবর্তীকালে ওই বাসায় নিয়ে আটকে রাখে।’
সূত্র আরও জানায়, বিচারক জবানবন্দি রেকর্ড শেষে নির্যাতিতাকে সোনাগাজীর আমলী আদালতের বিচারক ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে প্রেরণ করেন। এখানে ভুক্তভোগীকে অ্যাডভোকেট এম শাহজাহান সাজুর জিম্মায় জামিন প্রদান করেন। একই সঙ্গে আগামী ১৩ এপ্রিল পুলিশ রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন।