বর্তমান সরকারের অধীনে শহরের জীবন যাত্রা যেমন উন্নয়নের আলোতে পরির্বতন হয়েছে তেমনি শহরের পাশাপাশি পরির্বতন হয়েছে গ্রামীন অবকাঠামোগুলো । শহরের মত গ্রামেও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় বেড়েছে শহরের সাথে গ্রামের মানুষের যোগাযোগ । এতে পরির্বতন হচ্ছে গ্রামীন মানুষের জীবন যাত্রা ।
এরই ধারাবাহিকতাই প্রতিবেদনে যেসব গ্রামের কথা বলছি তা হচ্ছে নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি ও দুবলহাটি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর কথা ।
বছরের ৬ মাসই পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। এ কারণে এই এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য নৌকায় চড়ে হাট-বাজারে যেতে হতো। একাধিকবার নৌকাডুবি হয়ে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ইরি মৌসুমে ধানচাষ হলেও পাকা ধান কেটে নিয়ে যেতে হতো নৌকায় করে। এতে খরচ পড়ত অনেক বেশি।
গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা ও কাবিখা) প্রকল্পের স্থানীয় এমপির বরাদ্দ হতে বারামাসা বিলের মধ্যে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করায় পানিবন্দির অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে এ দুই ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষ। এখন তারা চলাচল করতে পারছেন স্বাচ্ছন্দ্যে। স্বল্প খরচে করছেন চাষাবাদ।
শুধু বারমাসা বিলই নয়, এ উপজেলার গুটিয়া, দিঘলী, হাঁসাইগাড়ি, মুনসুর ও পাকুড়িয়া বিলের মধ্য দিয়ে ১০টি নতুন রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। এতে পাল্টে গেছে দুবলহাটি, হাঁসাইগাড়ি, শিকারপুর ও শৈলগাছী ইউনিয়নের এক লাখের বেশি মানুষের জীবনমান। পানিবন্দি অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে ৫০ গ্রামের মানুষ। বেড়েছে শিক্ষার মান। স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাস্তার পাশে গাছ লাগানোসহ অবিলম্বে পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
দুবলহাটি ইউনিয়নের প্রতাবদহ গ্রামের আজিম উদ্দিন ও হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়নের ভীমপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারী খোকন, ফয়সাল ও আব্দুস সামাদ জানান, আমাদের এলাকাটি নিচু হওয়ায় বছরের কয়েক মাস পানিতে তলিয়ে থাকে। চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌকা। রাস্তাটি নির্মাণের আগে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হত। আমাদের বহুল প্রতীক্ষিত এই রাস্তাটি। মরহুম আব্দুল জলিলের স্বপ্ন ছিল এই রাস্তাটি নির্মাণ করা।
তার ছেলে ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন এমপি হয়ে রাস্তাটি তৈরি করেছেন। রাস্তাটি হওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। শিকারপুর ইউনিয়নের সরইল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, গুটিয়ার বিলের এক পাশে আমাদের বিদ্যালয়। বিলের মধ্যে দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষার মানও বেড়েছে।
নওগাঁ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, এ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নের বিল (নিচু) এলাকা। বর্ষাকালে এসব এলাকার প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষ নৌকা ছাড়া বের হতে পারতেন না। স্থানীয় এমপির বরাদ্দ হতে চারি ইউনিয়নে সম্পূর্ণ নতুনভাবে ১৮ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে।
নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের এমপি ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামোর যে উন্নয়ন তা শুরু হয়েছে রাস্তা দিয়ে। আমার নির্বাচনী এলাকার চারটি ইউনিয়নই বিল। শহরের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে কষ্ট করে বিল পাড়ি দিয়ে শহরে কাজে আসতে হতো।
কাজ শেষ করে আবার একইভাবে বাড়ি ফিরতে হতো। বিলের মধ্যে দিয়ে যেসব রাস্তা আগে ছিল না আমরা তা করতে সক্ষম হয়েছি। পাকাকরণের যে দাবিটি রেখেছে, আশা করি আগামীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাকাকরণসহ আমার বাবার যে অসমাপ্ত কাজগুলো আছে তা পূরণ করতে সক্ষম হব।