ঢাকা ০৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি Logo ইউক্রেনের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্ভাষণ জানালেন ড. ইউনূস Logo সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার Logo সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন নারী খেলোয়াড়কে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা Logo আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগ তিশার Logo আমরা সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস Logo নতুন আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পেলেন বাহারুল আলম Logo সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী পালমিরা শহরে ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলায়, নিহত ৩৬, আহত ৫০ Logo ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় চালকদের বিক্ষোভ

গাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণ করবে ‘পালকি’

একটা গাড়ি কে না চায়? স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াতের জন্য অনেকেরই থাকে এই স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এর দাম। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের জন্য গাড়ি কেনা তো আকাশ ছোঁয়ার মতো। কিন্তু এবার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এগিয়ে এসেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘পালকি মটরস লিমিটেড’। তারা এমন একটি গাড়ি তৈরি করেছে যা মাত্র পাঁচ লাখ টাকায় মিলবে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে এটি আসবে বাজারে।

চার সিটের এই গাড়ির বৈশিষ্ট্য এটি বিদ্যুতে চলে, যা পরিবেশবান্ধব। এক চার্জে চলবে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এরইমধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অনুমোদন পেয়েছে গাড়িটি। এর রয়েছে চারটি মডেল। এগুলো হলো সিটিবয় বেসিক, সিটিবয় এলএফপি, সিটিবয় এলএফপি প্লাস ও কেরিবয় বেসিক।

‘পালকি মটরস’র গাড়িগুলোর দাম শুরু পাঁচ লাখ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ নয় লাখ টাকা। ব্যাটারির ক্ষমতা ও কত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে তার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে দাম। রাজধানীর উত্তর বাড্ডার সাঁতারকুলে তৈরি হচ্ছে গাড়িগুলো। পালকি মটরসের প্রথম গাড়ি ‘সিটিবয় বেসিক’ মডেলের জন্য এরইমধ্যে জমা পড়েছে ৬০০ আবেদন। আর ৮০টির বেশি প্রি-অর্ডার করা গাড়ি ডেলিভারি দেওয়া হবে আগামী বছরের (২০২৩ সাল) জানুয়ারিতে।

car-2.jpg

‘সিটিবয় বেসিক’ মডেলের গাড়িটির দাম চার লাখ ৯৯ হাজার টাকা

গাড়িগুলোর প্রি-বুকিং নেওয়া শুরু হয়েছে। বুকিংয়ের চার মাস পর গ্রাহককে দেওয়া হবে গাড়ি। দুই থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে বুকিং দেওয়া যাবে। বাকি টাকা গাড়ি হাতে পাওয়ার পর পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া কিস্তিতেও দেওয়া যাবে টাকা।

কী আছে গাড়িতে

জ্বালানিচালিত গাড়ির মতোই সব সুবিধা আছে পালকির গাড়িতে। যে কোনো বিদ্যুতের সকেটের মাধ্যমে দেওয়া যাবে চার্জ। রিমোট লক, অটোমেটিক জানালা, এয়ার কন্ডিশন, আট ইঞ্চি ডিসপ্লে, ব্লুটুথ, অতিরিক্ত চাকা, হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেকসহ যাত্রীদের আরাম ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রায় সব সুবিধা আছে গাড়িটিতে।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ‘সিটিবয় বেসিক’ মডেলের গাড়ির দাম চার লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এর সর্বোচ্চ গতি ৩৫ কিলোমিটার। ওজন ৫৬০ কেজি। এতে ব্যবহার করা হয়েছে লিড এসিড ব্যাটারি। যা আট ঘণ্টা লাগে চার্জ হতে। এক চার্জে গড়িটি চলবে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

এছাড়া ‘সিটিবয় এলএফপি’ মডেলের গাড়িটির দাম ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা। এতে ব্যবহার হয়েছে লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি। দুই ঘণ্টায় চার্জ হয়ে যায় এটি। এক চার্জে যেতে পারে ১৫০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি ৪৫ কিলোমিটার।

car-2.jpg

‘সিটিবয় এলএফপি প্লাস’ মডেলের গাড়ি এক চার্জে যেতে পারে ১৫০ কিলোমিটার। এ মডেলের গাড়ির সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার। লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি ব্যবহার করা গাড়িটির দাম ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

আর ‘কেরিবয় বেসিক’ মডেলের গাড়িটির দাম ধরা হয়েছে আট লাখ ৯৯ হাজার টাকা। দুই ঘণ্টায় চার্জ হয়ে যায় এটি। যেতে পারে ১৫০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার।

পালকি মোটরসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা আল মোমিন জাগো নিউজকে বলেন, তেলের গাড়িতে খরচ বেশি। ডিজেল বা অকটেনচালিত গাড়িতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ হয় ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। আর সিএনজিতে প্রতি কিলোমিটার খরচ হয় সাড়ে চার টাকা। কিন্তু আমাদের গাড়িতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ হয় মাত্র ৩০-৫৫ পয়সা, এসি চালালেও এই খরচ হয়। যখন আমরা দুটো গাড়ি বানাচ্ছি, একটা গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ স্টকে রাখছি। ঢাকার বাইরে সব জেলায় আমরা প্রত্যেক গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ সহজলভ্য করছি।

তিনি আরও বলেন, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও বডির বড় অংশ চীনের তৈরি। আর ইঞ্জিন আনা হচ্ছে তাইওয়ান থেকে। বাকি খুচরা যন্ত্রাংশের ৪০ শতাংশ বাংলাদেশের তৈরি। ভবিষ্যতে সব খুচরা যন্ত্রাংশ বাংলাদেশেই তৈরি হবে।

ব্যাটারির বিষয়ে মোস্তফা আল মোমিন জানান, লিড এসিড ব্যাটারি প্রত্যেক বছরই পরিবর্তন করা লাগে। কিন্তু এই ব্যাটারিতে পাঁচ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি দিচ্ছে তারা। গাড়িগুলোর মটরে দুই বছর সার্ভিস ওয়ারেন্টি দেওয়া হবে।

প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর আরিফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, জ্বালানি সংকটটা সাময়িক। বিদ্যুতের সমস্যাও দূর হয়েছে। তবে উচ্চমূল্যের জ্বালানিতে গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে পালকির গাড়িগুলো। যারা সিএনজি চালান কিংবা রাইড শেয়ারিং করেন তারা এই গাড়ির মাধ্যমে সহজেই মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।

car-2.jpg

প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা জানান, গত অক্টোবরে যারা প্রি-বুকিং দিয়েছিলেন তাদের গাড়ি দেওয়া হবে আগামী ৩০ জানুয়ারি।

যেভাবে যাত্রা শুরু

বিশ্বজুড়েই বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের জোয়ার ওঠেছে। টেসলা, রিভিয়ান, এনআইও’র মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গত এক দশকে অটোমোবাইল শিল্পে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। টাটা, জাগুয়ারসহ বিশ্বের বড় বড় গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানিও বিদ্যুতচালিত গাড়ি বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে।

পালকি মোটরসের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা আল মোমিন জানান, ২০০৯ সালে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির কথা চিন্তা করেন তিনি। তখন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ওই সময় বৈদ্যুতিক গাড়ির একটি প্রকল্পে কাজের সুযোগ হয় তার।

car-5

মোস্তফা আল মোমিন বলেন, পরিকল্পনা থাকলেও পর্যাপ্ত মূলধন না থাকায় সে সময় বেশিদূর এগোতে পারিনি। পরে বৈদ্যুতিক প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতকোত্তর করতে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই। তবে ইচ্ছা ছিল পড়াশুনা শেষে দেশে আসবো। একটা প্লাটফর্ম করার স্বপ্ন ছিল। পুলিশ স্টেশন ও ডাম্পিংয়ে পড়ে থাকা গাড়ি নিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করি। এরপর ২০২২ সালে পুরোপুরিভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ির কাজে মনোনিবেশ করি।

উদ্যোক্তারা জানান, শুরু থেকেই গাড়ির নাম বাংলায় হোক এমনটা চেয়েছিলেন তারা। এ জন্য বাহনের বিভিন্ন সমার্থক হিসেবে ‘রথ’ ও ‘পালকি’সহ কিছু শব্দ বাছাই করা হয়। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত করা হয় ‘পালকি’ নাম।

ট্যাগস

আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

গাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণ করবে ‘পালকি’

আপডেট সময় ১০:৩০:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

একটা গাড়ি কে না চায়? স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াতের জন্য অনেকেরই থাকে এই স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এর দাম। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের জন্য গাড়ি কেনা তো আকাশ ছোঁয়ার মতো। কিন্তু এবার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এগিয়ে এসেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘পালকি মটরস লিমিটেড’। তারা এমন একটি গাড়ি তৈরি করেছে যা মাত্র পাঁচ লাখ টাকায় মিলবে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে এটি আসবে বাজারে।

চার সিটের এই গাড়ির বৈশিষ্ট্য এটি বিদ্যুতে চলে, যা পরিবেশবান্ধব। এক চার্জে চলবে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এরইমধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অনুমোদন পেয়েছে গাড়িটি। এর রয়েছে চারটি মডেল। এগুলো হলো সিটিবয় বেসিক, সিটিবয় এলএফপি, সিটিবয় এলএফপি প্লাস ও কেরিবয় বেসিক।

‘পালকি মটরস’র গাড়িগুলোর দাম শুরু পাঁচ লাখ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ নয় লাখ টাকা। ব্যাটারির ক্ষমতা ও কত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে তার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে দাম। রাজধানীর উত্তর বাড্ডার সাঁতারকুলে তৈরি হচ্ছে গাড়িগুলো। পালকি মটরসের প্রথম গাড়ি ‘সিটিবয় বেসিক’ মডেলের জন্য এরইমধ্যে জমা পড়েছে ৬০০ আবেদন। আর ৮০টির বেশি প্রি-অর্ডার করা গাড়ি ডেলিভারি দেওয়া হবে আগামী বছরের (২০২৩ সাল) জানুয়ারিতে।

car-2.jpg

‘সিটিবয় বেসিক’ মডেলের গাড়িটির দাম চার লাখ ৯৯ হাজার টাকা

গাড়িগুলোর প্রি-বুকিং নেওয়া শুরু হয়েছে। বুকিংয়ের চার মাস পর গ্রাহককে দেওয়া হবে গাড়ি। দুই থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে বুকিং দেওয়া যাবে। বাকি টাকা গাড়ি হাতে পাওয়ার পর পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া কিস্তিতেও দেওয়া যাবে টাকা।

কী আছে গাড়িতে

জ্বালানিচালিত গাড়ির মতোই সব সুবিধা আছে পালকির গাড়িতে। যে কোনো বিদ্যুতের সকেটের মাধ্যমে দেওয়া যাবে চার্জ। রিমোট লক, অটোমেটিক জানালা, এয়ার কন্ডিশন, আট ইঞ্চি ডিসপ্লে, ব্লুটুথ, অতিরিক্ত চাকা, হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেকসহ যাত্রীদের আরাম ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রায় সব সুবিধা আছে গাড়িটিতে।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ‘সিটিবয় বেসিক’ মডেলের গাড়ির দাম চার লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এর সর্বোচ্চ গতি ৩৫ কিলোমিটার। ওজন ৫৬০ কেজি। এতে ব্যবহার করা হয়েছে লিড এসিড ব্যাটারি। যা আট ঘণ্টা লাগে চার্জ হতে। এক চার্জে গড়িটি চলবে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

এছাড়া ‘সিটিবয় এলএফপি’ মডেলের গাড়িটির দাম ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা। এতে ব্যবহার হয়েছে লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি। দুই ঘণ্টায় চার্জ হয়ে যায় এটি। এক চার্জে যেতে পারে ১৫০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি ৪৫ কিলোমিটার।

car-2.jpg

‘সিটিবয় এলএফপি প্লাস’ মডেলের গাড়ি এক চার্জে যেতে পারে ১৫০ কিলোমিটার। এ মডেলের গাড়ির সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার। লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি ব্যবহার করা গাড়িটির দাম ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

আর ‘কেরিবয় বেসিক’ মডেলের গাড়িটির দাম ধরা হয়েছে আট লাখ ৯৯ হাজার টাকা। দুই ঘণ্টায় চার্জ হয়ে যায় এটি। যেতে পারে ১৫০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার।

পালকি মোটরসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা আল মোমিন জাগো নিউজকে বলেন, তেলের গাড়িতে খরচ বেশি। ডিজেল বা অকটেনচালিত গাড়িতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ হয় ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। আর সিএনজিতে প্রতি কিলোমিটার খরচ হয় সাড়ে চার টাকা। কিন্তু আমাদের গাড়িতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ হয় মাত্র ৩০-৫৫ পয়সা, এসি চালালেও এই খরচ হয়। যখন আমরা দুটো গাড়ি বানাচ্ছি, একটা গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ স্টকে রাখছি। ঢাকার বাইরে সব জেলায় আমরা প্রত্যেক গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ সহজলভ্য করছি।

তিনি আরও বলেন, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও বডির বড় অংশ চীনের তৈরি। আর ইঞ্জিন আনা হচ্ছে তাইওয়ান থেকে। বাকি খুচরা যন্ত্রাংশের ৪০ শতাংশ বাংলাদেশের তৈরি। ভবিষ্যতে সব খুচরা যন্ত্রাংশ বাংলাদেশেই তৈরি হবে।

ব্যাটারির বিষয়ে মোস্তফা আল মোমিন জানান, লিড এসিড ব্যাটারি প্রত্যেক বছরই পরিবর্তন করা লাগে। কিন্তু এই ব্যাটারিতে পাঁচ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি দিচ্ছে তারা। গাড়িগুলোর মটরে দুই বছর সার্ভিস ওয়ারেন্টি দেওয়া হবে।

প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর আরিফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, জ্বালানি সংকটটা সাময়িক। বিদ্যুতের সমস্যাও দূর হয়েছে। তবে উচ্চমূল্যের জ্বালানিতে গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে পালকির গাড়িগুলো। যারা সিএনজি চালান কিংবা রাইড শেয়ারিং করেন তারা এই গাড়ির মাধ্যমে সহজেই মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।

car-2.jpg

প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা জানান, গত অক্টোবরে যারা প্রি-বুকিং দিয়েছিলেন তাদের গাড়ি দেওয়া হবে আগামী ৩০ জানুয়ারি।

যেভাবে যাত্রা শুরু

বিশ্বজুড়েই বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের জোয়ার ওঠেছে। টেসলা, রিভিয়ান, এনআইও’র মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গত এক দশকে অটোমোবাইল শিল্পে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। টাটা, জাগুয়ারসহ বিশ্বের বড় বড় গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানিও বিদ্যুতচালিত গাড়ি বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে।

পালকি মোটরসের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা আল মোমিন জানান, ২০০৯ সালে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির কথা চিন্তা করেন তিনি। তখন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ওই সময় বৈদ্যুতিক গাড়ির একটি প্রকল্পে কাজের সুযোগ হয় তার।

car-5

মোস্তফা আল মোমিন বলেন, পরিকল্পনা থাকলেও পর্যাপ্ত মূলধন না থাকায় সে সময় বেশিদূর এগোতে পারিনি। পরে বৈদ্যুতিক প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতকোত্তর করতে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই। তবে ইচ্ছা ছিল পড়াশুনা শেষে দেশে আসবো। একটা প্লাটফর্ম করার স্বপ্ন ছিল। পুলিশ স্টেশন ও ডাম্পিংয়ে পড়ে থাকা গাড়ি নিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করি। এরপর ২০২২ সালে পুরোপুরিভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ির কাজে মনোনিবেশ করি।

উদ্যোক্তারা জানান, শুরু থেকেই গাড়ির নাম বাংলায় হোক এমনটা চেয়েছিলেন তারা। এ জন্য বাহনের বিভিন্ন সমার্থক হিসেবে ‘রথ’ ও ‘পালকি’সহ কিছু শব্দ বাছাই করা হয়। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত করা হয় ‘পালকি’ নাম।