ক্রীড়া ডেক্স: বৃষ্টিতে ভেসে গেছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি। ২৪ ঘণ্টাও বিশ্রাম পাচ্ছেন না দুই দলের ক্রিকেটাররা। আজই মাঠে নামতে হচ্ছে সিরিজে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে। ডমিনিকায় ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায়।
প্রথম টি-টোয়েন্টি ভেস্তে গেলেও ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। দুর্বলতা স্পষ্ট হয়েছে। সাকিব-সোহান ছাড়া, কেউ দাঁড়াতে পারেননি। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে একই ভেন্যুতে নামার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, দারুন বোলিংয়ের আত্মবিশ্বাস সাথে থাকছে স্বাগতিকদের।
দ্বিতীয় ম্যাচে আরো সকর্ত থাকতে চায় তারা। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। ডমিনিকায় উইকেট থেকে সুবিধা পাবেন বোলাররা।
বাংলাদেশের হেডকোচ রাসেল ডমিঙ্গো জানান, দু-দলের জন্যই একই পরিস্থিতি। প্রতিকূল আবহাওয়ায় অনুশীলনের সুযোগ মেলেনি। আবার প্রথম ম্যাচটাও ঠিকঠাক হলো না। আশা করছি দ্বিতীয় ম্যাচে বেটার ক্রিকেট খেলব আমরা।
ডোমিঙ্গো বলেন, হ্যাঁ এটা আদর্শ নয় কিন্তু এখানে অজুহাত দেওয়ার কিছু নেই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্যও ব্যাপারগুলো একই ছিল। আমরা আসলে টস জিততে চেয়েছি (আগে বল করার জন্য), কিন্তু হেরে গেছি। এটা আসলে খেলারই অংশ।
আজ ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ বিশ্বাস টাইগার কোচের, আমি নিশ্চিত দ্বিতীয় ম্যাচে আমাদের উন্নতি হবে। কারণ কয়েকজন খেলোয়াড় খেলার বাইরে ছিল বেশ কয়েক সপ্তাহ। মাহমুদউল্লাহ, আফিফ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের হয়ে খেললো। যেটা কয়েক মাস হয়ে গেছে। তো তারা আরো ভালো করবে।
রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরির মাঝেই ওভার কমিয়ে ডমিনিকার উইন্ডসর স্টেডিয়ামে মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টি-টোয়েন্টি। তবে দফায় দফায় বৃষ্টির হানায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচ পরিত্যক্তই ঘোষণা করতে হয়।
তার আগে প্রথমে ১৬ ও পরে ১৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ১৩ ওভার ব্যাট করতে পেরেছে টস হারা বাংলাদেশ। আরেক দফা হতশ্রী ব্যাটিং প্রদর্শনীতে তাতে ৮ উইকেটে ১০৫ রান তোলে টাইগাররা। সাকিবের ১৫ বলে ২৯ ও সোহানের ১৬ বলে ২৫ ছাড়া বলার মতো কোনো স্কোর নেই ব্যাটারদের।
বৃষ্টির কারণে এ দিন নির্ধারিত সময়ের ৭০ মিনিট পর টস অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালের নভেম্বরে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা এনামুল হক বিজয়কে নিয় একাদশ সাজায় বাংলাদেশ।
এই ম্যাচ নিয়ে সর্বশেষে ৬ ম্যাচে চতুর্থ ভিন্ন উদ্বোধনী জুটি দেখেছে টাইগাররা। তবে তাতে লাভ হয়নি কিছুই।
মুনিম শাহরিয়ার ও এনামুল হক বিজয়ের নতুন উদ্বোধনী জুটি (৩ বলে ২ রান) হতাশই করেছে। আকিল হোসেনের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুনিম (৩ বলে ২)।
তবে তিন নম্বরে নামা সাকিবকে নিয়ে প্রায় ৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি জার্সিতে খেলতে নামা বিজয় ছিলেন ছন্দেই।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দুজনে হাঁকান একটি করে চার। আকিলের করা পরের ওভারে আরো আক্রমণাত্মক সাকিব, হাঁকান একটি করে চার, ছক্কা। তবে ওবেদ ম্যাকয়ের বলে আউট হয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি বিজয় (১০ বলে ১৬)।
ভাঙে সাকিবের সাথে ৩৪ রানের জুটি। পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ২ উইকেটে ৪৬ রান।
৬ষ্ঠ ওভারে আক্রমণে আসা হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে শুরু সাকিবের। তবে ৭ম ওভারে লিটন (১৪ বলে ৯) আউট রোমারিও শেফার্ডের স্লোয়ার শর্ট বলে।
দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা সাকিবও ফিরেছেন পরের ওভারে। ওয়ালশ জুনিয়রের বেশ বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ১৫ বলে ২৯ রানের ইনিংসটি সাজান ২ চার ২ ছক্কায়।
সাকিবের বিদায়ের এক বল পরেই বৃষ্টি নামে। আর তাতে ম্যাচের দৈঘ্য কমে ১৪ ওভারে নেমে আসে। ২৫ মিনিট পর খেলা শুরু হলে প্রথম বলেই ওয়ালশ জুনিয়রের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন আফিফ হোসেন (২ বলে ০)।
পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারেননি অধিনায়ক রিয়াদ (১৩ বলে ৮)। শেফার্ডের একই ওভারে ফেরেন শেখ মেহেদীও (৩ বলে ১)। আর তাতে ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
শেষদিকে সোহানের ১৬ বলে ১ চার ২ ছক্কায় সাজানো ২৫ রানের ইনিংসে ১০০ পেরোয় সফরকারীরা। ১৩ ওভারে ৮ উইকেটে ১০৫ রান তুলতেই আরেক দফা বৃষ্টি নামে। বৃষ্টি থামলেও বাংলাদেশ আর ব্যাট করার সুযোগ পায়নি। শেষ পর্যন্ত অতটুকুতেই স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ১৮ মিনিটে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে আম্পায়াররা।