ডেক্স রিপোর্ট : ‘সুরক্ষিত বিশ্ব, নিশ্চিত স্বাস্থ্য’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত প্রতিপাদ্যের আলোকে বাংলাদেশও এ বছর দিবসটি উদযাপন করছে।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত অনুষ্ঠানটি আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও দেশের সব জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় পর্যায়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ বছর দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় পর্যায়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সেমিনার আয়োজন, স্যুভেনির প্রকাশ, স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রদর্শনী, জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে স্বাস্থ্য সমস্যার ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কার্যক্রম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনা মহামারিতে বিশ্ব যখন লণ্ডভণ্ড, তখন আরেকটি বড় সমস্যা অনেকটা মানবসৃষ্ট জলবায়ুর বৈশ্বিক বিরূপ প্রভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে সুন্দর এই গ্রহ। বিরূপ জলবায়ুর প্রভাবে গ্রহের অধিবাসীরা ইতোমধ্যেই ক্যানসার, হাঁপানি, হৃদরোগের মতো রোগগুলোকে ক্রমবর্ধমান হারে মোকাবিলা করছে।
২০১২ সালে সংস্থাটির জরিপ মতে, পৃথিবীতে প্রায় এক কোটি ২৬ লাখ মানুষ অস্বাস্থ্যকর কাজ করায় মারা যায়; অর্থাৎ এ কারণে প্রতি চারজনে একজনের মৃত্যু ঘটে। এর জন্য দায়ী অস্বাস্থ্যকর বায়ু, পানি, রাসায়নিক দ্রব্য ইত্যাদি। এসব বস্তু মানুষের শরীরে প্রায় ১০০ প্রকারের রোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এসব ব্যাপার কমিয়ে আনার জন্য বদ্ধপরিকর।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রামক এবং অসংক্রামক সব ব্যাধির জন্যেই বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হচ্ছে, বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। ফলে দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বাসা বাধছে আমাদের শরীরে। ফলে মানব স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে আমাদেরকে পৃথিবীর স্বাস্থ্যের দিকে আরও বেশি নজর দিতে হবে। পৃথিবী ভালো থাকলে, পৃথিবীতে বসবাস করা মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী এবং জীববৈচিত্র্যও ভালো থাকবে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়। একই বছরের জুন ও জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়। ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল এই সংগঠন আইন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। এ দিন বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস বলে নির্ধারিত হয়।
প্রতিবছর সংস্থাটি এমন একটি স্বাস্থ্য ইস্যু বেছে নেয়, যা বিশেষ করে সারা পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সে দিন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় দিবসটি।