রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে সেচের পানি না পেয়ে বিষপানে দুই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কৃষকের আত্মহত্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. জুবাইর হোসেন বাবলুকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
২৩ মার্চ রাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের নবাইবটতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরেরদিন সকালে মারা যান অভিনাথ মার্ডি। রাত ৮টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রবি মার্ডি।
স্থানীয়রা জানান, অভিনাথ উপজেলার ঈশ্বরীপুর মাঠে ধানের জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ডিপ অপারেটর শাখাওয়াতের কাছে ১২ দিন ধরে ঘুরছিলেন। কিন্তু তাকে সেচের পানির দেওয়া হয়নি। এদিকে, পানি শুকিয়ে ধানী জমি বিবর্ণ হতে থাকে। সবশেষ ২৩ মার্চ আবারো ডিপ অপারেটরের কাছে সেচের পানির জন্য যান অভিনাথ ও রবি। কিন্তু সিরিয়াল না পেয়ে তারা একসঙ্গে বিষপান করেন।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। চার সদস্যের কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- রাজশাহীর জেলা প্রশাসক, বিএডিসির (নাটোর) নির্বাহী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং বিএমডিএর (নওগাঁ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সমশের আলী।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ২৪ মার্চ একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে ‘জমিতে পানি দেয়নি পাম্প অপারেটর, ক্ষোভে কৃষকের আত্মহত্যা’ এবং ২৭ মার্চ ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত “সেচের পানি না পেয়ে বিষপান: আরেক কৃষকের মৃত্যু” শীর্ষক সংবাদ দুটিতে প্রকাশিত কৃষক দুজনের মৃত্যুর কারণ এবং সেচের পানি সময়মতো না পাওয়ার কারণ উদ্ঘাটন করে সরেজমিনে তদন্ত করে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ কমিটি গঠন করা হলো।
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ধানের জমিতে পানি না পাওয়ায় রাগে-ক্ষোভে বিষপান করেন অভিনাথ মার্ডি (৩০) ও তার চাচাতো ভাই রবি মার্ডি (৩২)।
এদিকে সেচ নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন মৃত কৃষক অভিনাথ মার্ডির স্ত্রী রোজিনা হেমরম।
২৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে রোজিনা হেমরম এজাহার নিয়ে থানায় গেলে মামলাটি গ্রহণ করেন পুলিশ। এ সময় রোজিনা হেমরমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসরাফুল ইসলাম তোতা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রাজশাহী জেলা সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়াড় ও তার পরিবারের সদস্যরা।