ঢাকা ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘মণ্ডপে হামলায় নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে লজ্জা পেয়েছি’ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা টানা ১২ বছর ধরে এদেশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীও কোনো অনুষ্ঠানে হামলা ও দুর্ঘটনা হয়নি।

কিন্তু এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করার জন্য সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করেছে একটি দল। আওয়ামী লীগের প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যে আস্থা তা নষ্ট করার জন্য ও পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমি মনে করি।

আজ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) ২৩ বঙ্গবন্ধুর এভিনিউ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সহিংসতায়  ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ধর্মীও প্রতিষ্ঠানের ‘মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে থেকে মানবিক উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কুমিল্লা ঘটনার পরে সারা দেশের নেতাকর্মীরা সর্তক থাকলে অন্যান্য জায়গায় এসব ঘটনা ঘটতো না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আরো সর্তক থাকলে সাম্প্রদায়িক ঘটনা করার সাহস পেত না।

এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের যে ব্যর্থতা আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক অভয়ে থাকবে। কেন তারা দেশ ছাড়বে, তারা তো মুক্তিযুদ্ধ করেছে। জীবন দিয়েছে, এই দেশে থাকার তাদেরও অধিকার আছে। তারাও এদেশের প্রথম শ্রেণির মানুষ।

কাদের বলেন, ভোট এলেই হিন্দুদের কাছে গিয়ে আমরা যারা মায়াকান্না করি, হিন্দু দরদ দেখাই, হিন্দুদের বিপদের সময় আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি কেন? এ প্রশ্ন আপনাদের প্রত্যেকের বিবেকের কাছে আমি রেখে গেলাম।

সবকিছু প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এত বড় সংগঠন এত কর্মী বাহিনী। কুমিল্লার ঘটনার পর দিন, চৌমুহনীর ঘটনা ঘটেছে। যদি কঠোরভাবে সতর্কতা আপনারা অবলম্বন করতেন, আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকলে এদের এত দুঃসাহস হতো? এ রকম তাণ্ডব চৌমুহনীতে তারা করে গেল।

তিনি আরো বলেন, এতগুলো মণ্ডপ চৌমুহনীতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিল, আপনারা কি নিরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন? একটা প্রতিরোধও তো হলো না। এটা নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আমি নিজে লজ্জা পেয়েছি। কী জবাব দেবো আজকে হিন্দু সম্প্রদায়কে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আপনাদের সঙ্গে আছে, আওয়ামী লীগ আপনাদের সঙ্গে আছে, ভবিষ্যতে থাকবে, ভয় পাবেন না। সাম্প্রদায়িক হামলায়  যেসব পূজামণ্ডব ভাঙা হয়েছে সেগুলো আবার নতুন করে সরকারি সহয়তায় নির্মাণ করা হবে। শেখ হাসিনার সরকার মুখে নয় কাজে প্রমাণ করে অসাম্প্রদায়িক।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক  ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নত করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের মধ্যে কিছু  চিহ্নত করা হয়েছে, তাদেরকে চিনে রাখতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত করছে বিএনপি। সাম্প্রদায়িকদের নির্ভর যোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

এ সময় ভার্চয়ালি যুক্ত ছিলেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, আমেনা নূর ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আল জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

ট্যাগস

সর্বাধিক পঠিত

‘মণ্ডপে হামলায় নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে লজ্জা পেয়েছি’ কাদের

আপডেট সময় ০৫:২৫:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা টানা ১২ বছর ধরে এদেশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীও কোনো অনুষ্ঠানে হামলা ও দুর্ঘটনা হয়নি।

কিন্তু এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করার জন্য সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করেছে একটি দল। আওয়ামী লীগের প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যে আস্থা তা নষ্ট করার জন্য ও পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমি মনে করি।

আজ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) ২৩ বঙ্গবন্ধুর এভিনিউ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সহিংসতায়  ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ধর্মীও প্রতিষ্ঠানের ‘মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে থেকে মানবিক উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কুমিল্লা ঘটনার পরে সারা দেশের নেতাকর্মীরা সর্তক থাকলে অন্যান্য জায়গায় এসব ঘটনা ঘটতো না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আরো সর্তক থাকলে সাম্প্রদায়িক ঘটনা করার সাহস পেত না।

এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের যে ব্যর্থতা আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক অভয়ে থাকবে। কেন তারা দেশ ছাড়বে, তারা তো মুক্তিযুদ্ধ করেছে। জীবন দিয়েছে, এই দেশে থাকার তাদেরও অধিকার আছে। তারাও এদেশের প্রথম শ্রেণির মানুষ।

কাদের বলেন, ভোট এলেই হিন্দুদের কাছে গিয়ে আমরা যারা মায়াকান্না করি, হিন্দু দরদ দেখাই, হিন্দুদের বিপদের সময় আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি কেন? এ প্রশ্ন আপনাদের প্রত্যেকের বিবেকের কাছে আমি রেখে গেলাম।

সবকিছু প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এত বড় সংগঠন এত কর্মী বাহিনী। কুমিল্লার ঘটনার পর দিন, চৌমুহনীর ঘটনা ঘটেছে। যদি কঠোরভাবে সতর্কতা আপনারা অবলম্বন করতেন, আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকলে এদের এত দুঃসাহস হতো? এ রকম তাণ্ডব চৌমুহনীতে তারা করে গেল।

তিনি আরো বলেন, এতগুলো মণ্ডপ চৌমুহনীতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিল, আপনারা কি নিরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন? একটা প্রতিরোধও তো হলো না। এটা নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আমি নিজে লজ্জা পেয়েছি। কী জবাব দেবো আজকে হিন্দু সম্প্রদায়কে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আপনাদের সঙ্গে আছে, আওয়ামী লীগ আপনাদের সঙ্গে আছে, ভবিষ্যতে থাকবে, ভয় পাবেন না। সাম্প্রদায়িক হামলায়  যেসব পূজামণ্ডব ভাঙা হয়েছে সেগুলো আবার নতুন করে সরকারি সহয়তায় নির্মাণ করা হবে। শেখ হাসিনার সরকার মুখে নয় কাজে প্রমাণ করে অসাম্প্রদায়িক।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক  ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নত করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের মধ্যে কিছু  চিহ্নত করা হয়েছে, তাদেরকে চিনে রাখতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত করছে বিএনপি। সাম্প্রদায়িকদের নির্ভর যোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

এ সময় ভার্চয়ালি যুক্ত ছিলেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, আমেনা নূর ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আল জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।