ঢাকা ১০:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টলিউডে চুক্তি বাড়ছে জয়া-মিথিলা-বাঁধনের

বিনোদন ডেক্স : টলিউডে বেশ কয়েকবছর ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন জয়া আহসান। সম্প্রতি বাঁধন, মিথিলাও টলিউডে কাজ শুরু করেছেন। এর আগে টলিউডের বেশ কিছু বাণিজ্যিক ছবিতে দেখা গেছে নুসরাত ফারিয়াকে।

বিদ্যা সিনহা মিমও টলিউডে কাজ করেছেন। আবার টলিউডের দেব, প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বাংলাদেশের ছবিতে কাজ করেছেন। যৌথ প্রযোজনায়ও ছবি নির্মিত হয়েছে।

বাংলাদেশে কাজ করেছেন জয়াপ্রদা, চাঙ্কি পান্ডের মতো জনপ্রিয় বলিউড অভিনেতারা। টলিউডে বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের কাজ করা নিয়ে আজ মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদন ছেপেছে আনন্দবাজার পত্রিকা। এতে বলা হয়েছে :

ভারতে বাংলা সিনেমার ক্ষেত্র ছোট, নারীকেন্দ্রিক ছবির সংখ্যা কম, বলিষ্ঠ অভিনেত্রী অনেক। স্বাভাবিকভাবেই কাজের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, পরিস্থিতি, পিআর সব কিছুর একটা লড়াই চলতে থাকে। এর মধ্যে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন।

প্রকাশ্যে না বললেও তাদের নিয়ে টলিউডের অনেক অভিনেত্রীর ক্ষোভের কথা অজানা নয়। জয়া আহসান প্রথম বাংলাদেশি অভিনেত্রী, যিনি টলিউডে পরপর কাজ করছেন অনেক বছর ধরেই। ‘আবর্ত’ দিয়ে শুরু হয়েছিল। তার পর ‘রাজকাহিনী’, ‘বিসর্জন’, ‘বিজয়া’, ‘কণ্ঠ’, ‘বিনিসুতোয়’… জয়ার গোটা তিনেক ছবি এখনও মুক্তির অপেক্ষায়।

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’তে আজমেরী হক বাঁধনের কাজ প্রশংসিত হয়েছে। তাকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন এখানকার অনেক পরিচালকই। রাজর্ষি দে পরিচালিত ‘মায়া’, রিঙ্গোর ছবি ‘আ রিভার ইন হেভেন’এ রয়েছেন ওপার বাংলার আরেক অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।

এই তিন নায়িকা যে ঘরানার ছবিতে কাজ করছেন, তাতে এর আগে সাধারণত পাওলি দাম, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, রাইমা সেনদের দেখা যেত। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির চাহিদা কমে যাওয়ায় শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহানেরাও অন্য ধারার ছবির দিকে ঝুঁকেছেন।

ফলে অল্প পরিসরে প্রতিযোগিতা বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নায়িকার ক্ষোভ, ‘‘এমন অনেক চরিত্রই বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের দেওয়া হয়, যেটা টলিউডের যে কেউ করতে পারত।’’

জয়া অবশ্য এই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবতে রাজি নন। তার মতে, কাজের সুযোগ সকলেরই আছে। আনন্দ প্লাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার বক্তব্য, ‘‘সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা তো ভালই। আমার মতে শিল্পের কোনও সীমারেখা থাকা উচিত নয়।’’

শিল্পের আদানপ্রদানের উপরে জোর দিলেন মিথিলাও। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কারও কাজ, জায়গা কেড়ে নিতে পারে বলে মনে হয় না। সকলেই নিজের যোগ্যতা দিয়ে কাজ পাচ্ছেন। আমি বৈবাহিক সূত্রে কলকাতায় থাকছি, তাই এখানেই কাজ করছি এখন। তবে আমি এখানে সদ্য কাজ শুরু করেছি।

আমাকে বোধহয় কারও প্রতিযোগী হিসেবে দেখাটা ঠিক হবে না।’’ অভিনেত্রী মনে করিয়ে দিলেন, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করেছেন।

বাংলাদেশের প্রজেক্ট ‘কমান্ডো’তে কাজ করেছেন দেব। আবার টলিউডে একাধিক নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন বাংলাদেশের নুসরাত ফারিয়া। অভিনেতারা অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়ে কাজ করবেন এটা স্বাভাবিক। পাওলি, স্বস্তিকারা যেমন বলিউডে নিয়মিত কাজ করছেন। বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগও বেশি।

এপার বাংলার অভিনেতারা বাংলাদেশের ছবিতে কাজ করলেও, তা সংখ্যায় কম। বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করেছেন এমন এক নায়িকা বললেন, ‘‘এখানে বাংলাদেশের শিল্পীরা যত সুযোগ পান, সেই তুলনায় ওপার বাংলায় আমাদের কাজের সুযোগ বেশ কম।’’

বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন মনে করেন, এই চর্চাগুলো অভিনেত্রীদের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি করে। ‘‘অনেকে বলছেন, বাংলাদেশ থেকে অভিনেত্রীরা এসে কাজ করায় টলিউডের কিছু অভিনেত্রীর মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আসলে আমাদের সমাজ এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে দেয়।

বিশেষ করে নারীদের উপরেই বেশি চাপ তৈরি করা হয়। কেন এই চাপগুলো আমাদের নিতে হবে? এগুলো এড়িয়ে সদর্থক দিকগুলো ভাবলে, সকলেরই ভাল হবে। সকলে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবেন। কথাটা কলকাতা-বাংলাদেশ সব ইন্ডাস্ট্রির নিরিখেই বলছি।’’

প্রতিযোগিতা ছিল, থাকবেও। তবে প্রতিভাই যে শেষ কথা বলবে, দ্বিমত নেই তা নিয়েও।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

টলিউডে চুক্তি বাড়ছে জয়া-মিথিলা-বাঁধনের

আপডেট সময় ০১:০০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিনোদন ডেক্স : টলিউডে বেশ কয়েকবছর ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন জয়া আহসান। সম্প্রতি বাঁধন, মিথিলাও টলিউডে কাজ শুরু করেছেন। এর আগে টলিউডের বেশ কিছু বাণিজ্যিক ছবিতে দেখা গেছে নুসরাত ফারিয়াকে।

বিদ্যা সিনহা মিমও টলিউডে কাজ করেছেন। আবার টলিউডের দেব, প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বাংলাদেশের ছবিতে কাজ করেছেন। যৌথ প্রযোজনায়ও ছবি নির্মিত হয়েছে।

বাংলাদেশে কাজ করেছেন জয়াপ্রদা, চাঙ্কি পান্ডের মতো জনপ্রিয় বলিউড অভিনেতারা। টলিউডে বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের কাজ করা নিয়ে আজ মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদন ছেপেছে আনন্দবাজার পত্রিকা। এতে বলা হয়েছে :

ভারতে বাংলা সিনেমার ক্ষেত্র ছোট, নারীকেন্দ্রিক ছবির সংখ্যা কম, বলিষ্ঠ অভিনেত্রী অনেক। স্বাভাবিকভাবেই কাজের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, পরিস্থিতি, পিআর সব কিছুর একটা লড়াই চলতে থাকে। এর মধ্যে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন।

প্রকাশ্যে না বললেও তাদের নিয়ে টলিউডের অনেক অভিনেত্রীর ক্ষোভের কথা অজানা নয়। জয়া আহসান প্রথম বাংলাদেশি অভিনেত্রী, যিনি টলিউডে পরপর কাজ করছেন অনেক বছর ধরেই। ‘আবর্ত’ দিয়ে শুরু হয়েছিল। তার পর ‘রাজকাহিনী’, ‘বিসর্জন’, ‘বিজয়া’, ‘কণ্ঠ’, ‘বিনিসুতোয়’… জয়ার গোটা তিনেক ছবি এখনও মুক্তির অপেক্ষায়।

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’তে আজমেরী হক বাঁধনের কাজ প্রশংসিত হয়েছে। তাকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন এখানকার অনেক পরিচালকই। রাজর্ষি দে পরিচালিত ‘মায়া’, রিঙ্গোর ছবি ‘আ রিভার ইন হেভেন’এ রয়েছেন ওপার বাংলার আরেক অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।

এই তিন নায়িকা যে ঘরানার ছবিতে কাজ করছেন, তাতে এর আগে সাধারণত পাওলি দাম, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, রাইমা সেনদের দেখা যেত। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির চাহিদা কমে যাওয়ায় শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহানেরাও অন্য ধারার ছবির দিকে ঝুঁকেছেন।

ফলে অল্প পরিসরে প্রতিযোগিতা বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নায়িকার ক্ষোভ, ‘‘এমন অনেক চরিত্রই বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের দেওয়া হয়, যেটা টলিউডের যে কেউ করতে পারত।’’

জয়া অবশ্য এই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবতে রাজি নন। তার মতে, কাজের সুযোগ সকলেরই আছে। আনন্দ প্লাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার বক্তব্য, ‘‘সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা তো ভালই। আমার মতে শিল্পের কোনও সীমারেখা থাকা উচিত নয়।’’

শিল্পের আদানপ্রদানের উপরে জোর দিলেন মিথিলাও। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কারও কাজ, জায়গা কেড়ে নিতে পারে বলে মনে হয় না। সকলেই নিজের যোগ্যতা দিয়ে কাজ পাচ্ছেন। আমি বৈবাহিক সূত্রে কলকাতায় থাকছি, তাই এখানেই কাজ করছি এখন। তবে আমি এখানে সদ্য কাজ শুরু করেছি।

আমাকে বোধহয় কারও প্রতিযোগী হিসেবে দেখাটা ঠিক হবে না।’’ অভিনেত্রী মনে করিয়ে দিলেন, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করেছেন।

বাংলাদেশের প্রজেক্ট ‘কমান্ডো’তে কাজ করেছেন দেব। আবার টলিউডে একাধিক নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন বাংলাদেশের নুসরাত ফারিয়া। অভিনেতারা অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়ে কাজ করবেন এটা স্বাভাবিক। পাওলি, স্বস্তিকারা যেমন বলিউডে নিয়মিত কাজ করছেন। বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগও বেশি।

এপার বাংলার অভিনেতারা বাংলাদেশের ছবিতে কাজ করলেও, তা সংখ্যায় কম। বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করেছেন এমন এক নায়িকা বললেন, ‘‘এখানে বাংলাদেশের শিল্পীরা যত সুযোগ পান, সেই তুলনায় ওপার বাংলায় আমাদের কাজের সুযোগ বেশ কম।’’

বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন মনে করেন, এই চর্চাগুলো অভিনেত্রীদের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি করে। ‘‘অনেকে বলছেন, বাংলাদেশ থেকে অভিনেত্রীরা এসে কাজ করায় টলিউডের কিছু অভিনেত্রীর মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আসলে আমাদের সমাজ এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে দেয়।

বিশেষ করে নারীদের উপরেই বেশি চাপ তৈরি করা হয়। কেন এই চাপগুলো আমাদের নিতে হবে? এগুলো এড়িয়ে সদর্থক দিকগুলো ভাবলে, সকলেরই ভাল হবে। সকলে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবেন। কথাটা কলকাতা-বাংলাদেশ সব ইন্ডাস্ট্রির নিরিখেই বলছি।’’

প্রতিযোগিতা ছিল, থাকবেও। তবে প্রতিভাই যে শেষ কথা বলবে, দ্বিমত নেই তা নিয়েও।