ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করা যাক। করোনা কালীন সময়ে আমরা কিভাবে বরাবরের মত আনন্দমুখর পরিবেশে, আরো বেশি স্বাস্থ্য সচেতন থেকে অফুরন্ত আনন্দের এই ঈদ উৎসব উৎযাপন করবো আসুন তা যেনে নেওয়া যাক। করোনা আতঙ্কের মধ্যে থেকেও জীবানুমুক্ত হেলদি লাইফ ষ্টাইল অনুসরনের মাধ্যমে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে সুস্থ সুন্দর থেকে আমাদের এই ঈদ আন্দন উপভোগ করতে হবে।
আমরা জানি, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের চীনের উহান শহরে সৃষ্টি করোনা ভাইরাস, ২০২১ এর মার্চের আগ পর্যন্ত একটা নিয়ন্ত্রনের মধ্যেই চলে আসছিল, ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলছিল মোটামুটি ভালোভাবে।
কিন্তু মার্চের মাঝামাঝি আকস্মিক আবার করোনা দ্বিতীয় বারে সব কেমন যেন এলোমেলো হতে থাকে।
তারপরেও স্বাস্থ্যকর্মীদের ও অন্যান্য পেশাজীবীদের গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই দ্বিতিয় ঢেউ মোকাবেলার চেষ্টায় কিছুটা অগ্রগতি হলেও হঠাৎ ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট এর কবলে বিশেষত, সীমান্তবর্তী ৭ টি জেলায় ডাবল মিউটেন্ট ভ্যারিয়েন্ট ও ভয়াবহ সংক্রামন চলতি জুলাই মাসে দেশ ব্যপি এক মহাতান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থার মধ্যেই পালিত হতে যাচ্ছে ঈদ-উল-আযহা। এই মাসেই হযরত ইসমাইল এবং হযরত ইব্রাহিমের প্রতি সুমহান ত্যাগের স্মারক হিসেবে কোরবানী পালিত হবে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে বর্তমানে আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রামন দিন দিন আশংখা জনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
এবারের ঈদে আমরা কি কি স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলব এক নজরে দেখা যাকঃ-
- কোরবানী ঈদে আমরা বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হব।
- কোরবানীর পশু ক্রয়, জবাই, মাংস কাটা, গোশত বিতরন ইত্যাদি সব কাজই কিন্তু লোক সমাগমের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়ে থাকে, এজন্য এখানে বাড়তি সচেতনতা একান্ত প্রয়োজন।
- গরুর হাটে যাওয়ার সময় কষ্ট হলেও দুটো মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস পড়ে যাব। যতটা সম্ভব দুরত্ব বজায় রেখে চেষ্টা করব, এবং হাট থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যেই ক্রয় কাজ শেষ করব।
- পশু হাট থেকে এসেই বাসায় উত্তম রুপে গোসল করব এবং পড়নের জামা কাপর ভিন্ন করে রাখব ও তা পরিস্কার করব।
- হাট থেকে ফেরার পর গোসল করার পূর্ব পর্যন্ত বাসার অন্যান্যদের সাথে যথেষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে প্রথমেই গোসল করে নিব। এক কথায় সকল কাজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব।
ঈদে পরিমিত খাওয়া দাওয়া প্রসঙ্গে বলতে গেলে;
কোরবানীর ঈদে নানা ধরনের খাদ্য প্রস্তুত হয় প্রত্যেকের বাড়িতে বিশেষ করে, পোলাও, কাবাব, কালিয়া, রেজালা, ইত্যাদি এসব রান্না করতে গিয়ে অনেক সময় ব্যবহৃত হয় ঘি, মাখন, বাটার অয়েল, গড়ম মসলা আরো অনেক কিছু মুখরোচক করার জন্য। অধিক মসলাযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তবুও খেতে হয়, আমরা খাই।
এসব খাদ্যের অতিভোজন আমাদের পাকস্থলিতে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে, আবার দেখা যায় পেটের খাবার হজম না হতেই আবার খাওয়া হয়। এতে পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে । কারও কারও পেট ফেপে ওঠে, শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এ রকম অনেক ধরনের অসুবিধা কারও দেখা দেয় তাহলে আমরা কি করতে পারি? এক কথায় নিজের বাসায় খাই আর আত্মীয়ের বাসায় খাই পরিমিত খেতে হবে।
এ ক্ষেত্রে আমরা, আল্লাহর রসুল (সা:) এর কথা স্মরণ করতে পারি ও তা মেনে চলে কল্যাণ পেতে পারি, তা হল “তোমরা খাওয়ার সময় পাকস্থলির এক ভাগ পূরণ করবে খাদ্য দিয়ে, আরেক ভাগ পানি দিয়ে এবং এক ভাগ খালি রাখবে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহনের জন্য তাহলে তোমরা সুস্থ থাকবে’’।
কোরবানীর পর বর্জ্য পরিস্কার করতে হবে সঠিক ভাবে।
তাই আসুন ঈদের আনন্দে ভাগাভাগি করি সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে, পরিমিত খাবার খেয়ে ও ত্যাগের মহিমায় জীবনকে আলোকিত করি। সকলেই সুস্থ্য থাকবেন এই প্রত্যাশায়।
- লেখকঃ
- হাসান শাহরিয়ার পল্লব
- সংবাদকর্মী, ফার্মাসিষ্ট ও মানবাধিকারকর্মী