কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের উখিয়ায় ইয়াবা লুটের ঘটনা প্রচার করায় চুরির অপবাদে দুজনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৭ জুলাই) রাতে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি সবার গোচরে আসে।
নির্যাতনের শিকার আবছার (২৪) স্থানীয় হাকিম পাড়া এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে ও অপরজন একই এলাকার শাহ আলমের ছেলে নয়ন (১৬)।
অভিযুক্তরা হলেন- পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী মগ পাড়ার বিল (হাকিম পাড়া) ৫নং ওয়ার্ডের মুফিজ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ও ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরীর ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), একই এলাকার মৃত নজু মিয়ার ছেলে আবদুস সালাম (৩৮)।
স্থানীয়রা জানান, দুই সপ্তাহ আগে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের পেছনের রাস্তা থেকে জাহাঙ্গীর ও আবদুস সালাম অজ্ঞাত এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৪ হাজার ইয়াবা লুট করে। এমন দৃশ্য দেখে ফেলেন নির্যাতনের শিকার আবছার ও নয়ন। পরবর্তী তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়।
এ ঘটনায় তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন ইয়বা জাহাঙ্গীর ও আবদুস সালাম। তারা বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) আবছার ও নয়নকে ধরে নিয়ে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালান। এ সময় তাদেরকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করা হয়। নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশের পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, আবছার ও নয়নকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হচ্ছে। এ সময় মোবাইল চুরির কথা বলা হলে নির্যাতনের শিকার দুজনই তা অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে আবছারকে মাটিতে ফেলে দেয় জাহাঙ্গীর। মাটিতে পড়া অবস্থায় আবছারকে অমানবিকভাবে পেটালে এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।
নির্যাতনকারী জাহাঙ্গীরের বাবা মুফিজ উদ্দীন চৌধুরী ঘটনাস্থলে এসে অজ্ঞান আবছারের কপালে লাথি মারে। পরে কোথাও অভিযোগ করবে না মর্মে নির্যাতিত দুই তরুণের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে সইও নেন তিনি। অভিযোগ করলে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রোববার (১৭ জুলাই) পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শনিবার রাতে আমি নির্যাতনের ভিডিও দেখার পর হতভম্ব হই। অভিযুক্তদের একজন আমার ভাতিজা জাহাঙ্গীরকে শনিবার রাতে ও অপর অভিযুক্ত সালামকে রোববার সকালে উখিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীদের নিয়ে থানায় গিয়ে মামলা করেছি।’
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমদ মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, ‘চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরীর সহযোগিতায় অভিযুক্তরা এখন পুলিশের হেফাজতে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে।