ঢাকা ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রহস্যেঘেরা মায়া সভ্যতার আদ্যোপান্ত

  • নিউজ ভিশন টুডে ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ১২:০০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১

  • Warning: A non-numeric value encountered in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-content/themes/template-pro/template-parts/common/single_two.php on line 103
    ৫৮৬ Time View

স্টাফ রিপোটার :প্রাচীন সভ্যতা মানেই রহস্যে ঘেরা আদি মানববসতি, তাদের সংস্কৃতি, রোমাঞ্চকর ইতিহাস সবমিলিয়ে পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে জানার প্রবল আগ্রহ। পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে অন্যতম মায়া সভ্যতা। এটি শুধু প্রাচীনই নয় বরং সভ্যতার মধ্যে সব থেকে বেশি রহস্যে ঘেরা রয়েছে মায়া সভ্যতা।

যুগে যুগে বিজ্ঞানীরা এই সভত্যর রহস্য উন্মোচনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে কী রয়েছে এই রহস্যে ঘেরা সভ্যতায়, কেনই বা এ সভ্যতা নিয়ে এত আগ্রহ? আসুন আজ ঘুরে আসি মায়া সভ্যতার সেই রহস্যের বেড়াজালে ।

আমাজনের ২ মিলিয়ন বর্গমাইল আয়তনের বিশাল জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক রহস্যময় প্রাচীন সভ্যতা, পৃথিবীর ইতিহাসে যা মায়া সভ্যতা নামে পরিচিত।

হাজার হাজার বছর পুরনো এ সভ্যতাকে আমেরিকাতে স্প্যানিশদের আসার আগে সবচেয়ে আধুনিক সভ্যতা হিসেবে ধরা হয়। তৎকালীন পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত সভ্যতা ছিল এ মায়া সভ্যতা। মায়া সভ্যতায় বসবাসকারীদের মায়ানও বলা হতো।

২৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মধ্য আমেরিকার বর্তমান বেলিজে মায়া সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া যায়। বর্তমান মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো, গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস, এল সালভেদরের ১০০০ কিলোমিটার জুড়ে ছিল মায়া সভ্যতা। এর বাইরেও অনেক জায়গায় শিল্প ও সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়।

প্রি-ক্লাসিক্যাল পিরিয়ডে, যা ২৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল, মায়া সভ্যতার ধীরে ধীরে প্রসারণ ঘটতে থাকে। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তারা কৃষি কাজ এবং বসতি স্থাপন শুরু করে। তার পূর্বে তারা শিকার করে ও ফলমূল জোগাড় করে জীবনধারণ করত।

এরপর ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে সেকোনুস্ক অঞ্চলে তারা বসতি স্থাপন করে। এরপর তারা ধীরে ধীরে পুরো মেসোআমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে ও বিশাল বিশাল স্থাপত্য কার্যের শুরু করে। এসব অঞ্চলজুড়ে তাদের শিলালিপি, মৃৎশিল্প ও স্থাপত্য কলার বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া যায়।

২৫০-৯০০ খ্রিস্টাব্দ ছিল মায়া সভ্যতার স্বর্ণযুগ। এ সময় এ অঞ্চলে ৪০টিরও বেশি শহর প্রতিষ্ঠা লাভ করে যার কিছু কিছুর জনসংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি ছিল। এই সময়ে বড়-ধরনের নির্মাণকার্য, শিল্পকর্মের উন্নয়ন ও কৃষির অভাবনীয় বিকাশ সাধন হয়েছিল। তারা পাথরের বিশাল অবকাঠামো দিয়ে শহর নির্মাণ করেছিল।

প্রত্যেক মায়া নগররাষ্ট্রে একটা করে স্থানীয় রাজা বা আহাও থাকতেন। তিনি বসবাস করতেন রাজপ্রাসাদে। তার সঙ্গে বিশাল রাজপরিবারও ওই রাজপ্রাসাদে থাকত। প্রত্যেক রাজপ্রাসাদের উত্তর প্রান্তে থাকত একটা বাণিজ্য কুঠি, বড় রাস্তা এবং দক্ষিণ প্রান্তে থাকত পিরামিড এবং কৃষিজমি।

মায়া সভ্যতায় বিভিন্ন রাজ্যের মাঝে সংঘাতের ঘটনাও দেখা যায়। আর এ বিষয়টি দেখা গেছে হলমুলের ক্ষেত্রে। হলমুল শহরটি তেমন বড় কিংবা বিখ্যাত নয় টিকালের মতো। ২০০০ সাল পর্যন্ত এ শহরটি সম্পর্কে প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানলেও সেভাবে গুরুত্ব দেননি।

মায়া সভ্যতা বিখ্যাত হয়ে আছে তাদের স্থাপত্যশিল্প, বিশাল বিশাল ঘরবাড়ি, পিরামিড আর মূর্তিগুলোর জন্য। এখনও মায়া সভ্যতার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাদের তৈরি পিরামিড, ঘরবাড়ি, প্রাসাদ আর অট্টালিকা। তারা এসব ঘরবাড়ি বানাত লাইমস্টোন নামের এক ধরনের পাথর দিয়ে।

এই পাথরকে বাংলায় বলা হয় চুনাপাথর। আর সেই পাথরগুলোকে সুন্দর মসৃণ করতে ব্যবহার করতো সিমেন্টের মতো একধরনের পদার্থ। আর সেগুলো দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করতে হাজার হাজার শ্রমিক দিনের পর দিন পরিশ্রম করত। তবেই না তৈরি হতো বিশাল বিশাল আর সুন্দর সুন্দর সব ঘরবাড়ি-পিরামিড-প্রাসাদ-অট্টালিকা।

মায়ানদের শুধু ঘরবাড়ি নির্মাণের পদ্ধতি ও ভাষাও ছিল অদ্ভুত। তারা একটার পর আরেকটা বর্ণ লিখত না। এমনকি লেখার জন্য তারা কোনো বর্ণই ব্যবহার করত না; লিখত ছবি বা লোগো দিয়ে।  শুধু তাই না, মায়ানরা সেই সময়েই গণিতে ও জ্যোতির্বিজ্ঞানেও বেশ অবদান রেখেছিল মায়ানরা।

খালি চোখেই গ্রহ নক্ষত্রদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করে হিসেব করে তাদের গতি-প্রকৃতি তারাই প্রথম নির্ণয় করেছিল। তারা সূর্য ও আকাশের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে একটি নির্ভুল বর্ষপঞ্জিকা বানাতে পেরেছিল যা তাদের কৃষিতে সহায়তা করত। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম মায়ারাই ১ বছরে ৩৬৫ দিন আছে তা আবিষ্কার করতে পেরেছিল।

মায়ানরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তিকে তাদের আরাধ্য দেবতা ভেবে পূজা করত। আর এই পূজার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল নরবলি দেওয়া। তারা তাদের আরাধ্য দেবতাদের খুশি করার জন্য নরবলি দিত। সোজা কথায় মানুষ কোরবানি দিত! আর এই বলি দেওয়া হতো তাদের নিজেদের গোষ্ঠীর কাউকে নয়, অন্য গোত্রের মানুষের।

৯০০-১০০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মায়ান সভ্যতা বিপর্যয়ের মুখে পড়ল। তবে গবেষকরা ঠিক ঠিক করে বলতে পারেননি, কী কারণে মায়া সভ্যতা ধ্বংস হয়েছিল। কেউ বলেন, মহামারির কারণে, কেউ বলেন, জনসংখ্যার তুলনায় খাবারের অপর্যাপ্ততার কারণে, আবার কেউ বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে একসঙ্গে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল।

১৪৫০ সালে পুরো মধ্য আমেরিকায় বিপ্লব সংঘঠিত হয়। তখন মায়ানরা আরো ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে যায়। মায়া সভ্যতার কিছু অংশ আবার স্প্যানিশরা দখল করে নেয়। শেষমেশ ১৬৯৭ সালে এসে পুরো মায়া সভ্যতাই স্প্যানিয়ার্ডদের দখলে আসে।

মায়ানরা এখনও পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যায়নি। ওদের পূর্বপুরুষদের স্থাপনাগুলো যেমন সগৌরবে এখনো দাড়িয়ে আছে পৃথিবীর বুকে, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে, তেমনি এখনও মধ্য আমেরিকায় প্রায় ৬০-৭০ লাখ মায়ান বাস করছে নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বজায় রেখে।

ট্যাগস

রহস্যেঘেরা মায়া সভ্যতার আদ্যোপান্ত

আপডেট সময় ১২:০০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১

স্টাফ রিপোটার :প্রাচীন সভ্যতা মানেই রহস্যে ঘেরা আদি মানববসতি, তাদের সংস্কৃতি, রোমাঞ্চকর ইতিহাস সবমিলিয়ে পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে জানার প্রবল আগ্রহ। পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে অন্যতম মায়া সভ্যতা। এটি শুধু প্রাচীনই নয় বরং সভ্যতার মধ্যে সব থেকে বেশি রহস্যে ঘেরা রয়েছে মায়া সভ্যতা।

যুগে যুগে বিজ্ঞানীরা এই সভত্যর রহস্য উন্মোচনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে কী রয়েছে এই রহস্যে ঘেরা সভ্যতায়, কেনই বা এ সভ্যতা নিয়ে এত আগ্রহ? আসুন আজ ঘুরে আসি মায়া সভ্যতার সেই রহস্যের বেড়াজালে ।

আমাজনের ২ মিলিয়ন বর্গমাইল আয়তনের বিশাল জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক রহস্যময় প্রাচীন সভ্যতা, পৃথিবীর ইতিহাসে যা মায়া সভ্যতা নামে পরিচিত।

হাজার হাজার বছর পুরনো এ সভ্যতাকে আমেরিকাতে স্প্যানিশদের আসার আগে সবচেয়ে আধুনিক সভ্যতা হিসেবে ধরা হয়। তৎকালীন পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত সভ্যতা ছিল এ মায়া সভ্যতা। মায়া সভ্যতায় বসবাসকারীদের মায়ানও বলা হতো।

২৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মধ্য আমেরিকার বর্তমান বেলিজে মায়া সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া যায়। বর্তমান মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো, গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস, এল সালভেদরের ১০০০ কিলোমিটার জুড়ে ছিল মায়া সভ্যতা। এর বাইরেও অনেক জায়গায় শিল্প ও সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়।

প্রি-ক্লাসিক্যাল পিরিয়ডে, যা ২৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল, মায়া সভ্যতার ধীরে ধীরে প্রসারণ ঘটতে থাকে। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তারা কৃষি কাজ এবং বসতি স্থাপন শুরু করে। তার পূর্বে তারা শিকার করে ও ফলমূল জোগাড় করে জীবনধারণ করত।

এরপর ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে সেকোনুস্ক অঞ্চলে তারা বসতি স্থাপন করে। এরপর তারা ধীরে ধীরে পুরো মেসোআমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে ও বিশাল বিশাল স্থাপত্য কার্যের শুরু করে। এসব অঞ্চলজুড়ে তাদের শিলালিপি, মৃৎশিল্প ও স্থাপত্য কলার বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া যায়।

২৫০-৯০০ খ্রিস্টাব্দ ছিল মায়া সভ্যতার স্বর্ণযুগ। এ সময় এ অঞ্চলে ৪০টিরও বেশি শহর প্রতিষ্ঠা লাভ করে যার কিছু কিছুর জনসংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি ছিল। এই সময়ে বড়-ধরনের নির্মাণকার্য, শিল্পকর্মের উন্নয়ন ও কৃষির অভাবনীয় বিকাশ সাধন হয়েছিল। তারা পাথরের বিশাল অবকাঠামো দিয়ে শহর নির্মাণ করেছিল।

প্রত্যেক মায়া নগররাষ্ট্রে একটা করে স্থানীয় রাজা বা আহাও থাকতেন। তিনি বসবাস করতেন রাজপ্রাসাদে। তার সঙ্গে বিশাল রাজপরিবারও ওই রাজপ্রাসাদে থাকত। প্রত্যেক রাজপ্রাসাদের উত্তর প্রান্তে থাকত একটা বাণিজ্য কুঠি, বড় রাস্তা এবং দক্ষিণ প্রান্তে থাকত পিরামিড এবং কৃষিজমি।

মায়া সভ্যতায় বিভিন্ন রাজ্যের মাঝে সংঘাতের ঘটনাও দেখা যায়। আর এ বিষয়টি দেখা গেছে হলমুলের ক্ষেত্রে। হলমুল শহরটি তেমন বড় কিংবা বিখ্যাত নয় টিকালের মতো। ২০০০ সাল পর্যন্ত এ শহরটি সম্পর্কে প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানলেও সেভাবে গুরুত্ব দেননি।

মায়া সভ্যতা বিখ্যাত হয়ে আছে তাদের স্থাপত্যশিল্প, বিশাল বিশাল ঘরবাড়ি, পিরামিড আর মূর্তিগুলোর জন্য। এখনও মায়া সভ্যতার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাদের তৈরি পিরামিড, ঘরবাড়ি, প্রাসাদ আর অট্টালিকা। তারা এসব ঘরবাড়ি বানাত লাইমস্টোন নামের এক ধরনের পাথর দিয়ে।

এই পাথরকে বাংলায় বলা হয় চুনাপাথর। আর সেই পাথরগুলোকে সুন্দর মসৃণ করতে ব্যবহার করতো সিমেন্টের মতো একধরনের পদার্থ। আর সেগুলো দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করতে হাজার হাজার শ্রমিক দিনের পর দিন পরিশ্রম করত। তবেই না তৈরি হতো বিশাল বিশাল আর সুন্দর সুন্দর সব ঘরবাড়ি-পিরামিড-প্রাসাদ-অট্টালিকা।

মায়ানদের শুধু ঘরবাড়ি নির্মাণের পদ্ধতি ও ভাষাও ছিল অদ্ভুত। তারা একটার পর আরেকটা বর্ণ লিখত না। এমনকি লেখার জন্য তারা কোনো বর্ণই ব্যবহার করত না; লিখত ছবি বা লোগো দিয়ে।  শুধু তাই না, মায়ানরা সেই সময়েই গণিতে ও জ্যোতির্বিজ্ঞানেও বেশ অবদান রেখেছিল মায়ানরা।

খালি চোখেই গ্রহ নক্ষত্রদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করে হিসেব করে তাদের গতি-প্রকৃতি তারাই প্রথম নির্ণয় করেছিল। তারা সূর্য ও আকাশের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে একটি নির্ভুল বর্ষপঞ্জিকা বানাতে পেরেছিল যা তাদের কৃষিতে সহায়তা করত। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম মায়ারাই ১ বছরে ৩৬৫ দিন আছে তা আবিষ্কার করতে পেরেছিল।

মায়ানরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তিকে তাদের আরাধ্য দেবতা ভেবে পূজা করত। আর এই পূজার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল নরবলি দেওয়া। তারা তাদের আরাধ্য দেবতাদের খুশি করার জন্য নরবলি দিত। সোজা কথায় মানুষ কোরবানি দিত! আর এই বলি দেওয়া হতো তাদের নিজেদের গোষ্ঠীর কাউকে নয়, অন্য গোত্রের মানুষের।

৯০০-১০০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মায়ান সভ্যতা বিপর্যয়ের মুখে পড়ল। তবে গবেষকরা ঠিক ঠিক করে বলতে পারেননি, কী কারণে মায়া সভ্যতা ধ্বংস হয়েছিল। কেউ বলেন, মহামারির কারণে, কেউ বলেন, জনসংখ্যার তুলনায় খাবারের অপর্যাপ্ততার কারণে, আবার কেউ বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে একসঙ্গে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল।

১৪৫০ সালে পুরো মধ্য আমেরিকায় বিপ্লব সংঘঠিত হয়। তখন মায়ানরা আরো ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে যায়। মায়া সভ্যতার কিছু অংশ আবার স্প্যানিশরা দখল করে নেয়। শেষমেশ ১৬৯৭ সালে এসে পুরো মায়া সভ্যতাই স্প্যানিয়ার্ডদের দখলে আসে।

মায়ানরা এখনও পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যায়নি। ওদের পূর্বপুরুষদের স্থাপনাগুলো যেমন সগৌরবে এখনো দাড়িয়ে আছে পৃথিবীর বুকে, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে, তেমনি এখনও মধ্য আমেরিকায় প্রায় ৬০-৭০ লাখ মায়ান বাস করছে নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বজায় রেখে।