রাজশাহী প্রতিনিধি: অঘোষিত বাস ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে কার্যত সড়ক পথে অচল হয়ে পড়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহী। এতে যাত্রীদের মধ্য অসহনীয় দুর্ভোগ নেমে এসেছে। তাদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) অঘোষিত বাস ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলছে। তবে ঠিক কখন নাগাদ আবার বাস চলাচল শুরু হবে সে ব্যাপারে কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। এর আগে সোমবার (১ মার্চ) সকাল থেকে আকস্মিক পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়।
পরিবহন নেতারা বলছেন-বগুড়ায় তাদের দুই শ্রমিককে মারধর ও বাস চলাচলে সড়কে নিরাপত্তার আশঙ্কায় তারা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
তবে বিএনপির নেতারা বলছেন- আজকের রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ পণ্ড করার জন্য সোমবার থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী শিরোইলে থাকা ঢাকা বাস টার্মিনাল ও নওদাপাড়ায় থাকা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে- সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শিরোইল বাসটার্মিনাল থেকে প্রথম দিনের মতো আজও রাজশাহী থেকে ঢাকার পথে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি।
অপরদিকে নওদাপাড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে আন্তঃজেলাসহ কোনো রুটের বাস ছেড়ে যায়নি। তবে টার্মিনালগুলোতে বাস কাউন্টার খোলা রয়েছে।
এদিকে, আকস্মিক এ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। কাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট কবে এবং কখন নাগাদ শেষ হবে তাও বলতে পারছেন না কেউই। এতে নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।
শফিকুল ইসলাম নামে রাজশাহীর গোরহাঙ্গা রেলগেইটে আসা এক যাত্রী বলেন, পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে এভাবে বাস ধর্মঘট একেবারেই অনৈতিক।
তিনি গত দু’দিন থেকে রাজশাহীতে এসে আটকা পড়েছেন। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তার মতো অনেক যাত্রীই নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব আবারও বাস চলাচল শুরুর দাবি জানান ভুক্তভোগী এ যাত্রী।
মঙ্গলবার বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ। তাই জনসমাগম ঠেকাতে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তবে রাজশাহীর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দাবি, বাস চলাচল করলে হামলার সম্ভাবনা আছে।
তাই শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বাস চলাচল আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরে তারা আবারও বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নেবেন।
জানতে চাইলে রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, যেহেতু আজ রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ।
এর কারণে তারা বিশৃঙ্খলা ও যানবাহনে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে তারা সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
যদিও রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব আলী দাবি করে বলেন, বগুড়ায় তাদের দুই শ্রমিককে মারধর করা হয়েছে। মারধরকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন- ‘তাদের বিভাগীয় সমাবেশকে সামনে রেখে সোমবার থেকে হঠাৎ করে রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এর কারণ বিভাগীয় সমাবেশে যেনো মানুষ না আসতে পারে। এছাড়া আর কিছু না। এটি রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ নস্যাৎ করার অপচেষ্টা বলেও দাবি করেন এ বিএনপি নেতা।