স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁঃ নওগাঁর ধামইরহাটে ডিএপি সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কৃষকদের কাছ থেকে দাম বেশি নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে।
সরকার বেধে দেয়া মূল্যের চেয়ে কৃষকদের কাছ থেকে বস্তা প্রতি ২শ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে। এতে চলতি আমন মৌসুমে চাষাবাদ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
তবে কৃষি অফিস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বলছে সারের কোনো সংকট নেই। জানা গেছে, উপজেলায় তালিকাভুক্ত ১২ জন সারের ডিলার রয়েছে। চলছে আমন ধান চাষাবাদের ভরা মৌসুম।
জমি প্রস্তুত করতে গিয়ে সারের চাহিদা বেড়েছে। বিগত বছরে সরকারিভাবে ডিএপি সারের দাম ছিল ১ হাজার ১৫০ টাকা। ডিলাররা ৫০-১০০ টাকা লাভে বিক্রি করতেন।
এবার ডিএপি সারের দাম কমিয়ে ডিলার পর্যায়ে ৭শ টাকা বস্তা নির্ধারণ করেছে সরকার। আর কৃষক পর্যায়ে ডিলাররা বিক্রি করবেন ৮শ টাকা বস্তা।
এদিকে ডিএপি সারের দাম কমিয়ে দেয়ায় কৃষকদের নিকট এ সারের চাহিদা বেড়েছে। আর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ডিলাররা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বস্তা প্রতি প্রায় দুইশ টাকা বেশি নিচ্ছেন।
কৃষকদের বাধ্য হয়ে বেশি দামেই সার কিনতে হচ্ছে। সারের সংকট চলতে থাকলে আমন ধান উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, কিছু অসাধু-
ব্যবসায়ী সার মজুদ করে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অধিক মুনাফা লাভের জন্য চড়া দামে বিক্রি করছে। বিষয়টি তদারকি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ধামইরহাট পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, সরকারের বেধে দেয়া ডিএপি সারের মূল্য আটশ টাকা ঘোষণা করা হলেও নয়শ থেকে হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে।
ডিলাররা ডিএপি সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বেশি রাখছেন। কৃষকের সুবিধার্থে সরকারের বেধে দেয়া মূল্যে ডিএপি সারের সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
ধামইরহাট পূর্ব বাজারের সার ডিলার কামরুজ্জামানের কাছে প্রতিবেদক মুঠোফোনে এক বস্তা ডিএপি সার চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু ডিএপি সার বিক্রি হবে না, সঙ্গে ইউরিয়া সারও নিতে হবে।’
টিঅ্যান্ডটি মোড়ের সার ব্যবসায়ী আবুল ট্রেডার্সের আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমন মৌসুমে ৩০০-৪০০ বস্তা সার বরাদ্দ পেয়ে থাকি সেখানে এবার মাত্র ২৫০ বস্তা ডিএপি সার বরাদ্দ পেয়েছি।
চাহিদা বেশি থাকায় গত এক সপ্তাহে ডিএপি সার শেষ হয়ে গেছে। ফলে সারের সংকট তৈরী হয়েছে। অপরদিকে ধামইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ডিএপি সারের মধ্যে ইউরিয়া এবং টিএসপি থাকে।
সরকার ডিএপি সারের দাম কমিয়ে দেয়ায় কৃষকদের নিকট এ সারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। সারের দাম কমার কারণে স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা।
এ মৌসুমে এ উপজেলার জন্য ৩শ মেট্রিক টন সারের চাহিদা চেয়েছিলাম। সে মোতাবেক একটু কম বরাদ্দ পেয়েছি। তবে সারের চাহিদা থাকলেও কোনো সংকট নেই।
তিনি বলেন, কৃষক পর্যায়ে ডিএপি সারের বস্তা বিক্রয় মূল্য ৮শ টাকা। আমরা প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করছি।
কোনো ডিলার ও সাব-ডিলার যদি সারের দাম বেশি নিয়ে থাকে বা নেয়ার অপচেষ্টা করে এবং কোনো কৃষক যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেন তাহলে বিধি অনুযায়ী আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
নওগাঁ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ডিএপি সারের কোনো সংকট নেই। ডিএপি সার ডিলার পর্যায়ে ৭শ টাকা বস্তা এবং কৃষক পর্যায়ে ৮শ টাকা বস্তা। যদি ডিলার দাম বেশি রাখে কৃষি অফিস বিষয়টি দেখবে।