ঢাকা ০৪:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় চাঁদাবাজির অভিযোগে কাউন্সিলর বনরাজসহ আটক ৪

কাউন্সিলর বনরাজ

স্টাফ রিপোর্টার ,নওগাঁঃ  নওগাঁয় চাঁদাবাজির অভিযোগে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজসহ (৫১) চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের খাস-নওগাঁ মহল্লার একটি বাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

গোলাপ রহমান বনরাজ নওগাঁ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। অন্যারা হলেন- খাস-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা আবু রায়হান (১৯), রাসেল রহমান (২০), সিফাত হৃদয় (২০)।

মামলার এজাহার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা রিপন মন্ডল ও তার স্ত্রী শান্তনা খাতুন শহরের খাস নওগাঁ-

এলাকায় আজাদ সোনারের বাড়িতে গত ৭-৮ মাস থেকে বাসাভাড়া নিয়ে স্বপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন। রিপন শহরের একটি পোশাকের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন।

রোববার দুপুরে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজের নেতৃত্বে ৭-৮ জন যুবককে নিয়ে রিপন মন্ডলের ভাড়াবাসায় যান। স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয় তারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন বলে তাদের জানানো হয়।

এ সময় তাদেরকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় এবং ওইদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় দিয়ে বিয়ের কাগজপত্র চাওয়া হয়। পরদিন সোমবার সকাল-

১০টার দিকে কাউন্সিলর তার দলবল নিয়ে পুনরায় বাড়িতে এসে বিয়ের কাগজ চাইলে রিপন তার বিয়ের কাগজপত্র দেখায়। কিন্তু তারপরও কাউন্সিলরের সঙ্গীরা তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

এক সময় বিষয়টি মিমাংসার জন্য কাউন্সিলর বনরাজ ৫০ হাজার টাকা রিপনের কাছে চাঁদা দাবি করেন। রিপনকে তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে-

যোগাযোগ করে ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করতে বলা হয়। এ সময় রিপন ও তার স্ত্রী কৌশলে থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।

সংবাদ পেয়ে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসা মাত্রই আসামিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজ,-

আবু রিহান, রাসেল রহমান, সিফাত হৃদয়কে আটক করে। পরে চাঁদাবাজি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে রিপন কাউন্সিলর বনরাজসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন।

ভুক্তভোগী রিপন মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘দুই বছর আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। অথচ কাউন্সিলর ও তার সঙ্গীরা আমরা অবৈধভাবে বসবাস করছি বলে অভিযোগ তুলেছেন।

তারা আমার স্ত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। একপর্যায়ে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজ এলাকার ছেলেদের নিয়ে পিকনিক (ভোজ) করার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করতে বলেন’।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি ও যৌন হয়রানির অভিযোগে ভুক্তভোগী রিপন মন্ডল মামলা করেছেন।

কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজসহ গ্রেপ্তার চারজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গোলাপ-

রহমান বনরাজ নওগাঁ শহরের গোস্তহাটির মোড়ে বনরাজ ঔষধালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেকে হেকিম পরিচয় দিয়ে হারবালের রমরমা ব্যবসা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা পকেটস্থ করেন।

গোলাপ রহমান বনরাজ একজন বি ক্যাটাগরির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হারবাল চিকিৎসক। বিধি মোতাবেক তিনি কোনোপ্রকার ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) অথবা নিজেকে হেকিম বলে পরিচয় দিতে পারবে না।

অথচ ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘদিন ধরে শহরের জনাকীর্ণ এলাকায় বিলাস বহুল চেম্বারে বসে হারবাল ওষুধ তৈরি করে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে আসছিল।

ট্যাগস

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

নওগাঁয় চাঁদাবাজির অভিযোগে কাউন্সিলর বনরাজসহ আটক ৪

আপডেট সময় ১২:৩২:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার ,নওগাঁঃ  নওগাঁয় চাঁদাবাজির অভিযোগে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজসহ (৫১) চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের খাস-নওগাঁ মহল্লার একটি বাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

গোলাপ রহমান বনরাজ নওগাঁ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। অন্যারা হলেন- খাস-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা আবু রায়হান (১৯), রাসেল রহমান (২০), সিফাত হৃদয় (২০)।

মামলার এজাহার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা রিপন মন্ডল ও তার স্ত্রী শান্তনা খাতুন শহরের খাস নওগাঁ-

এলাকায় আজাদ সোনারের বাড়িতে গত ৭-৮ মাস থেকে বাসাভাড়া নিয়ে স্বপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন। রিপন শহরের একটি পোশাকের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন।

রোববার দুপুরে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজের নেতৃত্বে ৭-৮ জন যুবককে নিয়ে রিপন মন্ডলের ভাড়াবাসায় যান। স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয় তারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন বলে তাদের জানানো হয়।

এ সময় তাদেরকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় এবং ওইদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় দিয়ে বিয়ের কাগজপত্র চাওয়া হয়। পরদিন সোমবার সকাল-

১০টার দিকে কাউন্সিলর তার দলবল নিয়ে পুনরায় বাড়িতে এসে বিয়ের কাগজ চাইলে রিপন তার বিয়ের কাগজপত্র দেখায়। কিন্তু তারপরও কাউন্সিলরের সঙ্গীরা তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

এক সময় বিষয়টি মিমাংসার জন্য কাউন্সিলর বনরাজ ৫০ হাজার টাকা রিপনের কাছে চাঁদা দাবি করেন। রিপনকে তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে-

যোগাযোগ করে ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করতে বলা হয়। এ সময় রিপন ও তার স্ত্রী কৌশলে থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।

সংবাদ পেয়ে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসা মাত্রই আসামিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজ,-

আবু রিহান, রাসেল রহমান, সিফাত হৃদয়কে আটক করে। পরে চাঁদাবাজি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে রিপন কাউন্সিলর বনরাজসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন।

ভুক্তভোগী রিপন মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘দুই বছর আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। অথচ কাউন্সিলর ও তার সঙ্গীরা আমরা অবৈধভাবে বসবাস করছি বলে অভিযোগ তুলেছেন।

তারা আমার স্ত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। একপর্যায়ে কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজ এলাকার ছেলেদের নিয়ে পিকনিক (ভোজ) করার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করতে বলেন’।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি ও যৌন হয়রানির অভিযোগে ভুক্তভোগী রিপন মন্ডল মামলা করেছেন।

কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজসহ গ্রেপ্তার চারজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গোলাপ-

রহমান বনরাজ নওগাঁ শহরের গোস্তহাটির মোড়ে বনরাজ ঔষধালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেকে হেকিম পরিচয় দিয়ে হারবালের রমরমা ব্যবসা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা পকেটস্থ করেন।

গোলাপ রহমান বনরাজ একজন বি ক্যাটাগরির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হারবাল চিকিৎসক। বিধি মোতাবেক তিনি কোনোপ্রকার ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) অথবা নিজেকে হেকিম বলে পরিচয় দিতে পারবে না।

অথচ ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘদিন ধরে শহরের জনাকীর্ণ এলাকায় বিলাস বহুল চেম্বারে বসে হারবাল ওষুধ তৈরি করে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে আসছিল।