ফরিদপুর প্রতিনিধি :দেড়িতে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছানো ও মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাফলতির কারনে করোনা সন্দেহে এক রোগির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলা থেকে করোনা রোগির জন্য বরাদ্দকৃত তিনটি অ্যাম্বুলেন্স এর একটি অ্যাম্বুলেন্স দেড়িতে পৌঁছানোর কারনে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা। নিহত রোগির নাম মোঃ ছামাদ মন্ডল তার বাড়ী ঝিনাইদহ জেলার খাজুরিয়া গ্রামে বলে জানাগেছে।
কামারখালী বাজার এলাকার বাসিন্দা মোহম্মদ আলী নামে একজন জানান, মৃত ওই ব্যক্তি কামারখালী এলাকায় এক বাড়ি কাজের জন্য এসেছিলেন। জ্বর বেশি থাকায় তিনি আজ সকালে একটি ভ্যানে বাড়িতে রওনা দিয়ে ছিলেন।
পথিমধ্যে তার জ্বর বেশি দেখা দিলে ভ্যান চালক তাকে রাস্তার পাশে রেখে চলে যান। এরপর সকাল থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে মাঝিবাড়ি গোল্ডেন জুট মিলের পাশে একটি মাঠে ছামাদ মন্ডল জ্বর নিয়ে পড়ে থাকেন। এসময় তার করোনা হয়েছে এই ভয়ে তার কাছে কেউ না গিয়ে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনা হয়।
এরপর প্রশাসন জানার সাথে সাথে সেখানে গিয়ে তাকে ঔষধ দেয়া হয় জ্বরের। এরপর তারা মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেকে বিষয়টি জানালেও তারা দেড়ি করে সেখানে উপস্থিত হয় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে। এরপর সেখান থেকে তাকে নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কত্যর্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
এ বিষয়ে মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, কিছু বলার নেই এটা সত্যিই দুঃখজনক একটি বিষয়। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে বার বার বিষয়টি জানালেও তারা তেমন ভাবে গুরুত্ব দিলেন না। একাধিকবার তাদের সহযোগিতা চেয়েও আমরা পায়নি।
মধুখালী উপজেলা নির্বাহী মোঃ মোস্তফা মোনায়ার বলেন, আমি বলবো এটা কুইক রিসপোন্স যেভাবে হওয়ার কথা ছিলো সেটা হয়নি। এর প্রধান কারন করোনা রোগির জন্য জেলায় বরাদ্দকৃত অ্যাম্বুলেন্সটি দেড়িতে পৌঁছানোর কারনে এই মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে।
তারপরও প্রশাসন থেকে সেখানে গিয়ে তাকে ঔষধ দেয়া হয়। তাৎখনিক যদি ফরিদপুর মেডিকেল থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি আসতো তাহেল এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো না।
মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ রেজা বলেন, আমাদের কোন গাফলতি নেই এই ঘটনায়। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। এখানে ফরিদপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি দেড়িতে পৌঁছানোর কারনে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের অ্যাম্বুলেন্সটি রয়েছে কিন্তু সেটি হাসপাতালের সাধারন রোগির জন্য ব্যবহৃত হয়, সেটি আমি কি করে দিই। সেটি দিলে ১৪ দিন আমাদের ওই অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করতে পারবো না। এই জন্যই ফরিদপুর থেকে করোনা রোগির জন্য জেলায় বরাদ্দকৃত অ্যাম্বুলেন্সটি চেয়েছিলাম। এর ড্রাইভার না পাওয়া একটি বড় কারন বলে তিনি জানান।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মোঃ জুয়েল জানান, আমাদের কাছে রাত পৌনে ১১টার দিকে রোগিটি আসে। মৃত অবস্থায় পায় তাকে। এখন ডেডবডি রুমে রাখা হয়েছে নিয়ম মেনেই। আগামীকাল সকালে তার নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে তিনি জানান।