ঢাকা ১২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ Logo ডাকসু নির্বাচনে হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না: সেনাবাহিনী Logo কুমিল্লায় ভাড়া বাসা থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার Logo সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ, ক্রিকেটার মুশফিকের ভাতিজার মরদেহ উদ্ধার Logo রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের Logo নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড Logo ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ Logo ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৮০ Logo পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব Logo নওগাঁ ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে মারধর

পি কে হালদারের ২২ বছরের কারাদণ্ড

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায়  ২২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৮ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ৫২ মামলার মধ্যে এটি প্রথম মামলার রায়। বাকি ৫১ মামলা এখনো তদন্তাধীন।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রায় ঘোষণার জন্য ৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। ওইদিন যুক্তিউপস্থাপনের সময় কারাগারে থাকা চার আসামি অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধাকে আদালতে হাজির করা হয়। পি কে হালদারসহ ১০ আসামি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- লিলাবতী হালদার (পি কে হালদারের মা), পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি। এ মামলায় ১০৬ সাক্ষীর মধ্যে ৯৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এ সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ এ সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা।

এছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডিতে পি কে হালদারের নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, পি কে হালদার তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন করেছেন। যার দাম ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন। যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। নিজের কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে ২ একর জমির ওপর নির্মাণ করেন ৮তলা হোটেল (র‌্যাডিসন নামে পরিচিত)। যার আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা। এছাড়া পি কে হালদারের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি, এর বর্তমান দাম ১৬৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পি কে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকারও বেশি।

এসব অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন। এরপর তদন্ত করে দুদক পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

কলকাতার অনতিদূরে অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২০২২ সালের ১৪ মে পি কে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। একই সঙ্গে তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারসহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।

গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। অর্থপাচার আইন-২০০২ এবং দুর্নীতি দমন আইন- ১৯৮৮’র বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্তদেরর নামে চার্জ গঠন করা হয়।

বর্তমানে পি কে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ আসামি রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে। আর একমাত্র নারী আসামি আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

পি কে হালদারের ২২ বছরের কারাদণ্ড

আপডেট সময় ০১:৫৩:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায়  ২২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৮ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ৫২ মামলার মধ্যে এটি প্রথম মামলার রায়। বাকি ৫১ মামলা এখনো তদন্তাধীন।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রায় ঘোষণার জন্য ৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। ওইদিন যুক্তিউপস্থাপনের সময় কারাগারে থাকা চার আসামি অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধাকে আদালতে হাজির করা হয়। পি কে হালদারসহ ১০ আসামি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- লিলাবতী হালদার (পি কে হালদারের মা), পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি। এ মামলায় ১০৬ সাক্ষীর মধ্যে ৯৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এ সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ এ সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা।

এছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডিতে পি কে হালদারের নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, পি কে হালদার তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন করেছেন। যার দাম ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন। যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। নিজের কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে ২ একর জমির ওপর নির্মাণ করেন ৮তলা হোটেল (র‌্যাডিসন নামে পরিচিত)। যার আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা। এছাড়া পি কে হালদারের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি, এর বর্তমান দাম ১৬৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পি কে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকারও বেশি।

এসব অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন। এরপর তদন্ত করে দুদক পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

কলকাতার অনতিদূরে অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২০২২ সালের ১৪ মে পি কে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। একই সঙ্গে তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারসহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।

গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। অর্থপাচার আইন-২০০২ এবং দুর্নীতি দমন আইন- ১৯৮৮’র বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্তদেরর নামে চার্জ গঠন করা হয়।

বর্তমানে পি কে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ আসামি রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে। আর একমাত্র নারী আসামি আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471