ঢাকা ০৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করলে ব্যবস্থা নেবে কানাডা: ট্রুডো

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ায় বেজায় চটেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পদক্ষেপ নিলে কানাডাও ব্যবস্থা নেবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের একটি বৈঠকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আমার বলতে দ্বিধা নেই, আসছে দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমাদের দেশকে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে। আমি জানি, কানাডার নাগরিকেরা হয়তো উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। কিন্তু আমি তাঁদের জানাতে চাই, ফেডারেল সরকার ও সরকারি সব সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে তাঁদের কথা ভেবেই নেওয়া হয়।’

স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়, এ সপ্তাহান্ত থেকেই কানাডা ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা পণ্যকে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এ ছাড়া চীনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

তবে কানাডার তেলের ওপর ২৫ শতাংশ নয়, বরং ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তেলের ওপর শুল্ক কার্যকরও এখনই হচ্ছে না বলে গতকাল জানিয়েছেন ট্রাম্প। ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কার্যকর হবে।

শুল্ক আরোপের এক নম্বর কারণ, ওই সব (দেশের) মানুষ আমাদের দেশে ভয়ানকভাবে ও অনেক বেশি সংখ্যায় প্রবেশ করেন। দ্বিতীয় কারণ, মাদক, ফেন্টানাইল (একধরনের মাদক) ও অন্য সব (অবৈধ) আমাদের দেশে আসে। তৃতীয় কারণ, আমরা ঘাটতির আকারে কানাডা ও মেক্সিকোকে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছি।

ট্রাম্প তিন কারণে এ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, ‘এক নম্বর কারণ, ওই সব (দেশের) মানুষ আমাদের দেশে ভয়ানকভাবে ও অনেক বেশি সংখ্যায় প্রবেশ করেন। দ্বিতীয় কারণ, মাদক, ফেন্টানাইল (একধরনের মাদক) ও অন্যসব (অবৈধ) আমাদের দেশে আসে। তৃতীয় কারণ, আমরা ঘাটতির আকারে কানাডা ও মেক্সিকোকে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছি।’

ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের পর অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে উভয় পক্ষের বাণিজ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর ও বাইরে থেকে ব্যবসায়ী নেতারা ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন।

ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের পর অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে উভয় পক্ষের বাণিজ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

উল্লেখ্য, কানাডার সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ মিত্রতার সম্পর্কের ইতিহাসও রয়েছে। কানাডার মোট রপ্তানি পণ্যের ৭৫ শতাংশ যায় যুক্তরাষ্ট্রে।ট্রুডো বলেছেন, ‘বাণিজ্য বিরোধ ও কূটনৈতিক জটিলতা আমরা চাই না। কিন্তু যদি ট্রাম্প তাঁর হুমকি বাস্তবে অনুসরণ করেন, তবে আমরাও ব্যবস্থা নেব।’

ট্যাগস

ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করলে ব্যবস্থা নেবে কানাডা: ট্রুডো

আপডেট সময় ০৬:৪২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ায় বেজায় চটেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পদক্ষেপ নিলে কানাডাও ব্যবস্থা নেবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের একটি বৈঠকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আমার বলতে দ্বিধা নেই, আসছে দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমাদের দেশকে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে। আমি জানি, কানাডার নাগরিকেরা হয়তো উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। কিন্তু আমি তাঁদের জানাতে চাই, ফেডারেল সরকার ও সরকারি সব সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে তাঁদের কথা ভেবেই নেওয়া হয়।’

স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়, এ সপ্তাহান্ত থেকেই কানাডা ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা পণ্যকে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এ ছাড়া চীনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

তবে কানাডার তেলের ওপর ২৫ শতাংশ নয়, বরং ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তেলের ওপর শুল্ক কার্যকরও এখনই হচ্ছে না বলে গতকাল জানিয়েছেন ট্রাম্প। ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কার্যকর হবে।

শুল্ক আরোপের এক নম্বর কারণ, ওই সব (দেশের) মানুষ আমাদের দেশে ভয়ানকভাবে ও অনেক বেশি সংখ্যায় প্রবেশ করেন। দ্বিতীয় কারণ, মাদক, ফেন্টানাইল (একধরনের মাদক) ও অন্য সব (অবৈধ) আমাদের দেশে আসে। তৃতীয় কারণ, আমরা ঘাটতির আকারে কানাডা ও মেক্সিকোকে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছি।

ট্রাম্প তিন কারণে এ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, ‘এক নম্বর কারণ, ওই সব (দেশের) মানুষ আমাদের দেশে ভয়ানকভাবে ও অনেক বেশি সংখ্যায় প্রবেশ করেন। দ্বিতীয় কারণ, মাদক, ফেন্টানাইল (একধরনের মাদক) ও অন্যসব (অবৈধ) আমাদের দেশে আসে। তৃতীয় কারণ, আমরা ঘাটতির আকারে কানাডা ও মেক্সিকোকে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছি।’

ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের পর অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে উভয় পক্ষের বাণিজ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর ও বাইরে থেকে ব্যবসায়ী নেতারা ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন।

ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের পর অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে উভয় পক্ষের বাণিজ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

উল্লেখ্য, কানাডার সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ মিত্রতার সম্পর্কের ইতিহাসও রয়েছে। কানাডার মোট রপ্তানি পণ্যের ৭৫ শতাংশ যায় যুক্তরাষ্ট্রে।ট্রুডো বলেছেন, ‘বাণিজ্য বিরোধ ও কূটনৈতিক জটিলতা আমরা চাই না। কিন্তু যদি ট্রাম্প তাঁর হুমকি বাস্তবে অনুসরণ করেন, তবে আমরাও ব্যবস্থা নেব।’