ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি আজ

  • স্টাফ রিপোটার :
  • আপডেট সময় ০৬:৪০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৬৩৬ Time View

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ। দিনটি স্মরণীয় করতে আজ রাজধানীতে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বেলা ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হবে এ ‘শহীদি মার্চ’।

গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘দেশ সংস্কারে যারা বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে, তাদের এখনই স্মরণ করার সময়। এজন্য আমরা বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ও গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে “‍শহীদি মার্চ” করব। আমরা চাইব, পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা নিজ নিজ অবস্থান থেকে এতে অংশগ্রহণ করবে। আগামীকালও (বৃহস্পতিবার) সারা দেশে গণজোয়ার নামবে।’

সারজিস জানান, রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে নিউমার্কেট, মানিক মিয়া এভিনিউ, কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হবে ‘শহীদি মার্চ’। কর্মসূচিতে ফেস্টুনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নানা প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা হবে। আজ যে অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি হতে যাচ্ছে তা দৃশ্যমান হতে থাকে জুলাইয়ের শুরুর দিক থেকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে। গত ১৪ জুলাই পর্যন্ত এ আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সূত্রপাত ঘটে ১৫ জুলাই। এর পর থেকে মূলত আন্দোলনের তীব্রতা ও ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ আগস্ট সরকার পতনের এক দফা দাবি আসে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে। ডাক দেয়া হয় অসহযোগ আন্দোলনের। ৪ আগস্ট মাঠে নামার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। এদিন সারা দেশে ব্যাপক সংঘাতে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়। ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে রাজপথে নেমে আসে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা। শেষমেশ ক্ষমতা ছেড়ে এদিন ভারতে আশ্রয় নেন ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসা শেখ হাসিনা।

সরকার পতনের একদিন পর বাতিল ঘোষণা করা হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ। এরপর ৮ আগস্ট ড. মো. ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই হিসেবে দুদিন দেশে কোনো সরকার ছিল না।  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াকে। রাষ্ট্রের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য ৮ আগস্ট ছয় সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, লিয়াজোঁ কমিটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরামর্শ দেবে এবং সরকার, অংশীজন ও ছাত্র-জনতার সঙ্গে সমন্বয় করবে। লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম সদস্য মাহফুজ আব্দুল্লাহকে পরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ ও ধরপাকড়ের কারণে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সবচেয়ে বেশি তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ পুলিশ। সরকার পতনের পর তারাও কর্মস্থল ত্যাগ করে। ফলে থানা ও ট্রাফিক সিগন্যালগুলো কার্যত পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরাই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। পুলিশ কর্মস্থলে যোগদান করার পরও সব মিলিয়ে ১০ দিন শিক্ষার্থীরা সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কাজ করে।

 

ট্যাগস

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি আজ

আপডেট সময় ০৬:৪০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ। দিনটি স্মরণীয় করতে আজ রাজধানীতে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বেলা ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হবে এ ‘শহীদি মার্চ’।

গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘দেশ সংস্কারে যারা বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে, তাদের এখনই স্মরণ করার সময়। এজন্য আমরা বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ও গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে “‍শহীদি মার্চ” করব। আমরা চাইব, পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা নিজ নিজ অবস্থান থেকে এতে অংশগ্রহণ করবে। আগামীকালও (বৃহস্পতিবার) সারা দেশে গণজোয়ার নামবে।’

সারজিস জানান, রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে নিউমার্কেট, মানিক মিয়া এভিনিউ, কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হবে ‘শহীদি মার্চ’। কর্মসূচিতে ফেস্টুনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নানা প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা হবে। আজ যে অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি হতে যাচ্ছে তা দৃশ্যমান হতে থাকে জুলাইয়ের শুরুর দিক থেকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে। গত ১৪ জুলাই পর্যন্ত এ আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সূত্রপাত ঘটে ১৫ জুলাই। এর পর থেকে মূলত আন্দোলনের তীব্রতা ও ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ আগস্ট সরকার পতনের এক দফা দাবি আসে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে। ডাক দেয়া হয় অসহযোগ আন্দোলনের। ৪ আগস্ট মাঠে নামার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। এদিন সারা দেশে ব্যাপক সংঘাতে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়। ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে রাজপথে নেমে আসে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা। শেষমেশ ক্ষমতা ছেড়ে এদিন ভারতে আশ্রয় নেন ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসা শেখ হাসিনা।

সরকার পতনের একদিন পর বাতিল ঘোষণা করা হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ। এরপর ৮ আগস্ট ড. মো. ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই হিসেবে দুদিন দেশে কোনো সরকার ছিল না।  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াকে। রাষ্ট্রের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য ৮ আগস্ট ছয় সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, লিয়াজোঁ কমিটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরামর্শ দেবে এবং সরকার, অংশীজন ও ছাত্র-জনতার সঙ্গে সমন্বয় করবে। লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম সদস্য মাহফুজ আব্দুল্লাহকে পরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ ও ধরপাকড়ের কারণে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সবচেয়ে বেশি তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ পুলিশ। সরকার পতনের পর তারাও কর্মস্থল ত্যাগ করে। ফলে থানা ও ট্রাফিক সিগন্যালগুলো কার্যত পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরাই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। পুলিশ কর্মস্থলে যোগদান করার পরও সব মিলিয়ে ১০ দিন শিক্ষার্থীরা সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কাজ করে।