রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের বহুতল ভবনে লাগা আগুনে এখন পর্যন্ত মোট ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাতী শাখার শিক্ষক লুৎফুন নাহার লাকি ও তার মেয়ে নিকিতা। প্রাথমিকভাবে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের মরদেহ আসে। এ সময় স্ত্রী-মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন গোলাম মহিউদ্দিন।
বিলাপ করতে করতে তিনি জানান, তার স্ত্রী দাঁতের ব্যথায় ভুগছিলেন। দাঁত দেখাতে হাসপাতালে যান মেয়েকে নিয়ে। ফেরার পথে কাচ্চি খেয়ে আসার পরামর্শ দেন মহিউদ্দিনই। এখন স্ত্রী-মেয়ের মৃত্যুর জন্য তিনি নিজেকে অপরাধী মনে করছেন।
এর আগে রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বেইলি রোডের সেই ভবনে আগুনের খবর পাওয়া যায়। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ টি ইউনিট।
রাতে নিখোঁজদের খোঁজে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আত্মীয়-স্বজনরা। এ সময় ভিড় করেন উৎসুক জনতাও। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছোটাছুটি খোঁজ-খবর নিতেও দেখা যায় স্বজনদের।
আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট নিহত হয়েছেন ৪৪ জন। এর মধ্যে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ১ জন, ঢামেক হাসপাতালে ৩৩ জন ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জনের মরদেহ রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাপড়ের দোকান ছিল। আমাদের দেখা মতে ভবনের অন্যান্য ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট ছিল। যেগুলোতে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার দেখেছি। যে কারণে আগুনটা দ্রুত ছড়িয়েছে এবং দাউদাউ করে জ্বলেছে।
এদিকে ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনার নেপথ্যের কারণ, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ হতাহত বেশি হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।