ঢাকা ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আটক করলো র‌্যাব

নওগাঁয় গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে দুবাই পালাচ্ছিলেন এনজিও মালিক

দুবাই পালানোর সব প্রস্ততি শেষ করেছিল রাজ্জাক । তার আগেই ধরা পড়লো র‌্যাবের জালে । নওগাঁয় এনজিও খুলে প্রতারণার অভিযোগে ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার তারাব বাসস্ট্যান্ড ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৫-এর একটি দল। আজ রোববার দুপুরে নওগাঁ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে এক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নওগাঁর ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক (৪৩), তাঁর স্ত্রী সুমি বেগম (৩২), রিপন (১৮), রজাকপুরের পিয়ার আলী (৪০), তাঁর স্ত্রী শিল্পী বেগম (৩৫) ও ইকরতারা এলাকার আতোয়ার রহমান (৬০)।

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডলফিন সেভিংস অ্যান্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি এনজিও খুলে গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুর রাজ্জাক। আত্মসাৎ করা টাকা নিয়ে আবদুর রাজ্জাক দুবাইগামী বিমানে দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবদুর রাজ্জাক ২০১৩ সালে ফতেপুর বাজারে ডলফিন নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। এরপর গ্রামের সহজ–সরল মানুষকে প্রতি মাসে এনজিও থেকে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। তাঁদের প্রলোভনে ওই এনজিওতে এলাকার অনেকেই বড় অঙ্কের টাকা আমানত জমা করেন। প্রথম তিন মাস গ্রাহকেরা জমানো টাকার মুনাফা পেলেও পরবর্তী সময়ে মুনাফা বন্ধ হয়ে যায়।

র‍্যাব-৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, গ্রাহকদের আমানত নিয়ে হঠাৎ সংস্থাটির পরিচালক আবদুর রাজ্জাক তাঁর এনজিওর কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে তিন শতাধিক গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান। খবর পেয়ে র‍্যাব-৫ ও র‍্যাব-১১–এর গোয়েন্দা দল তাঁদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। একপর্যায়ে গোপন সংবাদে নারায়ণগঞ্জ থেকে আবদুর রাজ্জাককে আটক করা হয়। তিনি টাকাগুলো নিয়ে দুবাইগামী বিমানে করে দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। পরে রাজ্জাকের বোন, স্ত্রী, এনজিওর সভাপতি, ব্যবস্থাপক ও ক্যাশিয়ারকে নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়।

র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আবদুর রাজ্জাক, শিল্পী বেগম, সুমি আক্তার, এনজিওর সভাপতি পিয়ার আলী, ব্যবস্থাপক আতোয়ার রহমান এবং ক্যাশিয়ার রিপন হোসেন এলাকার জনসাধারণের কাছ থেকে ১ লাখ টাকায় ২ হাজার টাকা লাভ দেওয়ার কথা বলে ওই এনজিওতে ৩০০ জনের বেশি গ্রাহককে সঞ্চয় রাখার বিষয়ে উৎসাহিত করেছিলেন। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রাজ্জাক স্বীকার করেছেন, টাকা নিয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নওগাঁ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করেছিলেন। নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল হক বলেন, আটক ব্যক্তিদের অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

ট্যাগস

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

আটক করলো র‌্যাব

নওগাঁয় গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে দুবাই পালাচ্ছিলেন এনজিও মালিক

আপডেট সময় ০৭:৫২:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

দুবাই পালানোর সব প্রস্ততি শেষ করেছিল রাজ্জাক । তার আগেই ধরা পড়লো র‌্যাবের জালে । নওগাঁয় এনজিও খুলে প্রতারণার অভিযোগে ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার তারাব বাসস্ট্যান্ড ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৫-এর একটি দল। আজ রোববার দুপুরে নওগাঁ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে এক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নওগাঁর ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক (৪৩), তাঁর স্ত্রী সুমি বেগম (৩২), রিপন (১৮), রজাকপুরের পিয়ার আলী (৪০), তাঁর স্ত্রী শিল্পী বেগম (৩৫) ও ইকরতারা এলাকার আতোয়ার রহমান (৬০)।

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডলফিন সেভিংস অ্যান্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি এনজিও খুলে গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুর রাজ্জাক। আত্মসাৎ করা টাকা নিয়ে আবদুর রাজ্জাক দুবাইগামী বিমানে দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবদুর রাজ্জাক ২০১৩ সালে ফতেপুর বাজারে ডলফিন নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। এরপর গ্রামের সহজ–সরল মানুষকে প্রতি মাসে এনজিও থেকে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। তাঁদের প্রলোভনে ওই এনজিওতে এলাকার অনেকেই বড় অঙ্কের টাকা আমানত জমা করেন। প্রথম তিন মাস গ্রাহকেরা জমানো টাকার মুনাফা পেলেও পরবর্তী সময়ে মুনাফা বন্ধ হয়ে যায়।

র‍্যাব-৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, গ্রাহকদের আমানত নিয়ে হঠাৎ সংস্থাটির পরিচালক আবদুর রাজ্জাক তাঁর এনজিওর কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে তিন শতাধিক গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান। খবর পেয়ে র‍্যাব-৫ ও র‍্যাব-১১–এর গোয়েন্দা দল তাঁদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। একপর্যায়ে গোপন সংবাদে নারায়ণগঞ্জ থেকে আবদুর রাজ্জাককে আটক করা হয়। তিনি টাকাগুলো নিয়ে দুবাইগামী বিমানে করে দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। পরে রাজ্জাকের বোন, স্ত্রী, এনজিওর সভাপতি, ব্যবস্থাপক ও ক্যাশিয়ারকে নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়।

র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আবদুর রাজ্জাক, শিল্পী বেগম, সুমি আক্তার, এনজিওর সভাপতি পিয়ার আলী, ব্যবস্থাপক আতোয়ার রহমান এবং ক্যাশিয়ার রিপন হোসেন এলাকার জনসাধারণের কাছ থেকে ১ লাখ টাকায় ২ হাজার টাকা লাভ দেওয়ার কথা বলে ওই এনজিওতে ৩০০ জনের বেশি গ্রাহককে সঞ্চয় রাখার বিষয়ে উৎসাহিত করেছিলেন। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রাজ্জাক স্বীকার করেছেন, টাকা নিয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নওগাঁ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করেছিলেন। নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল হক বলেন, আটক ব্যক্তিদের অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।