গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের অভিযানে অন্তত ২৪১ জন নিহত হয়েছে। গত ১১ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা লড়াইয়ে কমপক্ষে ২০ হাজার ৯১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, তাঁর জনগণের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর অপরাধ’ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
আজ বুধবার ভোররাতে গাজা উপত্যকার ইসরায়েলের সীমান্তজুড়ে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৪১ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টায় ৩৮২ জন আহত হয়েছেন। এদিকে ইসরায়েলের সেনা প্রধান হারজি হালেভি বলেছেন, ‘হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষ আরো অনেক মাস চলবে।’ তাঁর বাহিনী গতকাল মঙ্গলবার গাজার ১০০ টিরও বেশি স্থানে হামলা চালিয়েছে।
গাজা যুদ্ধের ভয়াবহতা এতোটাই বেশি যে, প্রেসিডেন্ট আব্বাস এই যুদ্ধকে ‘বিপর্যয়ের ঊর্ধ্বে’ এবং ‘বিধ্বংসী যুদ্ধের ঊর্ধ্বে’ বলে বর্ণনা করেছেন। ফিলিস্তিনি জনগণের ইতিহাসে যা নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছেন তিনি। যুদ্ধ শুরুর পর রামাল্লায় একটি মিসরীয় টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছিলেন, ‘অঞ্চলটি এখন অচেনা এবং দখলকৃত পশ্চিম তীর যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।’ এ ছাড়া, ফিলিস্তিনি এই নেতা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করেছেন।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হালেভি একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আরো অনেক মাস ধরে যুদ্ধ চলবে। কারণ এই যুদ্ধে ইসরায়েল যা অর্জন করেছে, তা দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি আরো বলেন, ‘একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে আমরা একগুঁয়ে এবং এই লড়াইয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প রাস্তা নেই। জাদু দিয়ে সমাধান করা যাবে না।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পরিকল্পনায় ইসরায়েলি জেলে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েলের আক্রমণ স্থগিত করা হবে। এর আগে কাতারের সমঝোতায় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয় ইসরায়েল। এর বিপরীতে হামাসও বেশ কয়েকজন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল। তবে এখনও পর্যন্ত, ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছে।