চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফর সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইতো নাওকি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য জাপান সফর নিয়ে জানতে চাইলে ইতো নাওকি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই সফর আয়োজনে দুই দেশ কাজ করছে। কারণ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সফর।
কেন এই সফর স্থগিত করা হয়েছে এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা দ্রুত সম্ভব সফরের আয়োজনে কাজ করে যাচ্ছি। এই বছর শেষ হওয়ার আগে সফর সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না।
এই কূটনীতিক বলেন, আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আমার দায়িত্ব শেষ হতে যাচ্ছে। এখানে আমি তিন বছর দুই মাস দায়িত্ব পালন করেছি। আজ (সোমবার) তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে এসেছিলাম। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
জাপান-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেয়ার কথাও জানান তিনি। ইতো নাওকি বলেন, তাকে আমি ধন্যবাদ জানিয়েছি। চলতি বছর জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পঞ্চাশ বছরে পা দিয়েছে। বছরটি উদযাপনে আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপান সফর করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সেই সফর নিয়েই আলোকচিত্র প্রদর্শনী। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন।
জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে জাপানের দ্য বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি) প্রকল্প রয়েছে। ২০১৪ সালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এই প্রকল্প নিয়েছিলেন। বড় বড় প্রকল্পে কাজ করছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা। যার মধ্যে রয়েছে ঢাকার এমআরটির মেট্রোরেল ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক কানেকটিভিটিসহ জাপান এসব প্রকল্প সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চায় বলে আমি তথ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হতে যাচ্ছে। আমি আশা প্রকাশ করছি, দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে কী কী স্মৃতি নিয়ে যাচ্ছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে আমার খুবই চমৎকার কিছু স্মৃতি আছে। বাংলাদেশের মানুষ খুবই সদয়। তারা জাপানের প্রতি অনুরক্ত। তারা খুবই আতিথেয়তাপ্রবণ। আমি সিলেট, সুন্দরবন এলাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, পাহাড়পুরসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। সেখানে তাদের কাছ থেকে বেশ সমাদর পেয়েছি। তারা খুবই বন্ধুবৎসল। জাপান-বাংলাদেশ পরীক্ষিত দুই বন্ধু দেশ। আমরা নিজেদের মধ্যকার অংশীদারত্ব নতুন স্তরে নিয়ে যেতে চাই।