ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেষ দুই জুটিতে দ. আফ্রিকার ‘বড়’ সংগ্রহ

বৃহস্পতিবার ডারবান টেস্টের প্রথম দিনে আলোক স্বল্পতায় খেলা হয় সব মিলিয়ে ৭৭ ওভার। দারুণ ব্যাটিং করে বড় লিডের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রথম দিনে ৪ উইকেটে ২৩৩ রান জমা করে স্বাগতিকরা।

কিন্তু দ্বিতীয় দিনে দারুণভাবে জ্বলে ওঠা পেসার খালেদে ধরাশায়ী হয়েছে প্রোটিয়ারা। খালেদের পাশাপাশি ঘূর্ণিজাদু দেখিয়েছেন মিরাজও।

ফিল্ডিংও হয়েছে অসাধারণ। বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত কম্বিনেশনে দ্বিতীয় দিনে লিড বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।

৩৬৭ রানে গুটিয়ে গেছে ডিন এলগারের দল। অর্থাৎ দ্বিতীয় দিনে বাকি ৬ উইকেটে ১৩৪ রান যোগ করতে পারে প্রোটিয়ারা।

অবশ্য এতটাও পারত না দ. আফ্রিকা, যদি না শেষ জুটিতে ৬৯ রান যোগ করতেন দুই টেল-এন্ডার সাইমন হার্মার ও ডোয়ানে অলিভিয়ের।

এরপরও অবশ্য দেশের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন রান এটিই। আগে মাত্র দুবার তারা অলআউট হয়েছিল দেশের মাঠে, ৪২৯ ও ৪৪১ রানে।

নবম জুটির মতো দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ জুটিও বাংলাদেশকে ভালোই যন্ত্রণা দিয়েছে।

মেহেদি হাসান মিরাজের বলে স্লগ সুইপে ছক্কা হাঁকিয়ে সাড়ে তিনশ পার করেন সাইমন হার্মার।

এরপর দুই পেসার খালেদ, এবাদত ও স্পিনার মিরাজকে ভালোই সামলে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন।

১২১তম ওভারের শেষ বলে অলিভারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলতে সক্ষম হন মিরাজ। এরই সঙ্গে ৩৬৭ রানে শেষ হলো দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।

ডুয়ানে অলিভিয়েরকে এর আগেও এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেছিলেন মিরাজ।

মেহেদি হাসান মিরাজের বল বিশাল টার্নে ঠিকমতো খেলতে পারেননি অলিভিয়ের। বল পায়ে লাগে। কিন্তু মিরাজের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিভিউয়ে দেখা যায় বল লাগছিল লেগ স্টাম্পের বাইরের অংশে।

অবশেষে দ্বিতীয়বার সফল হলেন মিরাজ। অলিভিয়ের ৩২ বলে ১২ রান। অন্যপ্রান্ত ৭৩ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩৮ রানে অপরাজিত থেকে গেছেন হার্মার।

আজ স্বাগতিকদের ৪০০ রানের আগে বেঁধে ফেলার অন্যতম কারিগর পেসার খালেদ। ২৫ ওভার বল করে ৯২ রানের খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

অন্যদিকে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ ও এবাদত। টেম্বা বাভুমার গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি আসে মিরাজের ঘূর্ণিতে।

মহারাজকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের টেস্ট সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাভুমা।

৯৮তম ওভারে মিরাজের শেষ ডেলিভারিতে আউট হন বাভুমা। ১৯০ বলে ১২ বাউন্ডারিতে ৯৩ রান করেন এই প্রোটিয়া তারকা।

বাভুমাকে হারিয়ে যেন ক্রিজে থাকতেই চাইলেন না মহারাজ। ৯৯তম ওভারে এবাদত হোসেনের প্রথম ডেলিভারিতেই বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ৪০ বলে ১৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

আজ শুক্রবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে প্রথম সেশনেই প্রোটিয়াদের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দাপট দেখায় বাংলাদেশ।

সকালে নতুন বল হাতে নিয়েই নিজের দ্বিতীয় ওভার ও দিনের ষষ্ঠ ওভারে জোড়া আঘাত হানেন পেসার খালেদ আহমেদ। ফেরান ভেরেইনা আর নতুন ব্যাটসম্যান উইয়ান মাল্ডারকে।

খালেদের করা ওভারের দ্বিতীয় বলটি গুড লেংথ থেকে একটু সামনে পিচ করে ভেতরে ঢোকে। ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে ব্যাটার ভেরেইনার প্যাডে। আবেদনে আঙুল তুলতে খুব একটা সময় নেননি আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন ভেরেইনা। তবে লাভ হয়নি তাতে। ৮১ বলে ২৮ রান করে আউট হন ভেরেইনা। বাভুমার সঙ্গে জুটির সমাপ্তি ৬৫ রানে।

পরের বলেই মাল্ডারকে একই পথে ফেরান খালেদ। তার আউটসুইং ডেলিভারিটি মোল্ডারের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় গালিতে। সেখানে দাঁড়ানো মাহমুদুল হাসান দর্শনীয় এক ডাইভে লুফে নেন সেই ক্যাচ।

খালেদের বলে ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে ফেরেন মোল্ডার। এ সময় ৪ উইকেটে ২৪৫ থেকে স্কোরবোর্ডে দাঁড়ায় ২৪৫/৬-এ।

শেষদিকে অবশ্য দারুণ প্রতিরোধ গড়েছেন দুই টেল-এন্ডার সাইমন হার্মার ও ডুয়ানে অলিভিয়ের। যে কারণে সংগ্রহ সাড়ে তিনশ ছাড়িয়েছে।

ট্যাগস

শেষ দুই জুটিতে দ. আফ্রিকার ‘বড়’ সংগ্রহ

আপডেট সময় ০৬:৫৫:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ এপ্রিল ২০২২

বৃহস্পতিবার ডারবান টেস্টের প্রথম দিনে আলোক স্বল্পতায় খেলা হয় সব মিলিয়ে ৭৭ ওভার। দারুণ ব্যাটিং করে বড় লিডের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রথম দিনে ৪ উইকেটে ২৩৩ রান জমা করে স্বাগতিকরা।

কিন্তু দ্বিতীয় দিনে দারুণভাবে জ্বলে ওঠা পেসার খালেদে ধরাশায়ী হয়েছে প্রোটিয়ারা। খালেদের পাশাপাশি ঘূর্ণিজাদু দেখিয়েছেন মিরাজও।

ফিল্ডিংও হয়েছে অসাধারণ। বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত কম্বিনেশনে দ্বিতীয় দিনে লিড বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।

৩৬৭ রানে গুটিয়ে গেছে ডিন এলগারের দল। অর্থাৎ দ্বিতীয় দিনে বাকি ৬ উইকেটে ১৩৪ রান যোগ করতে পারে প্রোটিয়ারা।

অবশ্য এতটাও পারত না দ. আফ্রিকা, যদি না শেষ জুটিতে ৬৯ রান যোগ করতেন দুই টেল-এন্ডার সাইমন হার্মার ও ডোয়ানে অলিভিয়ের।

এরপরও অবশ্য দেশের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন রান এটিই। আগে মাত্র দুবার তারা অলআউট হয়েছিল দেশের মাঠে, ৪২৯ ও ৪৪১ রানে।

নবম জুটির মতো দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ জুটিও বাংলাদেশকে ভালোই যন্ত্রণা দিয়েছে।

মেহেদি হাসান মিরাজের বলে স্লগ সুইপে ছক্কা হাঁকিয়ে সাড়ে তিনশ পার করেন সাইমন হার্মার।

এরপর দুই পেসার খালেদ, এবাদত ও স্পিনার মিরাজকে ভালোই সামলে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন।

১২১তম ওভারের শেষ বলে অলিভারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলতে সক্ষম হন মিরাজ। এরই সঙ্গে ৩৬৭ রানে শেষ হলো দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।

ডুয়ানে অলিভিয়েরকে এর আগেও এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেছিলেন মিরাজ।

মেহেদি হাসান মিরাজের বল বিশাল টার্নে ঠিকমতো খেলতে পারেননি অলিভিয়ের। বল পায়ে লাগে। কিন্তু মিরাজের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিভিউয়ে দেখা যায় বল লাগছিল লেগ স্টাম্পের বাইরের অংশে।

অবশেষে দ্বিতীয়বার সফল হলেন মিরাজ। অলিভিয়ের ৩২ বলে ১২ রান। অন্যপ্রান্ত ৭৩ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩৮ রানে অপরাজিত থেকে গেছেন হার্মার।

আজ স্বাগতিকদের ৪০০ রানের আগে বেঁধে ফেলার অন্যতম কারিগর পেসার খালেদ। ২৫ ওভার বল করে ৯২ রানের খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

অন্যদিকে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ ও এবাদত। টেম্বা বাভুমার গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি আসে মিরাজের ঘূর্ণিতে।

মহারাজকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের টেস্ট সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাভুমা।

৯৮তম ওভারে মিরাজের শেষ ডেলিভারিতে আউট হন বাভুমা। ১৯০ বলে ১২ বাউন্ডারিতে ৯৩ রান করেন এই প্রোটিয়া তারকা।

বাভুমাকে হারিয়ে যেন ক্রিজে থাকতেই চাইলেন না মহারাজ। ৯৯তম ওভারে এবাদত হোসেনের প্রথম ডেলিভারিতেই বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ৪০ বলে ১৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

আজ শুক্রবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে প্রথম সেশনেই প্রোটিয়াদের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দাপট দেখায় বাংলাদেশ।

সকালে নতুন বল হাতে নিয়েই নিজের দ্বিতীয় ওভার ও দিনের ষষ্ঠ ওভারে জোড়া আঘাত হানেন পেসার খালেদ আহমেদ। ফেরান ভেরেইনা আর নতুন ব্যাটসম্যান উইয়ান মাল্ডারকে।

খালেদের করা ওভারের দ্বিতীয় বলটি গুড লেংথ থেকে একটু সামনে পিচ করে ভেতরে ঢোকে। ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে ব্যাটার ভেরেইনার প্যাডে। আবেদনে আঙুল তুলতে খুব একটা সময় নেননি আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন ভেরেইনা। তবে লাভ হয়নি তাতে। ৮১ বলে ২৮ রান করে আউট হন ভেরেইনা। বাভুমার সঙ্গে জুটির সমাপ্তি ৬৫ রানে।

পরের বলেই মাল্ডারকে একই পথে ফেরান খালেদ। তার আউটসুইং ডেলিভারিটি মোল্ডারের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় গালিতে। সেখানে দাঁড়ানো মাহমুদুল হাসান দর্শনীয় এক ডাইভে লুফে নেন সেই ক্যাচ।

খালেদের বলে ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে ফেরেন মোল্ডার। এ সময় ৪ উইকেটে ২৪৫ থেকে স্কোরবোর্ডে দাঁড়ায় ২৪৫/৬-এ।

শেষদিকে অবশ্য দারুণ প্রতিরোধ গড়েছেন দুই টেল-এন্ডার সাইমন হার্মার ও ডুয়ানে অলিভিয়ের। যে কারণে সংগ্রহ সাড়ে তিনশ ছাড়িয়েছে।